Rahul Gandi

দলে গণতন্ত্র নিয়ে সরব তিনিই, দাবি রাহুলের

গত অগস্টে কংগ্রেসের ২৩ জন নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে সাংগঠনিক নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন। তাঁদের মূল ক্ষোভ ছিল, রাহুল সভাপতি পদের দায়িত্ব না নিলেও পিছন থেকে সব নিয়ন্ত্রণ করছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২১ ০৭:৪৭
Share:

রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র

রাহুল গাঁধীর উপরে রুষ্ট কংগ্রেসের ‘বিক্ষুব্ধ’ নেতারা সাংগঠনিক নির্বাচনের দাবি তুলেছেন। তাঁদের বার্তা দিয়ে আজ রাহুল বললেন, তিনি নিজেই দশ বছর ধরে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিয়ে সবথেকে বেশি সরব। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক, দেশের প্রাক্তন মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিক বসুর সঙ্গে আজ এক ভিডিয়ো আলাপচারিতায় রাহুল বলেন, ‘‘আমিই কংগ্রেসের যুব, ছাত্র সংগঠনে নির্বাচন চালুর চেষ্টা করেছি। তার জন্য শুধু সংবাদমাধ্যমে সমালোচনা নয়। দলের মধ্যেও আমাকে আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে।’’

Advertisement

গত অগস্টে কংগ্রেসের ২৩ জন নেতা সনিয়া গাঁধীকে চিঠি লিখে সাংগঠনিক নির্বাচনের দাবি তুলেছিলেন। তাঁদের মূল ক্ষোভ ছিল, রাহুল সভাপতি পদের দায়িত্ব না নিলেও পিছন থেকে সব নিয়ন্ত্রণ করছেন। জি-২৩ গোষ্ঠীর দাবি মেনে, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটের পরে সভাপতি পদে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হলেও, সংগঠনের সমস্ত পদে নির্বাচনের এখনও কোনও ইঙ্গিত নেই। এরই মধ্যে গুলাব নবি আজাদ-সহ বিক্ষুব্ধরা ফের সরব।

আজ আলাপচারিতায় মোদী জমানায় গণতন্ত্রের ক্ষয়, বাক্‌স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন রাহুল। বলেছেন, আরএসএস সুপরিকল্পিত ভাবে বিচার বিভাগ, নির্বাচন কমিশন, আমলাতন্ত্রে নিজেদের লোক ঢোকাচ্ছে। বিজেপিকে ভোটে হারালেও এঁরা থেকে যাবেন। মণিপুর থেকে পুদুচেরিতে রাজ্যপাল, উপরাজ্যপালরা রাজনৈতিক পদাধিকারীর মতো কাজ করছেন বলে রাহুল অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর যুক্তি, এক দিকে আরএসএস গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান দখল করছে। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপেও বিজেপি নিজের লোক বসাচ্ছে। বিজেপির বন্ধু শিল্পপতিরা সংবাদমাধ্যম দখল করছেন।

Advertisement

কৌশিক পাল্টা প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিয়ে। রাহুলের জবাব, ‘‘আর কোনও দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র নিয়ে প্রশ্ন ওঠে না। কেন বিজেপিতে গণতন্ত্র নেই, কেন বিএসপি, এসপি-তে নেই, কেউ সে প্রশ্ন করে না। তবে মতাদর্শভিত্তিক পার্টি, যে দল স্বাধীনতার লড়াই লড়েছে, সংবিধান দিয়েছে, সেখানে গণতন্ত্রের প্রত্যাশাটা স্বাভাবিক।’’

গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা, কপিল সিব্বলের মতো বিক্ষুব্ধরা শনিবার জম্মুতে কংগ্রেসের দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। গুলাম নবি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করায় আজ জম্মুতে কংগ্রেস তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে। কিন্তু আজ গুজরাতের ছোট শহর থেকে গ্রামের পুরসভা-পঞ্চায়েতের ভোটে কংগ্রেসের ভরাডুবিতে ফের সংগঠনের দুর্বলতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রাহুলের যুক্তি, রাজনীতিবিদ হিসেবে বিচারবিভাগ ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের সাহায্য পেলে তাঁর কাজ করতে সুবিধা হবে। কিন্তু বিক্ষুব্ধ নেতাদের অভিযোগ, কংগ্রেস নিজে সক্রিয় হচ্ছে না কেন? এক বিক্ষুব্ধ নেতা বলেন, ‘‘ভোট ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরে গতকাল ও আজ পাঁচ রাজ্যের প্রার্থী বাছাইয়ের জন্য স্ক্রিনিং কমিটি তৈরি হয়েছে। তা কি আগে করা যেত না?’’

কৌশিক বসু আজ রাহুলকে জরুরি অবস্থা থেকে শুরু করে রাজীব গাঁধীর মৃত্যু নিয়েও প্রশ্ন করেছেন। জরুরি অবস্থা জারি করা পুরোপুরি ভুল ছিল বলে ফের জানিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘আমার ঠাকুমাও তা বলেছিলেন।’’ রাজীবের মৃত্যু নিয়ে রাহুল বলেন, ‘‘বাবাকে দেখেছিলাম অনেক বড় শক্তির সঙ্গে লড়ছেন। বাবাকে মৃত্যুর দিকে হেঁটে যেতে দেখেছিলাম। মৃত্যুর খবরের ফোন পেয়ে মনে হয়েছিল, এটাই হওয়ার ছিল।’’ একইসঙ্গে রাহুল জানিয়েছেন, এলটিটিই প্রধান প্রভাকরণের মৃত্যু ও শেষ সময়ে তাঁর দুর্দশা দেখে তিনি দুঃখিত হয়েছিলেন। মনে হয়েছিল, এই ব্যক্তিও কারও বাবা। রাহুল বলেন, ‘‘আমি প্রিয়ঙ্কাকে ফোন করে এ কথা বলায়, ও বলেছিল, আমারও একই কথা মনে হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন