Gujarat Assembly Election 2022

মোদীর ‘পদযাত্রা’কি বিধিভঙ্গ, বিতর্ক

নিজের ভোট দেওয়াকে এ ভাবে ‘রোড-শো’-তে পরিণত করায় আজ গুজরাত ভোটের দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২২ ০৯:০২
Share:

ভোটের গুজরাতে সারা দিন টিভিতে চলল মোদীর সেই ‘পদযাত্রা’। ছবি: পিটিআই

সকাল ন’টা। আমদাবাদের রাণীপ এলাকার নিশান স্কুল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভোট দিতে যাচ্ছেন। কিন্তু ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের অনেক আগেই গাড়ি থেকে নেমে তিনি হাঁটতে শুরু করলেন। রাস্তার দু’দিকে ভিড়। হাত নাড়তে নাড়তে এগোলেন প্রধানমন্ত্রী। ভোট দেওয়ার পরেও প্রধানমন্ত্রী ফের হেঁটে আড়াইশো মিটার দূরে দাদার বাড়িতে পৌঁছলেন। গোটা গুজরাতবাসী টিভি-র পর্দায় সেই দৃশ্য দেখল। ভোটের গুজরাতে সারা দিন টিভিতে চলল মোদীর সেই ‘পদযাত্রা’।

Advertisement

নিজের ভোট দেওয়াকে এ ভাবে ‘রোড-শো’-তে পরিণত করায় আজ গুজরাত ভোটের দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আদর্শ আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। কংগ্রেস নেতৃত্ব থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর কড়া নিন্দা করেছেন। কংগ্রেস লিখিত ভাবে মোদীর বিরুদ্ধে গুজরাতে রাজ্য নির্বাচন দফতরে অভিযোগ জানিয়েছে। দিল্লিতে দলের মঞ্চ থেকে কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে, নির্বাচন কমিশন কেন সব দেখেও মুখ, চোখ, কান বন্ধ করে বসে রয়েছে? তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও কলকাতা থেকে দিল্লি রওনা হওয়ার আগে এ বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। মোদী তথা বিজেপি নেতাদের ‘স্পেশাল পিপ্‌ল’ বলে কটাক্ষ করে মমতা বলেন, “নির্বাচনের দিন রোড-শো নিষিদ্ধ। কিন্তু ওঁদের বেলায় হয়তো মাফ করে দেওয়া হবে। এটাই ফারাক। প্রধানমন্ত্রী ভোটের দিন জনসভা করলে কী আশা করা যায়? একশোতে একশো পেতে পারে। কিন্তু এটা কি নিরপেক্ষতা?” মমতা মনে করিয়ে দিয়েছেন, এ সব দেখা নির্বাচন কমিশনেরই দায়িত্ব। কংগ্রেসও লিখিত অভিযোগে জানিয়েছে, ভোটের দিন কোনও রোড-শো বা মিছিলের অনুমতি নেই। প্রধানমন্ত্রী পুরোপুরি আদর্শ আচরণবিধি ভেঙেছেন। কমিশনে ফোন করে অভিযোগ জানালে দুর্ব্যবহার করা হয়েছে। কংগ্রেসের আদিবাসী নেতা, প্রার্থী কান্তিভাই খারাড়ি কমিশনে আর্জি জানিয়েও নিরাপত্তা পাননি। রবিবার তাঁর উপরে হামলা করেছে বিজেপি।

কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা পড়লেও গুজরাতের অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক জানিয়েছেন, কোনও আচরণবিধি লঙ্ঘন হয়নি। প্রধানমন্ত্রীর কোনও ‘রোড-শো’ ছিল না। মানুষ নিজে থেকেই রাস্তার দু’ধারে জড়ো হয়েছিলেন। অভিযোগ পেয়ে তাঁরা এ বিষয়ে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিলেন বলেও আধিকারিক জানিয়েছেন। কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘রোড-শো’ না-বলে প্রধানমন্ত্রী আইনের ফাঁকফোকরের সুযোগ নিচ্ছেন।

Advertisement

২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও প্রধানমন্ত্রী মোদীর বিরুদ্ধে একাধিক বার নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছিল। নির্বাচন কমিশন সব অভিযোগ খারিজ করে দেয়। কিন্তু কমিশনের মধ্যেই এ বিষয়ে মতপার্থক্য ছিল। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। শীর্ষ আদালতও কমিশনে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আজ মমতা বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্ট যা বলেছে, তাতে আমি পুরোপুরি সহমত। নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ করারও নির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকা উচিত।” প্রধানমন্ত্রীর মা হীরাবেনও আজ হুইলচেয়ারে চেপে গান্ধীনগরে ভোট দিয়েছেন। তাঁর স্ত্রী যশোদাবেন ভোট দিয়েছেন মেহসানায়। আর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের পরে তাঁর বড়ভাই সোমাভাই মোদী বলেছেন, “ওঁকে একটু বিশ্রাম নিতেও বলেছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন