বর্ষণে নাজেহাল বাণিজ্যনগরী। ছবি-পিটিআই
বুধবার থেকেই টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবারেও তা থামার কোনও চিহ্নমাত্র নেই। রাতভর মুষলধারে বৃষ্টির পর কার্যত নাকাল বাণিজ্যনগরী। অবিরাম বৃষ্টিতে ফের বানভাসি মুম্বই। ইতিমধ্যেই জল জমেছে মুম্বই, নাসিক, কান্দিভালি, বোরিভেলি, আন্ধেরি ও ভাণ্ডপ এলাকায়। শহরের প্রতিটি নিচু এলাকা জলমগ্ন। রায়গড়, সাংলি, পুণে, কোলাপুর, কোলাবা, ওয়ারলি, ঘাটকোপার, ট্রম্বে, মালাড-এ প্রবল বৃষ্টিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। স্কুল-কলেজ-অফিস যাওয়ার পথে রীতিমতো ভোগান্তির শিকার হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। বিপর্যস্ত হয় রেল ও বিমান পরিষেবাও।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণেই লন্ডন থেকে মু্ম্বইগামী একটি বিমানকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় অমদাবাদ বিমানবন্দরে। লাইনে জল জমে যাওয়ায় বাতিল করতে হয় বেশ কয়েকটি ট্রেনও। এর মধ্যেই দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, আরও পাঁচ-ছ’দিন প্রবল বৃষ্টি হবে মুম্বইয়ের বিভিন্ন এলাকায়। আবহবিদেরা জানিয়েছেন, ১১ জুন পর্যন্ত বর্ষণের ফলে সমুদ্র উত্তাল থাকবে। সেই কারণে প্রশাসনের তরফে গোয়া ও মুম্বইয়ের বিভিন্ন সৈকতে দুর্ঘটনা এড়াতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পর্যটকেরা যাতে সমুদ্রের খুব কাছাকাছি না যান, সে ব্যাপারেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে।
বৃহন্মুম্বই কর্পোরেশনের (বিএমসি) তরফে বলা হয়েছে, মৌসম ভবনের বিবৃতির পরই আগাম সতর্কতার কারণে আগামী শনি ও রবিবারও পুরসভার কমিশনারদের প্রত্যেকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে দফতরের বিভাগীয় প্রধানদের ছুটিও। মুম্বই শহর ও শহরতলি সংলগ্ন বাসিন্দাদের যাতে কোনও রকম বিপদের মুখে পড়তে না হয়, তার দিকে সম্পূর্ণ নজর রাখা হচ্ছে।
আরও খবর: নিম্নচাপের ভ্রূকুটি বঙ্গোপসাগরে, স্বস্তির বৃষ্টি শহরে
পারেল, মানখুর্দ (পূর্ব শহরতলি), আন্ধেরি স্পোর্টস কমপ্লেক্সে (পশ্চিম শহরতলি) জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। ত্রাণসামগ্রী, শুকনো খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে মজুত রয়েছে তাদের কাছে। মু্ম্বইয়ের দমকল দফতরের বিশেষ বন্যা মোকাবিলা বাহিনীর ছ’টি দলকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খোলা হয়েছে বেশ কয়েকটি স্কুল।
আগামী ৪৮ ঘণ্টায় রত্নগিরি, সিন্ধুদুর্গ, রায়গড়, থানে, পালঘরে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ প্রবল বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন। কোঙ্কণের ছ’টি জেলাতেও প্রবল বর্ষণের সতর্কতা জারি করা হয়েছে। মহারাষ্ট্রের জলসম্পদ বিভাগের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কৃষ্ণা ও গোদাবরীর শাখানদীগুলির প্রত্যেকটিতেই জলস্তর মারাত্মক ভাবে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। মুম্বই ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে বিএমসি-র তরফে। ২০০৫ সালের জুলাইয়ে প্রবল বর্ষণের পর আর কখনও এ রকম মারাত্মক পরিস্থিতি মুম্বইবাসী প্রত্যক্ষ করেননি বলেই মনে করা হচ্ছে।