ফাইল চিত্র।
ঠিক কুড়ি দিনের মাথায় হিমাচলের ভোট। নরেন্দ্র মোদী জমানায় দুর্নীতির অভিযোগে যতই তাঁকে কেন্দ্রীয় সংস্থা তলব করুক, বীরভদ্র সিংহকেই মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করেছেন রাহুল গাঁধী। কিন্তু চার দিন ধরে গভীর চিন্তা-ভাবনার পরেও বিজেপি এখনও তাদের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী ঘোষণা করতে পারল না কেন, সেই প্রশ্ন উঠেছে।
পাঁচ দিন আগে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহরা হিমাচলের প্রার্থী-তালিকা চূড়ান্ত করতে বৈঠক করেন। বহু আলাপ-আলোচনার পরে গত কাল যে প্রার্থী-তালিকা প্রকাশ হয়, তাতে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রেমকুমার ধুমলের নাম রয়েছে। ধুমলের পছন্দের প্রার্থীরাও টিকিট পেয়েছেন। বসমানের বদলে এ বার সুজানপুর থেকে লড়তে চেয়েছিলেন ধুমল। সেই দাবিও মেনে নিয়েছে দল। এই বাড়তি গুরুত্বে স্পষ্ট ইঙ্গিত— ঠাকুর নেতা বীরভদ্রের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আর এক ঠাকুর ধুমলকে তুলে ধরতে চাইছেন শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু তিনি যে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী, সরকারি ভাবে সেই ঘোষণাটিই করে উঠতে পারছেন না অমিত।
এর প্রধান কারণ, হিমাচলে বিজেপি এখনও দ্বিধাবিভক্ত। দলের কোনও কোনও সূত্রে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎপ্রকাশ নড্ডার নামও মাঝেমধ্যে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, হিমাচলে দল জিতলে নড্ডাও হতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। ধুমল মন্ত্রিসভার প্রাক্তন সদস্য নড্ডাকে অবশ্য বিধানসভায় প্রার্থী করেনি বিজেপি।
কংগ্রেসেরও মধ্যেও যে মতবিরোধ ছিল না, এমন নয়। সুখবিন্দর সুখুকে দলের দায়িত্বে আনা নিয়ে প্রবল আপত্তি ছিল বীরভদ্রের। টিকিট বণ্টনের সময়ে দলে তাঁর প্রতিপক্ষদের প্রাধান্য যাতে না হয়, সে জন্য চার দিন ধরে দিল্লিতে ঘাঁটি গেড়ে ছিলেন বীরভদ্র। শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসের প্রার্থী-তালিকায় বীরভদ্রেরই ছাপ রয়েছে। এখনও অবশ্য শিমলা গ্রামীণ কেন্দ্রে তাঁর ছেলে বিক্রমাদিত্যকে টিকিট দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করেনি হাইকম্যান্ড। ‘এক পরিবার, এক টিকিট’ নীতিতে আটকে রয়েছে সেটি। সিদ্ধান্তের বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে সনিয়া গাঁধীর উপরে।
বীরভদ্রও এ বার শিমলা ছেড়ে সোলন জেলায় আরকি থেকে লড়বেন। কিন্তু কংগ্রেসের প্রশ্ন— বিজেপিকে তাদের ‘প্রধান মুখ’ ধুমলের আসন কেন বদল করতে হল? তারা তো বীরভদ্রের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়াতেই লড়ার কথা বলছে। বিজেপির যুক্তি, প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতার হাওয়া আছে বলেই শেষ মুহূর্তে কংগ্রেস ছেড়ে নেতারা বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুখরামের ছেলে অনিল শর্মাও রয়েছেন। যদিও রাজ্য নেতৃত্বকে না জানিয়ে অমিত শাহরা যে ভাবে অনিলকে দলে এনেছেন, তা নিয়েও ক্ষোভ রয়েছে হিমাচল বিজেপিতে।