মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ রোহতকে

জাঠ বিক্ষোভ স্তিমিত হলেও হরিয়ানায় এ বার বাড়ছে অ-জাঠদের অসন্তোষ। আজ জাঠ আন্দোলনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রোহতকে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। তিনি পৌঁছনো মাত্র তাঁর গাড়ি ঘিরে শুরু হয় ঘেরাও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

চণ্ডীগড় শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৩:৫০
Share:

রোহতকে হরিয়ানার মুখ্যমন্ত্রীকে ঘিরে বিক্ষোভ। ছবি: পিটিআই।

জাঠ বিক্ষোভ স্তিমিত হলেও হরিয়ানায় এ বার বাড়ছে অ-জাঠদের অসন্তোষ। আজ জাঠ আন্দোলনে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রোহতকে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। তিনি পৌঁছনো মাত্র তাঁর গাড়ি ঘিরে শুরু হয় ঘেরাও। পুলিশ মুর্দাবাদ স্লোগান উঠতে থাকে মুহূর্মুহূ। ধস্তাধস্তির মাঝে পড়ে হেনস্থা হতে হয় মুখ্যমন্ত্রীকে। যাঁরা হিংসা ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও অন্য সম্প্রদায়ের মধ্যে যে ক্ষোভ দানা বাঁধছে, আজকের ঘটনায় তা সামনে চলে এল।

Advertisement

রোহতকে অন্যান্য সম্প্রদায়ের অভিযোগ, এই ক’দিন বেছে বেছে নিশানা করা হয়েছে তাদের ব্যবসাকে। শুধু ভাঙচুরই নয়, পাল্লা দিয়ে চলেছে লুঠপাট। মুখ্যমন্ত্রী খট্টরকে হাতের কাছে পেয়ে নিজেদের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সেখানকার অ-জাঠ বাসিন্দারা। মনোহরলাল খট্টরকে এ দিন দেখানো হয়েছে কালো পতাকাও।

তবে এই অশান্তির মাঝেও এ নিয়ে রাজনীতির সুযোগ হারাতে রাজি নয় বিজেপি। গত কাল থেকে এক ভিডিওকে হাতিয়ার করে বিজেপি দাবি করছিল, রাজ্যে এই অশান্তি কংগ্রেসের তৈরি। ওই ভিডিওতে রয়েছে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার সহযোগী বীরেন্দ্র এবং এক খাপ নেতার কথোপকথন। বিজেপির অভিযোগ, বীরেন্দ্র আসলে সে দিন গণ্ডগোল ছড়াতে উস্কানি দিচ্ছিলেন। এ দিন আবার খট্টরকে যেখানে অসন্তোষের মুখে পড়তে হয়েছে, সেই রোহতক হুডারই শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত। ফলে আজকের অশান্তি বিজেপির হাতকেই আরও শক্ত করেছে। এক দিকে আজ কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিভেদনীতির অভিযোগ তুলে সুর চড়িয়েছে তারা। পাশাপাশি আবার পরিস্থিতির মোকাবিলায় জাঠদের দাবি
খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নেতৃত্বে গড়া হয়েছে কমিটি। তেমনই অ-জাঠদের শান্ত করতে দেওয়া হয়েছে দোষীদের ধরার প্রতিশ্রুতিও। আজ রোহতকে খট্টর ঘোষণা করেছেন, ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও সরকারি চাকরি দেওয়া হবে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে।

Advertisement

রোহতকের এই গণ্ডগোল ছাড়া অবশ্য হরিয়ানার বাকি অংশ থেকে বড় কোনও অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি আজ। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ‘শিফট’ থেকে গুড়গাঁও ও মানেসরের কারখানা চালু করেছে মারুতি-সুজুকিও। তিন দিনের হিংসা শেষে গত কাল থেকেই ছন্দে ফিরতে শুরু করেছে এই রাজ্য। আজ কার্ফু উঠে গিয়েছে জীন্দ থেকে। চার ঘণ্টার জন্য কার্ফু শিথিল করা হয়েছিল রোহতকেও। তবে প্রশাসনের দাবি, ভিওয়ানি, হিসার, সোনীপতের কিছু এলাকায় এখনও চাপা উত্তেজনা রয়েছে। হিসার জেলার পাঁচটি গ্রামে যত ক্ষণ না পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হচ্ছে, কার্ফু জারি থাকবে সেখানে।

রেল ও সড়ক যোগাযোগ আগের অবস্থায় না ফিরলেও কিছুটা জট কেটেছে বহু জায়গায়। দিল্লি-অম্বালা হাইওয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় পানীপত পর্যন্ত চলছে গাড়ি। সোনীপতেও দ্রুত অবস্থার উন্নতি হবে বলে আশা প্রশাসনের। তবে দিল্লি, চণ্ডীগড়ের মতো শহরের সংযোগকারী রাস্তায় এখনও পড়ে গাছের গুঁড়ি। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ১২টি স্টেশন, তিনটি ইঞ্জিন। বহু জায়গায় ভেঙে গিয়েছে রেল লাইন। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আজও ২১০টি ট্রেন বাতিল করতে হয়েছে। তবে এ দিন ট্রেন চলেছে দিল্লি-জয়পুর পথে। গত কাল থেকে দিল্লিতে জল সমস্যার আংশিক সুরাহা হয়েছে। তবে অবস্থা পুরোপুরি ঠিক হতে এখনও আরও কিছু দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন দিল্লির জল সরবরাহ মন্ত্রী কপিল মিশ্র।

এত দিন বাদে যখন ক্রমশ ছন্দে ফিরছে হরিয়ানা, টুইটারে শান্তির আর্জি জানালেন বলিউডের অভিনেত্রী মল্লিকা শেরাওয়াত। কিছু দিন আগে জাঠ হিংসা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন বলিউডের নায়ক রণদীপ হুডা। আর আজ হিংসার পথ থেকে সরে আসার বার্তা দিলেন হরিয়ানার মেয়ে মল্লিকাও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন