Meghalaya Honeymoon Murder

১৬ দিনের ‘বিভ্রান্তি’র পরে মধ্যরাতের সাফল্য! মেঘালয়ের তদন্ত কোন পথে এগোল? কী ভাবে আত্মসমর্পণ সোনমের?

গত ২৩ মে রাজা এবং সোনমকে শেষ বার একসঙ্গে মেঘালয়ে দেখা গিয়েছিল। টানা ১৬ দিন ধরে কার্যত নাকাচোবানি খেয়েছে পুলিশ। মেলেনি কোনও সূত্র। অবশেষে রবিবার রাতে এসেছে সাফল্য।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ১৩:২০
Share:

মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামীকে খুনের অভিযোগ স্ত্রী সোনম রঘুবংশীর বিরুদ্ধে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

টানা ১৬ দিন ধরে কার্যত নাকাচোবানি খেয়েছে পুলিশ। মেলেনি কোনও সূত্র। মধ্যপ্রদেশের ইনদওর থেকে মেঘালয়ে ঘুরতে গিয়ে নবদম্পতি কোথায় উধাও হয়ে গেলেন, কূলকিনারা পাচ্ছিলেন না তদন্তকারীরা। ১১ দিন পরে জলপ্রপাতের ধার থেকে উদ্ধার করা হয় রাজা রঘুবংশীর দেহ। তাতেও বড় কোনও সাফল্য আসেনি। কারণ, তাঁর স্ত্রী সোনম তখনও গায়েব ছিলেন। বরং পুলিশ মনে করেছিল, সোনমকে অপহরণ করেছে দুষ্কৃতীরা। ১৬ দিনের মাথায় এই ঘটনার মোড় ঘুরে গিয়েছে। অবশেষে সাফল্য পেয়েছে মেঘালয় পুলিশ। সোনম নিজেই ধরা দিয়েছেন। কী ভাবে তদন্ত এগোল?

Advertisement

গত ২৩ মে রাজা এবং সোনমকে শেষ বার একসঙ্গে মেঘালয়ে দেখা গিয়েছিল। একটি উঁচু পাহাড়ে চড়ছিলেন তাঁরা। পরিবারের সঙ্গেও সে দিনই শেষ বার তাঁদের কথা হয়েছিল। এর পর মেঘালয় তো বটেই, পুলিশের তদন্তকারী দল পৌঁছে গিয়েছিল ইনদওরেও। রাজা খুন হয়েছেন, একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন তদন্তকারীরা। রহস্য দানা বেঁধেছিল সোনমকে নিয়ে। তাঁকে বাংলাদেশে পাচার করে দেওয়া হয়েছে, কেউ কেউ এমন কথাও বলেছিলেন। রবিবার মধ্যরাতের আগে পুলিশ সাফল্য পায়নি।

মেঘালয় পুলিশের তদন্ত প্রথম বড় মোড় ঘুরেছিল গত ৭ জুন। স্থানীয় এক ট্যুর গাইড জানিয়েছিলেন, তিনি ২৩ তারিখ সকালে রাজা-সোনমকে দেখেছিলেন। সঙ্গে ছিলেন আরও তিন জন। তাঁরা হিন্দিতে কথা বলছিলেন। অর্থাৎ, স্থানীয় কেউ নন। এর পর খুনের তদন্ত কিছুটা গতি পেয়েছিল। অপরিচিতি হিন্দিভাষী ওই তিন জনের খোঁজে পুলিশ যায় ইনদওরে।

Advertisement

পুলিশের হাতে এর পর আসে রক্তমাখা দা এবং একটি কালো বর্ষাতি। যে হোম স্টে-তে নবদম্পতি ছিলেন, সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, সোনম ওই বর্ষাতি পরে আছেন। পুলিশের সন্দেহ আরও জোরালো হয়। ঘুরে বেড়ানোর জন্য একটি স্কুটিও ভাড়া নিয়েছিলেন রাজা-সোনম। সেটি পুলিশ যখন উদ্ধার করে, তাতে চাবি লাগানো ছিল।

রবিবার রাত ১টা নাগাদ উত্তরপ্রদেশের গাজি়পুরের একটি ধাবায় দেখা যায় সোনমকে। ধাবার মালিক সাহিল যাদব এই সাক্ষাতের বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তদন্তকারীদের। তিনিই পুলিশকে ফোন করে সোনমের খবর দেন বলে দাবি। সাহিল জানিয়েছেন, রাত ১টা নাগাদ কাঁদতে কাঁদতে তাঁর ধাবায় আসেন সোনম। বাড়িতে ফোন করতে চান। সাহিল নিজের ফোন সোনমকে দিয়েছিলেন। সেখান থেকে পরিবারের সঙ্গে কথাও বলেন তরুণী। সাহিলের ফোনে সেই নম্বর এখনও রয়ে গিয়েছে। রাতে পুলিশকে ফোন করে সাহিল জানান সোনমের কথা। তাঁকে থানায় নিয়ে যাওয়া হলে সোনম আত্মসমর্পণ করেন। ইনদওরে সোনমের বাড়ি থেকেও ফোনের খবর যায় পুলিশের কাছে।

মেঘালয় পুলিশের যে দলটি ইনদওরে ছিল, তারা দু’জন সন্দেহভাজনকে রবিবার রাতে আটক করে। পরে তাঁদের গ্রেফতারও করা হয়। অভিযোগ, রাজাকে খুনের সঙ্গে এই দু’জনের যোগ রয়েছে। আবার উত্তরপ্রদেশ থেকেও এক জনকে রবিবার রাতেই গ্রেফতার করা হয়। মেঘালয় পুলিশের ডিজি জানিয়েছেন, মোট গ্রেফতারির সংখ্যা চার। আরও কয়েক জনের খোঁজ চলছে। স্বামীকে খুনের জন্য সোনম ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেছিলেন বলেও দাবি করেছে পুলিশ।

তদন্তে সোনমের এক প্রেমিকের কথাও উঠে এসেছে। রাজ কুশওয়াহা নামের ওই যুবকের সঙ্গে সোনমের একাধিক ফোনকলের হদিস পেয়েছে পুলিশ। গত ১৯ মে সোনম এবং রাজার বিয়ে হয়। তার আগে থেকেই রাজের সঙ্গে সোনমের পরিচয় ছিল। রাজকে এই খুনের অন্যতম চক্রী বলে অনেকে দাবি করছেন। এখনও এ বিষয়ে পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement