National News

‘মেসেজ করেছিলাম মারিয়াকে, বিমান ঠিকমতো ল্যান্ড করেছে তো!’

এক হাজার ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা ছিল মারিয়ার। গত ১৭ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গেই জড়িত বছর বিয়াল্লিশের মারিয়া। পেশায় আইনজীবী প্রভাত বলেন, “মারিয়া খুব ভাল পাইলট ছিলেন। মারিয়াই তাঁর পরিবারের মধ্যে প্রথম যিনি এই পেশাক বেছে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, ডাসল্ট ফ্যালকন বিমান ওড়ানোরও অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর।”

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৮ ১১:৪৯
Share:

চার্টার্ড বিমান ভেঙে পড়ার পর উদ্ধার কাজ চলছে। ফাইল চিত্র— এএফপি।

চার্টার্ড বিমানের পরীক্ষামূলক উড়ানে গিয়েছেন স্ত্রী। তাই উদ্বেগ ছিল বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই। পরীক্ষমূলক উড়ানটা যেন ঠিকঠাক হয়। এই ভাবনা সকাল থেকেই ঘিরে রেখেছিল বিমান দুর্ঘটনায় নিহত ফার্স্ট অফিসার মারিয়া জুবেরির স্বামী প্রভাত কুঠারিয়াকে।

Advertisement

বিমানটি ওড়ার পরেই স্ত্রীকে এসএমএস করেছিলেন, ‘বিমান ঠিকঠাক ল্যান্ড করেছে তো?’ কিন্তু মারিয়ার উত্তর মেলেনি। প্রভাত জানান, ঠিক তার পরেই মোবাইলে মুম্বই বিমান দুর্ঘটনার একটি নিউজ মেসেজ ঢোকে। তাতেই উদ্বেগ আর আশঙ্কাটা বহু গুণে বেড়ে যায়। তা হলে কি….

তত ক্ষণে নিউজ চ্যানেলগুলোতে দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়েছে। টিভিতে চোখ রাখতেই আঁতকে ওঠেন প্রভাত। এটাই তো সেই বিমান যেটাতে তাঁর স্ত্রী ছিলেন! এক মুহূর্তের জন্য সব কিছু স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর কাছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: মুম্বইয়ে আবাসনে ভেঙে পড়ল বিমান, পাইলটের তৎপরতায় বাঁচল বহু প্রাণ

প্রভাত জানান, রানওয়েতে জল থাকার কারণে বিমানের পরীক্ষামূলক উড়ান প্রথম দিন বাতিল হয়ে গিয়েছিল। আবহাওয়া খারাপ থাকায় দ্বিতীয় দিনও বাতিল হওয়ার একটা সম্ভাবনা ছিল।বৃহস্পতিবার পাইলট পি রাজপুত মারিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করে জানান, খারাপ আবহাওয়ার জন্য এ দিনও বাতিল হতে পারে উড়ান। কিন্তু শেষ মুহূর্তে সেই সিদ্ধান্ত বদলে যায়।

ক্যাপ্টেন প্রদীপ রাজপুত, ফার্স্ট অফিসার মারিয়া জুবেরি, অ্যাসিস্ট্যান্ট মেনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার সুরভি এবং এয়ার টেকনিশিয়ান মণীশ পাণ্ডেকে নিয়ে জুহু বিমানবন্দর থেকে ওই দিনই উড়েছিল ১২ আসনের কিং এয়ার সি-৯০ বিমানটি। মুম্বই বিমানবন্দর থেকে তিন কিলোমিটার দূরেই ঘাটকোপারে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের উপর ভেঙে পড়ে সেটি। বিমানে থাকা প্রত্যেকেই মারা যান এই দুর্ঘটনায়। মৃত্যু হয় এক বাইক আরোহীরও। জখম হন আরও দু’জন। বিমানটি হু হু করে নেমে আসছিল জনবহুল এলাকায়। একটি স্কুলের উপরও ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু দুই পাইলটের তৎপরতায় অনেকগুলো প্রাণ বেঁচে যায়।

এক হাজার ঘণ্টা ওড়ার অভিজ্ঞতা ছিল মারিয়ার। গত ১৭ বছর ধরে এই পেশার সঙ্গেই জড়িত বছর বিয়াল্লিশের মারিয়া। পেশায় আইনজীবী প্রভাত বলেন, “মারিয়া খুব ভাল পাইলট ছিলেন। মারিয়াই তাঁর পরিবারের মধ্যে প্রথম যিনি এই পেশাক বেছে নিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, ডাসল্ট ফ্যালকন বিমান ওড়ানোরও অভিজ্ঞতা ছিল তাঁর।”

আরও পড়ুন: হাসপাতালে গোপন খরচে ভারত আগুয়ান!

বিমানটি এর আগেও দুর্ঘটনার মুখে পড়েছিল। প্রভাতের অভিযোগ, এ সব জানা সত্ত্বেও ওড়ার আগে কেন দেখে নেওয়া হয়নি বিমানটিতে কোনও যান্ত্রিক গোলযোগ ছিল কিনা? এই ঘটনার জন্য তিনি বিমান সংস্থাকেই দায়ী করেছেন। পাশাপাশি তিনি এ-ও দাবি করেন, দুর্ঘটনার পর বিমানের মালিক বা সংস্থার পক্ষ থেকে কোনও যোগাযোগই করা হয়নি তাঁদের সঙ্গে। প্রভাত ও মারিয়ার বছর পনেরোর একটি মেয়ে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন