Pahalgam Terrorist Attack

পহেলগাঁও হামলার মূল চক্রী পাক সেনার প্রাক্তন কমান্ডো? আগেও কাশ্মীরে দু’টি হামলায় যোগ ছিল এই জঙ্গির

সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি জায়গায় হামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মুসাকে। বিশেষ করে নিরাপত্তাবাহিনী এবং কাশ্মীরি নন, এমন ব্যক্তিদের উপরই হামলার দায়িত্ব দেওয়া হয় এই পাক জঙ্গিকে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৫ ১২:০৯
Share:

পহেলগাঁও হামলার চক্রী পাক জঙ্গি হাশিম মুসা (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

পহেলগাঁওয়ে হামলার নেতৃত্বে ছিল পাক জঙ্গি হাশিম মুসা। তদন্তে এমনই তথ্য উঠে এসেছে বলে সূত্রের খবর। উল্লেখ্য, এই জঙ্গিই পাক সেনার প্রাক্তন কমান্ডো ছিল। পরে লশকর-এ-ত্যায়বা জঙ্গিগোষ্ঠীতে যোগ দেয়। বৈসরনে হামলায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যেই ১৫ জন স্থানীয়কে গ্রেফতার করে জেরা করছেন তদন্তকারীরা। সূত্রের খবর, জেরায় বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীরে নিরাপত্তাবাহিনী এবং কাশ্মীরি নন, এমন ব্যক্তিদের উপর হামলা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মুসাকে। ওই সূত্রের দাবি, শুধু পহেলগাঁওই নয়, গত বছরে বারামুলা-সহ কাশ্মীরের দুই জায়গায় হামলার নেপথ্যেও ছিল এই কট্টরপন্থী পাক জঙ্গি। আর তা থেকেই তদন্তকারীদের সন্দেহ, কী ভাবে, কোন পথে হামলা চালানো হবে, তার পুরো নীল নকশা (ব্লুপ্রিন্ট) তৈরি হয়েছিল মুসার হাতেই। প্যারা কমান্ডোর প্রশিক্ষণ থাকায় সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে এই হামলা চালায় মুসা এবং তার সহ-জঙ্গিরা।

সূত্রের খবর, এসএসজি-র প্যারা কমান্ডোদের অত্যন্ত কঠিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যে কোনও পরিস্থিতি, যে কোনও আবহাওয়ায় মানসিক এবং শারীরিক ভাবে সক্ষম থাকা এবং পরিস্থিতি অনুযায়ী কৌশল বদলের মতোও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এই কমান্ডোরা যেমন অত্যাধুনিক অস্ত্র চালাতে দক্ষ, তেমনই সামনাসামনি লড়াই এবং কী ভাবে বেঁচে ফিরতে হবে তার কৌশলও তাদের আয়ত্তে। সূত্রের খবর, গ্রেফতার হওয়া সন্দেহভাজনদের জেরা করে এই হামলার নেপথ্যে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-যোগও পাওয়া যাচ্ছে।

Advertisement

সূত্রের খবর, জম্মু-কাশ্মীরে বেশ কয়েকটি জায়গায় হামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল মুসাকে। বিশেষ করে নিরাপত্তাবাহিনী এবং কাশ্মীরি নন, এমন ব্যক্তিদের উপরই হামলার দায়িত্ব দেওয়া হয় এই পাক জঙ্গিকে। জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ যে জঙ্গিদের ছবি প্রকাশ করেছে, তার মধ্যে মুসা ছাড়াও রয়েছে আলি ভাই ওরফে তালহা এবং স্থানীয় জঙ্গি আদিল ঠোকর। সন্দেহ করা হচ্ছে, প্যারা কমান্ডোর প্রশিক্ষণ থাকায় মুসাকে হামলা চালানোর দায়িত্ব দিয়েছে লশকর।

২০২৪ সালে গান্ডেরবালের গগনগিরে জঙ্গি হামলা হয়। সেই হামলায় ছয় পরিযায়ী শ্রমিক এবং এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছিল। ওই বছরেই বারামুলার বুতা পাথরিতে আরও একটি হামলা হয়। সেই হামলায় সেনার চার জওয়ান নিহত হয়েছিলেন। গত বছরের ওই দুই হামলার সঙ্গে পহেলগাঁওয়ে হামলার যোগ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে বলে সূত্রের খবর। পহেলগাঁওয়ে হামলার আগে সোপোরে বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে কোনও রকমে প্রাণ বাঁচিয়ে পালিয়েছিল মুসা। তবে ওই সংঘর্ষে আরও দুই জঙ্গি আরবাজ় মীর এবং জুনেইদ ভাটের মৃত্যু হয়েছিল।

সূত্রের খবর, পহেলগাঁও হামলায় স্থানীয়দের অনেকে জড়িত বলে সন্দেহ। যারা ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ হিসাবে জঙ্গিদের হয়ে কাজ করত। তেমনই বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সন্দেহ করা হচ্ছে, তারাই জঙ্গিদের আশ্রয়, হামলাস্থলে পৌঁছে দেওয়া এবং পহেলগাঁওয়ে ব্যবহৃত অস্ত্র সরবরাহ করেছিল। আর কত জন ‘ওভারগ্রাউন্ড ওয়ার্কার’ হিসাবে কাজ করছে তার তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ এবং সেনা। ইতিমধ্যেই ১৪ জন স্থানীয় জঙ্গিকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে সেনাবাহিনী। ১০ জন স্থানীয় জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়েও দেওয়া হয়েছে।

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরনে জঙ্গি হামলা হয়। সেই হামলায় ২৫ জন ভারতীয় এবং নেপালের এক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement