এ বার নেট-খবর নিয়ন্ত্রণে কমিটি গড়ল কেন্দ্র

সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীদের প্রতিবাদের মুখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘ভুয়ো খবর’ প্রচারে শাস্তির নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিতে হলেও পুরোপুরি হাল ছাড়তে নারাজ নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বার তার নিশানায় অনলাইন মিডিয়া ও নিউজ পোর্টালগুলি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৩৬
Share:

সংবাদমাধ্যম ও বিরোধীদের প্রতিবাদের মুখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ‘ভুয়ো খবর’ প্রচারে শাস্তির নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিতে হলেও পুরোপুরি হাল ছাড়তে নারাজ নরেন্দ্র মোদী সরকার। এ বার তার নিশানায় অনলাইন মিডিয়া ও নিউজ পোর্টালগুলি। তাদের উপরে নজরদারি করার জন্য একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গড়েছে কেন্দ্র।

Advertisement

আরও নানা ভাবে সংবাদমাধ্যমের উপরে চাপ বাড়াচ্ছে বিজেপি সরকার। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভকে এ ভাবে সরকারি নিয়ন্ত্রণের শিকলে বেঁধে ফেলার চেষ্টায় সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা যেমন সরব হয়েছেন, তেমনই মুখ খুলেছেন বিরোধীরা। সংবাদমাধ্যমের অভিযোগ, সমালোচনামূলক ও সরকার-বিরোধী খবর প্রকাশ রুখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে শাসক শিবির। অনলাইন মিডিয়া ও নিউজ পোর্টালগুলিতে ইদানীং বিজেপি এবং মোদী-বিরোধী প্রচুর খবর বেরোচ্ছে। তাই তাদের চাপে রাখতে কমিটি গড়ছে কেন্দ্র। এই কমিটির কাজ হবে অনলাইন মিডিয়া ও নিউজ পোর্টালগুলির জন্য আইনের খসড়া তৈরি করা। সরকারের বক্তব্য, অনলাইন মিডিয়ার অপব্যবহার রুখতেই ওই পদক্ষেপ। বিরোধীদের পাল্টা বক্তব্য, সামনেই লোকসভা নির্বাচন। পরিস্থিতি শাসক দলের অনুকূলে নেই বুঝতে পেরে সংবাদমাধ্যমে যে কোনও মূল্যে বাঁধতে চাইছেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহেরা।

পাশাপাশি, সরকারের দমননীতির প্রতিবাদ করায় বেশ কিছু দিন ধরে জম্মু-কাশ্মীরের প্রায় সব কাগজে বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র। প্রতিবাদ জানাতে সে রাজ্যের সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা সম্প্রতি কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী স্মৃতি ইরানির সঙ্গে দেখা করেন। কিন্তু তিনি স্পষ্ট জানান, এর পিছনে তাঁর কোনও হাত নেই। ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক থেকে। এ নিয়ে রাজনাথের কাছে দরবার করার পরিকল্পনা নিয়েছে প্রতিনিধি দলটি।

Advertisement

দিল্লিতে খবরের কাগজে টেন্ডারের বিজ্ঞাপন দেওয়া বন্ধ করে ই-টেন্ডার ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পেট্রলিয়াম মন্ত্রক। অন্য মন্ত্রকগুলিও এই পথে হাঁটার কথা ভাবছে। তাতে আতঙ্কিত সরকারি বিজ্ঞাপনের উপরে নির্ভরশীল ছোট ও মাঝারি বহু কাগজ। তাদের বক্তব্য, এ ভাবে ভাতে মারার ব্যবস্থা করে তাদের ‘পথে’ আনতে চায় সরকার। সরকারি পথে না চললে বিজ্ঞাপন মিলবে না। ফলে কাগজ তুলে দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। সাংবাদিকদের সরকারি স্বীকৃতিপত্র দেওয়ার জন্য তৈরি অ্যাক্রেডিটেশন কমিটির সদস্যরা (সম্পাদক শ্রেণির) ট্রেনে যাতায়াতে যে বিশেষ ছাড় পেতেন, তা অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। আবার প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (পিসিআই)-র সদস্য হিসেবে ইন্ডিয়ান নিউজ পেপার সোসাইটি (আইএনএস)-র সুপারিশ করা নাম নিয়ে মামলা গড়িয়েছে আদালতে। পিসিআই-র সদস্য হিসাবে এইচ এন কামার নাম সুপারিশ করেছিল আইএনএস। পিসিআই তা খারিজ করে দেয়। পিসিআইয়ের সিদ্ধান্তে স্থগিতাদেশ দেয় দিল্লি হাইকোর্ট। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে সরকারের এহেন সংঘাত নিয়ে কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালার মন্তব্য, ‘‘সরকারের সমালোচনা যাতে কোথায় না বেরোয়, তাই এত কাঠখড় পোড়ানো।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন