প্রধানমন্ত্রীর নিজের রাজ্যে ধুন্ধুমার বাধানোর পরে তাঁর অস্বস্তি বাড়িয়ে খাস দিল্লিতে হাজির হচ্ছেন পটেলদের নতুন নেতা হার্দিক। রবিবারই দিল্লিতে নতুন আন্দোলন ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। এ দিনই পটেলদের এক প্রতিনিধি গুজরাতের প্রবীণ মন্ত্রী নিতিন পটেলের সঙ্গে দেখা করে বেশ কিছু দাবি-দাওয়া জানিয়ে এসেছেন।
গুজরাত শান্ত হলেও গ্রেফতারি এড়াতে গোপন ডেরায় গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন ২২ বছরের হার্দিক। সেখান থেকেই বিমানে দিল্লি আসার কথা তাঁর। হার্দিকের প্রতিটি পদক্ষেপের ওপর কড়া নজর রাখছে সরকার।
রবিবার রাজধানী পৌঁছে ময়ুরবিহারের কোটলা গ্রামের গুজ্জর ভবনে ওঠার কথা হার্দিকের। সেখানে বেশ কয়েকটি গুজ্জর সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করার কথা তাঁর। তার পরে নর্থ অ্যাভিনিউয়ের ঐতিহ্যশালী এমপি ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করার কথা এই পটেল নেতার। কিন্তু প্রশাসনকে যেটা অবাক করেছে— হার্দিকের গোটা দিল্লি সফর ম্যানেজ করছে একটি পেশাদার ইভেন্ট ম্যনেজমেন্ট সংস্থা। অর্থাৎ, কোনও একটি প্রভাবশালী শক্তি এই পটেল নেতার পেছনে রয়েছে। তাদের চিহ্নিত করতেই কড়া নজরদারি। হার্দিকের সাংবাদিক সম্মলনের জন্য কে বা কারা এমপি ক্লাব বুক করেছে, সে বিষয়েও খোঁজখবর নিচ্ছে সরকার।
গুজরাতের বিরোধী নেতা শক্তিসিন গোহিল অবশ্য অভিযোগ করেছেন, হার্দিককে সামনে রেখে আসলে আরএসএস-ই খেলায় নেমেছে। প্রচলিত সংরক্ষণ ব্যবস্থার উচ্ছেদ করা নিয়ে বরাবরই সরব সঙ্ঘ নেতৃত্ব। পটেল-গুজ্জর-রেড্ডিদের মতো প্রভাবশালীদের দিয়ে সংরক্ষণের দাবি তুলিয়ে তারা আদতে সেই লক্ষ্যপূরণের দিকে এগোচ্ছে। গোহিলের দাবি, হার্দিক পটেল আরএসএসের সৃষ্টি। দিল্লিতে যে ভাবে পেশাদারি দক্ষতায় তাঁর সফর ও কর্মসূচি পরিচালনা করা হচ্ছে, তাতে আরএসএস-সংস্রবের বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়।
বিজেপি অবশ্য প্রকাশ্যে অভিযোগ করছে, হার্দিকের পেছনে নীতীশ কুমার-লালু যাদবেরা রয়েছেন। কিন্তু হার্দিককে সমর্থন করাটা তাঁদের পিছড়ে বর্গের ভোটব্যাঙ্কে ফাটল ধরাতে পারে বুঝে প্রথমে প্রশংসা করেও পরে সরে এসেছেন নীতীশ। এখন বরং তাঁরা হার্দিকের দাবির উল্টো সুরেই গাইছেন। এমনকী নতুন এই আন্দোলনের পিছনে সঙ্ঘের হাত থাকার অভিযোগ তুলছেন।
শনিবারই গা-ঢাকা দিয়ে থাকা হার্দিকের এক প্রতিনিধি গুজরাতের মন্ত্রী নিতিন পটেলের সঙ্গে দেখা করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
যে সব পুলিশের বিরুদ্ধে অকারণ বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে, তাদের চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া এবং হার্দিককে গ্রেফতার না-করার দাবিও জানানো হয়েছে।