Jammu-Kashmir Terror Attack

একমাত্র প্রতিরোধ! সহ্য করেনি জঙ্গিরা, বন্দুক ছিনিয়ে নিতে গিয়ে ঝাঁঝরা হয়ে যেতে হল পহেলগাঁওয়ের আদিলকেও

পহেলগাঁওয়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের টাট্টু ঘোড়ায় চড়ানোই ছিল তাঁর কাজ। এ ভাবেই বছরভর উপার্জন করতেন স্থানীয় বাসিন্দা সইদ। মঙ্গলবার দুপুরে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে ২৬ জন নিহতের তালিকায় রয়েছে তাঁর নামও।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫ ১৪:৩১
Share:

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহত সইদ আদিল হুসেন শাহ। ছবি: সংগৃহীত।

পর্যটকদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে জঙ্গিরা। মুহূর্তের চমক ভাঙতেই এক জঙ্গির উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বন্দুক। কিন্তু, পেরে ওঠেননি। তাঁর দিকে তাক করা এ কে ৪৭ গর্জে ওঠে। জঙ্গিদের নিরস্ত্র করার দুঃসাহস দেখানোর পরিণাম হিসাবে গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় সইদ আদিল হুসেন শাহের শরীর।

Advertisement

পহেলগাঁওয়ে বেড়াতে আসা পর্যটকদের টাট্টু ঘোড়ায় চড়ানোই ছিল তাঁর কাজ। এ ভাবেই বছরভর উপার্জন করতেন স্থানীয় বাসিন্দা সইদ। মঙ্গলবার দুপুরে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিদের গুলিতে ২৬ জন নিহতের তালিকায় রয়েছে তাঁর নামও। জঙ্গিদের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বাকিদের বাঁচাতে এক জঙ্গির হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নিতে গিয়েছিলেন সইদ। কিন্তু সাহস দেখাতে যাওয়াই কাল হল! একমাত্র তিনিই জঙ্গিদের সামনে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। পরিণামে প্রাণ হারাতে হল।

মঙ্গলবার দুপুরে দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার বৈসরন উপত্যকায় ঘুরছিলেন পর্যটকেরা। তখনই আচমকা হামলা করে জঙ্গিরা। মুহুর্মুহু গুলি চালানো শুরু হয়। পর্যটকদের কাছে এসে একে একে তাঁদেরকে গুলি করে হত্যা করতে শুরু করে জঙ্গিরা। তখনই এগিয়ে আসেন ঘোড়সওয়ার ওই যুবক। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, বাকিদের বাঁচাতে এক জন জঙ্গির হাত থেকে বন্দুক ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা করেন সইদ। কিন্তু পারেননি। তার আগেই তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে দেন জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর।

Advertisement

পরিবারের একমাত্র রোজগেরে ছিলেন সইদ। তাঁর উপার্জনেই সংসার চলত বৃদ্ধ বাবা-মা, স্ত্রী এবং সন্তানদের। ছেলের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন বাবা-মা। দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন তাঁরা। সইদের বাবা হায়দার শাহ সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘‘মঙ্গলবার কাজে পহেলগাঁওয়ে গিয়েছিল ছেলে। বিকেল ৩টে নাগাদ আমরা হামলার খবর পাই। ওকে বার বার ফোন করেছিলাম, কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল। কোনও ভাবেই ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। পরে বিকেল ৪টে ৪০ মিনিট নাগাদ ওর ফোন চালু হয়। কিন্তু কেউ ফোন তোলেনি। এর পরেই আমরা দ্রুত থানায় যাই। সেখানেই জানতে পারি, জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে তাঁর। এর জন্য যেই দায়ী হোক না কেন, তাকে পরিণতি ভোগ করতেই হবে।’’

জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে মঙ্গলবার দুপুরের জঙ্গি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ২৬ জন পর্যটক। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের তিন বাসিন্দা। আহত আরও অনেকে। মঙ্গলবার রাতেই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাক জঙ্গিগোষ্ঠী লশকর-ই-ত্যায়বার ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। জরুরি পরিস্থিতিতে জাতীয় তদন্তকারী দল এনআইএ উপত্যকায় পৌঁছেছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। বুধবার সকালে তিনি পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় নিহতদের শেষ শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। কথা বলেছেন তাঁদের পরিজনদের সঙ্গেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement