প্রতীকী ছবি।
অমদাবাদ-বডোদরা পাঁচতারা এক্সপ্রেসওয়ে থেকেই দেখা যায় বর্জ্য পদার্থ ডাঁই করা পাহাড়টিকে। উচ্চতায় ধাপার থেকেও বড়।
এটি ‘হিরানা ওয়েস্ট ডাম্পিং গ্রাউন্ড’। যার পিছনে দাঙ্গাপীড়িত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পুনর্বাসন কেন্দ্র। কালক্রমে মাছি ভনভন এক এলাকা। নাম জনতা কলোনি। আর তার আগে অপেক্ষাকৃত পরিচ্ছন্ন এক মুসলিম পাড়া— জুহাপুরা। ছয়ের দশক থেকেই এখানে গড়ে উঠেছে বসতি।
রাজ্যর আর পাঁচটা মুসলিম মহল্লার মতো এই পাড়াগুলিও কিন্তু এ বার ভোটের সংলাপে অনুপস্থিত। বাইরে থেকে উত্তেজনার কানাকড়িও নজরে পড়ছে না। প্রতিটি ভোটেই নরেন্দ্র মোদীর মুসলিম-বিরোধী রাজনীতি নিয়ে খড়্গহস্ত হয়েছে কংগ্রেস। কিন্তু এ বারই প্রথম রাহুল গাঁধীর ভোট পরিক্রমাতে ভুলেও পড়েনি কোনও মসজিদ-মাজার। অনেকেই বলছেন, বিশ বছরে এটা বিরলতম।
“এ সব কিন্তু রাহুলের কৌশলেরই একটা দিক। কংগ্রেসের ইস্তাহারেই সংখ্যালঘুদের জন্য অনেক সুবিধার দেওয়ার কথা রয়েছে। নেতারাও যোগাযোগ রেখে চলেছেন।”— বলছেন মুজাহিদ নাফিজ। গোটা দেশে চরকি পাক মেরে বেড়ান সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের এই জনপ্রিয় মুখটি। তাঁর দাবি, চেষ্টা করেও মোদী এ বার সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ তৈরি করতে পারছেন না। কারণ দু’টো। এক, গুজরাতে বিরোধীদের উজ্বল সম্ভাবনা দেখে নিঃশব্দে মুসলিমরা। দুই, মোদীর ফাঁদে পা দিয়ে রাহুলও কোনও ভাবেই মুসলিম তোষণের রাস্তায় হাঁটছেন না। সংখ্যালঘু সমাজের বক্তব্য, ২০০৭ সালে মোদীকে ‘মওত কা সওদাগর’ বলেছিলেন সনিয়া গাঁধী। তার পরেই মেরুকরণ ঘটিয়ে দিয়েছিলেন মোদী। এ বার তাই হোমওয়ার্ক করেই ময়দানে নেমেছেন রাহুল।
গোধরা পরবর্তী হিংসায় ঘরবাড়ি হারিয়েছিলেন পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক জে এস বন্দুকওয়ালা। এখন মুসলিম যুবকদের জন্য একটি দাতব্য শিক্ষাকেন্দ্র চালান তিনি। তাঁর কথায়, “এটা ঘটনা যে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুজরাতে সংখ্যলঘু সম্প্রদায় ক্রমশ একঘরে এবং কোণঠাসা হয়ে পড়েছে। কিন্তু সব খারাপের মধ্যেও বোধহয় একটা ভাল দিক থাকে...।”
কী সেই ভাল দিক?
বন্দুকওয়ালার কথায়, ‘‘মোদী তখনই খুব ভাল প্রচার করতে পারেন, যখন তাঁর নিশানায় থাকে মুসলিমরা। কিন্তু এ বার কংগ্রেস তাদের প্রচারে মুসলিমদের কথাই না তোলায় রাজনৈতিক ভাবে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে গিয়েছি আমরা। এতেই সমস্যা হচ্ছে মোদীর।”