(বাঁ দিকে) নিহত রাজা রঘুবংশী এবং তাঁর স্ত্রী সোনম রঘুবংশী (ডান দিকে)। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
মেঘালয়ে মধুচন্দ্রিমায় গিয়ে খুন হয়েছেন মধ্যপ্রদেশের ইনদওরের বাসিন্দা রাজা রঘুবংশী। এই হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তাঁর স্ত্রী সোনমের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে উত্তরপ্রদেশে আত্মসমর্পণ করলেন তিনি। সঙ্গে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেঘালয় পুলিশের ডিজি ইদাশিশা নোংরাং এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমাও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। সাধুবাদ জানিয়েছেন পুলিশকে।
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের গাজ়িপুরের নন্দগঞ্জ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন সোনম। আরও এক জনকে উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেফতার করেছে মেঘালয় পুলিশ। এ ছাড়া, ইনদওর থেকে বিশেষ তদন্তকারী দলের (সিট) হাতে ধরা পড়েছেন আরও দু’জন। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় গ্রেফতারির সংখ্যা চার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বামীকে খুন করানোর জন্য ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেছিলেন সোনম। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, ‘‘সাত দিনের মধ্যে মেঘালয় পুলিশ রাজা খুনের কিনারা করল। মধ্যপ্রদেশের তিন আততায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মহিলা আত্মসমর্পণ করেছেন। এখনও এক জন আততায়ীর খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
ইনদওরের বাসিন্দা রাজা এবং সোনমের বিয়ে হয় গত ১৯ মে। তার পরের দিনই মেঘালয়ে ঘুরতে গিয়েছিলেন নবদম্পতি। ২৩ মে সোহরার একটি হোমস্টেতে শেষ বার তাঁদের দু’জনকে দেখা গিয়েছিল। ১১ দিন পর খাদ থেকে উদ্ধার হয় রাজার দেহ। রক্তমাখা দা এবং বর্ষাতিও মেলে। কিন্তু সোনমকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। পুলিশ জানিয়েছিল, গত ২৩ মে দুপুর সওয়া ১টায় আত্মীয়দের সঙ্গে শেষ কথা হয়েছিল সোনমের। মনে করা হচ্ছিল, দুষ্কৃতীদের কবলে পড়েছেন তিনিও। এমনকি, তাঁকে অপহরণ করে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও কেউ কেউ সন্দেহ প্রকাশ করছিলেন। কারণ, যেখান থেকে সোনম এবং রাজা নিখোঁজ হয়েছিলেন, সেখান থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত খুব দূরে নয়। রাজা-সোনমের পরিবারের তরফেও অপহরণের অভিযোগ তোলা হয়। একাধিক বার তদন্ত নিয়ে পরিবারের সদস্যরা অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন।
রাজা-সোনমের ঘটনায় মেঘালয় পুলিশের তরফে বাংলাদেশের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছিল। কিন্তু সে দিক থেকে কোনও খোঁজ মেলেনি। অবশেষে ১৬ দিন পর সোনমের খোঁজ মিলল। স্বামীকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল তাঁকে। মেঘালয়ে নবদম্পতির উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনার তদন্ত যে পথে এগোচ্ছিল, তার মোড় ঘুরিয়ে দিল সোনমের আত্মসমর্পণ।