Gujarat Riot

গণহত্যায় দোষীর মেয়ে ভোটের প্রার্থী, গুজরাতে বাবাকে নিয়ে প্রচারে বিজেপির পায়েল কুকরানি

পায়েল কুক্রানির হয়ে প্রচারে নামলেন নারোদা পাটিয়া গণহত্যায় অভিযুক্ত সেই বিজেপি নেতা মনোজ কুক্রানি। তাঁকে সাদরে অভ্যর্থনা জানালেন বিজেপি কর্মীরা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আমদাবাদ শেষ আপডেট: ১৩ নভেম্বর ২০২২ ১৯:৫২
Share:

পেশায় অ্যানাস্থেটিস্ট পায়েল রাজনীতির ময়দানে একেবারেই নতুন। — ফাইল ছবি।

গুজরাতের নারোদা পাটিয়া গণহত্যায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন বাবা। মেয়েকে সেই নারোদা কেন্দ্রেই প্রার্থী করল বিজেপি। এখানেই শেষ নয়। এ বার মেয়ে পায়েল কুক্রানির হয়ে প্রচারে নামলেন নারোদা পাটিয়া গণহত্যায় অভিযুক্ত সেই বিজেপি নেতা মনোজ কুক্রানি। তাঁকে সাদরে অভ্যর্থনা জানালেন বিজেপি কর্মীরা। বিরোধী আপের কটাক্ষ, নারোদা গণহত্যায় দোষীদের এ ভাবেই পুরস্কৃত করছে বিজেপি।

Advertisement

আসন্ন নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই নিয়ে বার বার আঙুল উঠছে বিজেপির দিকে। গোধরা কেন্দ্রে তারা প্রার্থী করে চন্দ্রসিংহ রাউলজিকে। বিলকিস বানোর গণধর্ষণে দোষীদের ‘সংস্কারী ব্রাহ্মণ’ বলেছিলেন রাউলজি। এ বার নারোদায় প্রার্থী করা হয়েছে পায়েলকে। পেশায় অ্যানাস্থেটিস্ট পায়েল রাজনীতির ময়দানে একেবারেই নতুন। তা সত্ত্বেও নারোদা কেন্দ্রের বর্তমান বিধায়ক বলরাম থাওয়ানিকে সরিয়ে মনোজ-কন্যাকে প্রার্থী করা হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, এ ভাবে আসলে নারোদা-কাণ্ডে দোষীকে পুরস্কৃত করা হচ্ছে।

পায়েলের প্রচারের একাধিক ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, মনোজ এবং পায়েলের প্রচারে অংশ নিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। তাঁকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন বর্তমান বিধায়ক বলরাম। এই নিয়ে বিজেপি যদিও কোনও মন্তব্য করেনি। মেয়ে পায়েল যদিও মনোজকে ‘দোষী’ বলতে চাননি। জানিয়েছেন, হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে তাঁর পরিবার। সেই মামলার শুনানি এখনও শেষ হয়নি। পায়েলের কথায়, ‘‘আমার বাবা এক জন অভিজ্ঞ রাজনীতিক। বাবার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার রায় নিয়ে কিছু বলতে চাই না। কারণ এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছি। এখনও মামলা লড়ছি। শুধু একটাই কথা বলতে চাই, আমার প্রচারে বাবা, মা এবং সকল বিজেপি কর্মী সাহায্য করছেন। উন্নয়নের স্বার্থেই মানুষ আমাদের ভোট দেবেন।’’

Advertisement

মনোজের ভাইও মানতে চাননি যে, দাদা কোনও দোষ করেছেন। ভাই পুরুষোত্তম হরভানি জানিয়েছেন, ‘‘কোনও দোষ না করেই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন দাদা। ওই সময় ও ওই জায়গায় ছিলেন। কোনও দোষ করেননি তিনি। ওঁর নাম টেনে আনা হয়েছে। সেই ফল ভুগছেন।’’ জোর গলায় পুরুষোত্তম এও দাবি করেছেন, অত পুরনো ঘটনা কেউ মনে রাখেন না। তাঁর কথায়, ‘‘অত পুরনো ঘটনা নিয়ে লোকের মাথাব্যথা নেই। মানুষ শুধু মোদীজি আর তাঁর উন্নয়ন নিয়ে ভাবেন।’’

নারোদা কেন্দ্রে আপের প্রার্থী ওমপ্রকাশ এই ঘটনায় এক হাত নিয়েছেন বিজেপিকে। তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি নিশ্চয়ই মনে করে, নারোদা পাটিয়ার গণহত্যায় প্ররোচনা দিয়ে দলের উপকার করেছেন মনোজ কুক্রানি। জেলে গিয়ে বড় ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তাই তাঁকে পুরস্কৃত করাই উচিত। সে কারণে তাঁর স্ত্রী বিজেপির কর্পোরেটর এবং মেয়ে বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হয়েছেন।’’

২০০২ সালে গুজরাত হিংসার সময় এই নারোদায় ৯৭ জনকে খুন করে উন্মত্ত জনতা। ওই ঘটনায় ২০১২ সালে ৩২ জন দোষী সাব্যস্ত হয়। তাঁদের মধ্য অন্যতম হলেন মনোজ। যদিও সেই থেকে বেশির ভাগ সময় জামিনে জেলের বাইরেই রয়েছেন তিনি। ২০১৮ সালে গুজরাত হাই কোর্ট মনোজ-সহ ১২ জনকে দোষী সাব্যস্তের রায় বহাল রাখে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বজরং দল নেতা বাবু বজরঙ্গি। হাই কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মনোজ ও তাঁর পরিবার। মামলার শুনানি চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন