Meghalaya Missing Couple

মধুচন্দ্রিমা, তিন ভাড়াটে খুনি, সোনার চেন আর আত্মসমর্পণ, কী উদ্দেশ্য ছিল সোনমের, কী কী উঠে এল মেঘালয়কাণ্ডে

মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাসিন্দা রাজা এবং সোনম। মধুচন্দ্রিমার জন্য বেছে নিয়েছিলেন দেশের অন্য প্রান্তের একটি রাজ্য— মেঘালয়। ২৩ তারিখ সেখান থেকে দু’জন নিখোঁজ হন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২৫ ১০:২৬
Share:

মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে স্বামীকে খুনের অভিযোগ স্ত্রী সোনম রঘুবংশীর বিরুদ্ধে। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

১৯ তারিখ চার হাত এক হয়েছিল। ২০ তারিখেই মধুচন্দ্রিমার উদ্দেশে বেরিয়ে পড়েন রাজা রঘুবংশী এবং সোনম রঘুবংশী। ২৩ তারিখ থেকে আর তাঁদের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অনেক পরে রাজার দেহ উদ্ধার হলেও সোনম নিখোঁজই ছিলেন। সেই তিনিই এত দিন পর হঠাৎ নিজে থেকে ধরা দিলেন! তাঁকে গ্রেফতার করা হল স্বামীকে খুনের অভিযোগে। মেঘালয়কাণ্ডের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে ঘোর কাটছে না অনেকের। পুলিশ জানিয়েছে, স্বামীকে খুনের জন্য ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেছিলেন সোনমই। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

Advertisement

মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাসিন্দা রাজা এবং সোনম। মধুচন্দ্রিমার জন্য বেছে নিয়েছিলেন দেশের অন্য প্রান্তের একটি রাজ্য— মেঘালয়। সোনম ছাড়াও রাজাকে খুনের অভিযোগে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে মেঘালয় পুলিশ। দু’জনকে পাওয়া গিয়েছে ইনদওর থেকেই। সোনম উত্তরপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করেছেন। কেন স্বামীকে খুন করলেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তিন জন ভাড়াটে খুনি নিয়োগের বিষয়টি পুলিশ নিশ্চিত করেছে। এখনও এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত কয়েক জনের খোঁজ চলছে।

মেঘালয়ের এক ট্যুর গাইডের বয়ানে এর আগে তিন হিন্দিভাষীর কথা উঠে এসেছিল। অ্যালবার্ট নামের ওই গাইড দাবি করেছিলেন, তিনি ২৩ তারিখ রাজা এবং সোনমকে তিন জন যুবকের সঙ্গে পাহাড়ে উঠতে দেখেছিলেন। সে দিন সকাল ১০টা নাগাদ নোংরিয়াট থেকে মাওলাখিয়াটে ৩০০০ সিঁড়ি চড়ছিলেন দম্পতি। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন আরও তিন জন। ধৃত তিন ভাড়াটে খুনিই অ্যালবার্টের দেখা তিন হিন্দিভাষী কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রাজাকে খুন করার জন্য সোনম যে তাঁদের নিযুক্ত করেছিলেন, তা পুলিশকে জানিয়েছেন ধৃতেরা।

Advertisement

২ জুন রাজার দেহ পাওয়া যায় ওয়েইসডং জলপ্রপাতের কাছ থেকে। রক্তমাখা একটি কালো বর্ষাতি এবং দা-ও পাওয়া গিয়েছিল। কিন্তু তাঁর পরনে যে সোনার আংটি এবং সোনার চেন ছিল, সেগুলি পাওয়া যায়নি। সোনম বা ধৃতদের মধ্যে থেকে কেউ সেগুলি সরিয়েছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রাজার দেহ উদ্ধারের পরেও সোনমের খোঁজ না-পাওয়ায় অনেকেই মনে করেছিলেন, মেঘালয়ে গিয়ে দুষ্কৃতীদের কবলে পড়েন নবদম্পতি। সোনমকে হয়তো অপহরণ করা হয়েছে। অনেকে বাংলাদেশে পাচারের তত্ত্বও তুলে ধরেছিলেন। সোনমের পরিবার প্রথম দিন থেকে সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে আসছে। মেঘালয় পুলিশের তদন্তে তারা অসন্তোষ প্রকাশ করে। কিন্তু সোনম আত্মসমর্পণ করার পর এই ধরনের প্রায় সব তত্ত্বই খারিজ হয়ে যাচ্ছে। যদিও সবরকম সম্ভাবনা পুলিশ খতিয়ে দেখছে।

অনেকের দাবি, খুনের নেপথ্যে রয়েছে অন্য এক যুবকের সঙ্গে সোনমের প্রেমের সম্পর্ক। রাজ কুশওয়াহা নামে তাঁর এক প্রেমিকের কথা উঠে এসেছে। বিয়ের আগে থেকেই সোনমের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ছিল। অভিযোগ, রাজাকে খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন এই রাজ। তাঁর সঙ্গে সোনমের একাধিক ফোনালাপের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে বলেও পুলিশ সূত্রে দাবি। রাজকেও ইনদওর থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরের এক ধাবার মালিক জানিয়েছেন, রবিবার রাত ১টা নাগাদ কাঁদতে কাঁদতে তাঁর ধাবায় আসেন সোনম। বাড়িতে ফোন করতে চান। ধাবা মালিকের ফোন থেকেই বাড়িতে কথা বলেন। তার পর পুলিশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ করিয়ে দেন ওই ধাবার মালিক। সোনম আত্মসমর্পণ করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement