Congress

দলে একঘরে হচ্ছেন নবিরা

এই দ্বন্দ্বের মধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মঙ্গলবার রাতে জম্মু-কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গুলাম আহমেদ মির দিল্লি পৌঁছন। রাহুল গাঁধীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০২১ ০৫:৩৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

কংগ্রেসের মধ্যে বিক্ষুব্ধ নেতাদের একঘরে করার প্রক্রিয়া অব্যাহত।

Advertisement

গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, কপিল সিব্বলদের নিশানা করে এ বার ইউপিএ-সরকারের মন্ত্রী সলমন খুরশিদ তাঁদের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। খুরশিদের প্রশ্ন, কংগ্রেসের ২৩ জন বিক্ষুব্ধ নেতার জি-২৩ গোষ্ঠী তাঁদের সমস্যা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন। তার পরে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিতেও আলোচনা হয়েছে। বিক্ষুব্ধদের দাবি মেনে কংগ্রেসের সভাপতি পদে নির্বাচনের সিদ্ধান্তও হয়ে গিয়েছে। তা হলে এখন ফের তাঁরা নতুন করে মুখ খুলছেন কেন?

গত শনিবার জম্মুতে গুলাম নবি আজাদের ডাকে জি-২৩-র কিছু নেতা একজোট হয়ে কংগ্রেসের দুর্বলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দলের নেতৃত্বের কাজকর্ম নিয়েও প্রকাশ্যে প্রশ্ন তোলেন। বিক্ষুব্ধদের ঘনিষ্ঠ সূত্রের খবর, খুব শীঘ্রই জি-২৩-র আর এক সদস্য, হরিয়ানায় প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার ডাকেও বিক্ষুব্ধরা ফের এককাট্টা হচ্ছেন। খুরশিদের প্রশ্ন, “যে মই বেয়ে জীবনের শিখরে পৌঁছলেন, যেখান থেকে বক্তৃতা করা খুবই সহজ, সেই মইকে কি লাথি মারাটা ঠিক?”

Advertisement

জম্মুতে গুলাম নবি আজাদের ডাকে বিক্ষুব্ধদের বৈঠকের পরে গত রবিবার গুলাম নবি আরও এক ধাপ এগিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেছিলেন। তাতে জম্মু-কাশ্মীরের প্রদেশ কংগ্রেস কার্যত দু’ভাগ হয়ে গিয়েছে। একটি গোষ্ঠী গুলাম নবির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ দেখিয়ে তাঁর কুশপুতুল পুড়িয়েছে। আর একটি গোষ্ঠী আবার গুলাম নবিরই পাশে। কুশপুতুল দাহের উদ্যোক্তা, প্রদেশ কংগ্রেসের সম্পাদক শাহনওয়াজ চৌধরির অভিযোগ, গুলাম নবি বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। উল্টো দিকে গুলাম নবির সমর্থকেরা বলছেন, তিনি জম্মু-কাশ্মীরে কংগ্রেসের সব চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নেতা। জম্মু-কাশ্মীরে তিনি ও কংগ্রেস সমার্থক। তাঁর এই অপমান বরদাস্ত করা যায় না।

এই দ্বন্দ্বের মধ্যেই তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে মঙ্গলবার বেশি রাতে জম্মু-কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গুলাম আহমেদ মির দিল্লি পৌঁছন। রাহুল গাঁধীর বাড়িতে গিয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন। হাজির ছিলেন এআইসিসি-তে জম্মু-কাশ্মীরের ভারপ্রাপ্ত রজনী পাটিলও।
রাহুল-ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের নেতারা বলছেন, গুলাম নবির নেতৃত্বে যে ২৩ জন নেতা সনিয়াকে চিঠি লিখেছিলেন, তাঁরাও সকলে
গুলাম নবি, আনন্দ শর্মাদের সঙ্গে নেই। কর্নাটকের বীরাপ্পা মইলি, কেরলের পি জে কুরিয়েন, মধ্যপ্রদেশের অজয় সিংহ, দিল্লির সন্দীপ দীক্ষিতরা ইতিমধ্যেই দূরত্ব তৈরি করে ফেলেছেন। পৃথ্বীরাজ চহ্বাণ, শশী তারুর, জিতিন প্রসাদ, মুকুল ওয়াসনিকেরাও এই গোষ্ঠীর সঙ্গে থাকবেন না। পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে গুলাম নবিরা কংগ্রেসের দুর্বলতা নিয়ে মুখ খুলে যে বিজেপিকেই সাহায্য করছেন, তা এখন স্পষ্ট। তবে শিয়রে ভোট বলে এখনই বিক্ষুব্ধদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার কথাও ভাবা হচ্ছে না।

খুরশিদ বলেন, কংগ্রেস নেতৃত্ব ধৈর্যশীল হলেও কিছু বিষয় জনসমক্ষে আসা দরকার। জি-২৩-র নেতাদের দলে, দলের বাইরে যথেষ্ট সাফল্য রয়েছে। কিন্তু হাজার হাজার অপরিচিত কংগ্রেস কর্মীও দলের জন্য কাজ করেছেন। বিনিময়ে তাঁরা কিছুই পাননি। এঁরাও গণতন্ত্রে বিশ্বাস রাখেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন