বন্দনা: রানি ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী পালন হিন্দু সেনার। নিজস্ব চিত্র
ভিক্টোরিয়া ‘মাতা কি’.... জয়!
দু’পাশে দু’টি ভারতের পতাকা ছুঁয়ে আছে রানি ভিক্টোরিয়ার ছবি। সামনে গেরুয়া ফেট্টিতে একদল লোক। তাঁদের মুখে জয়ধ্বনি রানি ভিক্টোরিয়ার! ছবিতেই মিষ্টি খাওয়ানো হচ্ছে, মালা পরানো হচ্ছে।
রানি ভিক্টোরিয়ার মৃত্যুবার্ষিকী ছিল আজ। খোদ রানির নিজের দেশে ক’জন মনে রেখেছে এই দিনটা, জানা নেই। কিন্তু মনে রেখেছে গেরুয়া শিবিরেরই এক সংগঠন, হিন্দু সেনা। তা-ও রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র যন্তর মন্তরে, রীতিমতো জাঁকজমকের সভা করে।
আয়োজন অভিনব, সন্দেহ নেই। উদ্যোক্তাদের যুক্তি কিন্তু আরও চমকে দিচ্ছে। সংগঠনের প্রধান বিষ্ণু গুপ্ত-র দাবি, এই উৎসব দেশের ‘প্রথম স্বাধীনতা প্রাপ্তি’র। বিদেশি ইসলামিক সন্ত্রাস থেকে দেশকে মুক্ত করেছিল ব্রিটিশরা। দেশকে অখণ্ড বানিয়েছে তারাই। বাংলা এবং পরে অন্য প্রান্তেও আইন করে সতীদাহ প্রথা বন্ধ করেছে। দাস প্রথাও বিলোপ করেছে। দেশে আইনের শাসন এনেছে। শুধু এটুকু বলেই ক্ষান্ত দেননি তিনি। ব্রিটিশ বন্দনা করতে গিয়ে বিঁধেছেন কংগ্রেস এবং কমিউনিস্টদেরও। বিষ্ণু গুপ্ত-র দাবি, এরা কোনও দিনই আসল ইতিহাস পড়ায়নি। কারণ, আসল ইতিহাস মেলে ধরলে ভোট পেত না কংগ্রেস।
আরও পড়ুন: ডিএ বাড়বে, আশ্বাস দিয়ে ভোট চাইলেন অমিত
এর আগে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্মদিন ঘটা করে পালন করেছিল হিন্দু সেনা। তা নিয়েও সমালোচনা হয়েছিল। এ বারেও তাদের কাজ নিয়ে প্রশ্ন তুলে অনেকে বলেছেন, সঙ্ঘ পরিবার বরাবরই ব্রিটিশ-ভক্ত। যে কারণেই তারা স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশই নেয়নি। ব্রিটিশের কাছে সঙ্ঘের মতাদর্শগত গুরু সাভারকরের ক্ষমাপ্রার্থনার প্রসঙ্গও তুলছেন তাঁরা। কংগ্রেসও বলেছে, ‘‘সাভারকরের অনুগামীরা আজ তাঁদের প্রভুকে স্মরণ করল! যে সঙ্ঘের থেকে বিজেপির জন্ম, তারা ভারতীয়দের বিরুদ্ধে লড়েই ব্রিটিশদের থেকে ক্ষমা চেয়েছিল। স্বাধীনতা প্রাপ্তির মর্ম তাই তাদের থেকে প্রত্যাশা করা যায় না।’’
আরও পড়ুন: গাঁধী সব থেকে ব্রাত্য গুজরাতেই, বলছেন রামচন্দ্র
কবিতা কৃষ্ণনের কথায়, ‘‘ইসলামোফোবিয়া আর ধর্মান্ধতা শুধু নিছক পাগলামো নয়। গোলওয়ালকর এবং আরএসএসের যা ভাবনা, হিন্দু সেনারও তাই।’’