কুলভূষণ কাণ্ডে ন্যায় আদালতে টানটান লড়াই

সীমান্তে গুলিবর্ষণ অথবা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নয়। কিন্তু আজ নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ-এ দিনভর প্রায় একই রকম টানটান উত্তেজনা তৈরি হল আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের বিচারকক্ষে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৭ ০৩:২৯
Share:

সীমান্তে গুলিবর্ষণ অথবা সার্জিক্যাল স্ট্রাইক নয়। কিন্তু আজ নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ-এ দিনভর প্রায় একই রকম টানটান উত্তেজনা তৈরি হল আন্তর্জাতিক ন্যায় আদালতের বিচারকক্ষে। এক দিকে পাকিস্তানের সামরিক আদালতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত ভারতীয় প্রাক্তন নৌ অফিসার কুলভূষণ যাদবের জীবন বাঁচানোর লড়াইয়ে নামল ভারত। অন্য দিকে ভারতের সমস্ত অভিযোগকে ভুয়ো প্রতিপন্ন করতে কোমর বাঁধল ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের দাবি, সন্ত্রাস ছড়ানোর জন্য কুলভূষণকে চর হিসাবে পাঠিয়েছিল ভারত। বিষয়টি পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত। এই ধরনের একটি মামলাকে আন্তর্জাতিক আদালতে টেনে আনা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

Advertisement

আজ দিনের শুরুতে বিদেশ মন্ত্রকের পাকিস্তান বিষয়ক যুগ্ম সচিব দীপক মিত্তলের নেতৃত্বে সওয়াল শুরু করে ভারতীয় প্রতিনিধি দল। প্রবীণ আইনজীবী হরিশ সালভে আজ চাঁছাছোলা ভাষায় পাকিস্তানকে আক্রমণ করে জানান, কুলভূষণের সঙ্গে ভারতীয় কূটনীতিকরা ১৬ বার দেখা করতে চাওয়ার আবেদন করা সত্ত্বেও তাতে কর্ণপাত করেনি ইসলামাবাদ। এটি আন্তর্জাতিক চুক্তির (ভিয়েনা কনভেনশন) ঘোরতর অবমাননা বলেই উল্লেখ করেছেন সালভে। পাশাপাশি বলা হয়েছে যে কূলভূষণের অপরাধ এবং তাঁর বিচার সংক্রান্ত কোনও নথিই ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি। কেবলমাত্র জানানো হয়েছে তাঁর জবানবন্দির ভিত্তিতেই মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এটিও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রকৃষ্ট উদাহরণ। দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার সওয়ালের শেষে সালভে বলেন, ‘‘২১ মার্চ একটি চিঠিতে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে ভারত যদি তদন্তে সহযোগিতা করে তবেই কুলভূষণের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হবে। কিন্তু তদন্তের কোনও কাগজপত্রই আমাদের হাতে দেওয়া হয়নি। আদালতের কাছে আজ ভারতের আবেদন, আপাতত এমন কোনও নির্দেশ দেওয়া হোক যাতে কূলভূষণের প্রাণরক্ষা হয়।’’

আরও পড়ুন:দস্যুর হানায় সতর্ক ভারত

Advertisement

সকালে ভারতের সওয়ালের পরে বিকেলে বলতে ওঠেন পাকিস্তানের আইনজীবী খাওয়ার কুরেশি। নাটকীয়ভাবে একটি পাসপোর্টের ছবি দেখানো হয়। যেখানে বাকি সব তথ্য ও ছবি কুলভূষণের হলেও রয়েছে ভিন্ন একটি নাম। দিল্লির দাবি, এই পাসপোর্টটি সম্পূর্ণ জাল। আদালতকে প্রভাবিত করার জন্য এই জাল পাসপোর্ট তৈরি করেছে পাকিস্তান। ভারতকে কোনও তথ্য দেওয়া হয়নি, দিল্লির এই অভিযোগটিও অস্বীকার করে কুরেশি আজ জানান, ভারতকে সবই জানানো হয়েছে। ভিয়েনা কনভেনশন-এর বিরোধিতা করে ভারতকে কেন কনস্যুলার অ্যাকসেস (দেখা করতে দেওয়ার অনুমতি) দেওয়া হয়নি তার কোনও স্পষ্ট উত্তর আজ দিতে পারেনি পাকিস্তান। কুরেশি আর্জি জানান, এই মামলাটি অবিলম্বে খারিজ করে দেওয়া হোক। কারণ এর সঙ্গে সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থ যুক্ত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন