সুর চড়িয়ে কুলকার্নিকে কাসভের সঙ্গে তুলনা, প্রধানমন্ত্রী এখনও চুপ!

কদমের পর কদম বাড়়িয়ে যাচ্ছে সেনা। আর সবের পরেও কি নরেন্দ্র মোদী, কি অমিত শাহ দু’জনেই মুখে কুলুপ এঁটেই থাকছেন। ফলে বিজেপি-সেনার গোটা ম্যাচটাই যে গড়াপেটা হয়েছে বিরোধীদের এই অভিযোগটা এ বার জনমানসেও দাগ কাটতে শুরু করেছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০১৫ ১২:০৯
Share:

কদমের পর কদম বাড়়িয়ে যাচ্ছে সেনা। আর সবের পরেও কি নরেন্দ্র মোদী, কি অমিত শাহ দু’জনেই মুখে কুলুপ এঁটেই থাকছেন। ফলে বিজেপি-সেনার গোটা ম্যাচটাই যে গড়াপেটা হয়েছে বিরোধীদের এই অভিযোগটা এ বার জনমানসেও দাগ কাটতে শুরু করেছে।

Advertisement

সুধীন্দ্র কুলকার্নির মুখে কালি মাখানোর পর ২৪ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। ওই ঘটনার পর সোমবার শিবসেনা জানিয়েছিল, পাক সন্ত্রাসবাদের হামলা ভুলে কুলকার্নির মতো ‘পাক-এজেন্ট’-এর মুখে কালি লেপে গণতান্ত্রিক ও অহিংসার পথই নেওয়া হয়েছে! মঙ্গলবার আরও এক ধাপ এগিয়ে তারা জানিয়েছে, কুলকার্নির মতো মানুষ এ দেশে থাকলে পাকিস্তানকে আর কষ্ট করে আজমল কাসভদের পাঠাতে হবে না। কারণ একা কুলকার্নিই নাকি একশো কাসভের কাজ করে দিতে পারেন! সেনার এই মন্তব্যের পর কুলকার্নি বলেছেন, ‘‘হ্যাঁ নিশ্চিত ভাবেই আমি এজেন্ট। তবে পাকিস্তানের নই। আমি দক্ষিণ এশিয়াতে ভারত-পাকিস্তানের শান্তির এজেন্ট।’’ তবে, এত কিছু ঘটে যাওয়ার পরও বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব এখনও এ বিষয়ে মুখের কুলুপ খোলেননি। প্রশ্ন উঠেছে মোদী-অমিতের এই মৌনতা ভাঙবে কবে?

গত কয়েক সপ্তাহে গোটা দেশ জুড়ে মেরুকরণের রাজনীতির একাধিক ঘটনা ঘটেছে। গোমাংস খাওয়ার গুজব ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দাদরিতে এক প্রৌঢ়কে খুন হতে হয়েছে। প্রায় একই কারণে মার খেতে হয়েছে জম্মু-কাশ্মীরে বিরোধী দলের এক বিধায়ককে। আর সব কিছুর পরও নীরব ছিলেন মোদী-অমিত শাহের মতো শীর্ষ নেতৃত্ব। পরে মোদী বিহারে ভোটের প্রচারে এসে সরাসরি মন্তব্য না করে রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের ওই বিষয়ে একটি বক্তব্যকে সমর্থন করে দু’এক কথা বলেছিলেন। দাদরি-কাণ্ডে প্রতিবাদ জানিয়ে একের পর এক সাহিত্যিক সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন। অথচ সরকার সে বিষয়েও কোনও মন্তব্য করেনি এখনও। বরং সাহিত্য অকাদেমির সভাপতি বিশ্বনাথপ্রসাদ তিওয়ারি সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানোর অন্য পন্থা খুঁজতে লেখকদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু, শীর্ষ নেতৃত্ব নীরব।

Advertisement

সোমবার প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী খুরশিদ মাহমুদ কাসুরির একটি বই প্রকাশ অনুষ্ঠান ছিল মুম্বইয়ে। ওই অনুষ্ঠানের অন্যতম উদ্যোক্তা ছিলেন লালকৃষ্ণ আডবাণীর ঘনিষ্ঠ সুধীন্দ্র কুলকার্নি। কিন্তু, সেনার নিষেধ না শুনে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় তাঁর মুখে কালি মাখিয়ে দেয় তারা। এর পর আডবাণী-সহ বেশ কয়েক জন নেতা মুখ খুললেও চুপ ছিলেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। এমনকী, বিজেপি-র সর্ব ভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি। যদিও কাসুরির বই প্রকাশ পেয়েছিল সোমবার বিকেলেই।

সেনার এই হামলার ঘটনার সরাসরি নিন্দা না করলেও, এতে যে রাজ্যের নাম খারাপ হচ্ছে সে কথা বলেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। সেনার চাপে গুলাম আলির অনুষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর কাসুরির বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানকে ঘিরে কড়া নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু, তার পরেও কুলকার্নির বাড়ির সামনেই তাঁর মুখে কালি মাখায় সেনা সমর্থকেরা। এই ধরনের অনুষ্ঠানে যদি ভারত বিরোধী কথাবার্তা হয় এবং সেই কারণে এমন ঘটনা ঘটলে তার দায় আয়োজকদের বলে প্রাথমিক ভাবে দায় সেরেছিলেন ফডণবীস। কিন্তু, পরে তিনি জানান, এমন ঘটনায় রাজ্যের ভাবমূর্তি খারাপ হয়। এক জন বিদেশি কূটনীতিবিদ বৈধ ভিসা এবং অনুমতি নিয়েই এ দেশে অতিথি হিসেবে এসেছেন। তাঁর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করাটা রাজ্যের দায়িত্ব বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন