বিজয়ী ভাষণে মীরা কুমারকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি রামনাথ কোবিন্দ। নয়াদিল্লিতে পিটিআইয়ের তোলা ছবি।
দুঁদে উকিল, রাজনীতিক, দলিত নেতা, সাংসদ— তাঁর নামের সঙ্গে জুড়ে ছিল অনেক পরিচয়। এবং তিনি আর ক’দিন পর দেশের প্রথম নাগরিক। বছর একাত্তরের এই পোড়খাওয়া ব্যক্তিও আজ রীতিমতো আবেগে ভেসে গেলেন। বৃহস্পতিবার দেশের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর নিজেকে যেন আর বশে রাখতে পারলেন না রামনাথ কোবিন্দ। বললেন, “এটা আমার কাছে অত্যন্ত আবেগময় মুহূর্ত।”
এনডিএ-র রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে তাঁর মনোনয়নের পর থেকে কোবিন্দের দিকেই জয়ের পাল্লা ঝুঁকে ছিল। এ দিন হলও তা-ই। রাইসিনা হিলসে যাওয়ার পথে কোবিন্দ দখল করলেন ২,৯৩০টি ভোট। যার ভোটমূল্য ৭,০২,০৪৪। এ দিন রিটার্নিং অফিসার অনুপ মিশ্র জানিয়েছেন, কোবিন্দের প্রতিদ্বন্দ্বী মীরা কুমার পেয়েছেন ১,৮৪৪টি ভোট। তার ভোটমূল্য ৩,৬৭,৩১৪।
আরও পড়ুন
দেশের ১৪তম রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, জয় বিশাল ব্যবধানে
১৯৯৭-সালে কে আর নারায়ণনের পর দেশের দ্বিতীয় দলিত রাষ্ট্রপতি হিসেবে শপথ নেবেন আগামী ২৫ জুলাই। তার লড়াইও ছিল আরও এক দলিত মীরা কুমারের বিরুদ্ধে। ১০ নম্বর আকবর রোড থেকে বিজয়ী ভাষণে নিজের প্রতিদ্বন্দ্বীকে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি কোবিন্দ। সেই সঙ্গে স্মরণ করলেন রাজনীতির আঙিনায় তাঁর পূর্বসূরিদেরও। বললেন- এস রাধাকৃষ্ণণ, এপিজে আব্দুল কালাম এবং প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্টদের পদচিহ্ন অনুসরণ করাটাও তাঁর কাছে সম্মানের বিষয়।
…
উত্তর প্রদেশের গ্রামের অতি সাধারণ এক দলিত পরিবারে বেড়ে ওঠা থেকে দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ— কোবিন্দের যাত্রাপথ সত্যিই সমীহ আদায় করে নেয়। নিজের লড়াইয়ের কথা মনে করেই যেন তিনি বলেন, “সবার প্রতিনিধিত্ব করব। নিজের রুজিরোজগারের জন্য যাঁরা প্রতি দিন লড়াই করছেন, আমি তাঁদের হয়েও প্রতিনিধিত্ব করব। আমার জয় আসলে ভারতীয় গণতন্ত্রেরই জয়।”
কোবিন্দের এই জয়ে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী-সহ অনেকেই। এ দিন প্রধানমন্ত্রীর টুইট, “কুড়ি বছর আগে আর এই সময়... আপনার সঙ্গে পরিচয়টা সম্মানের প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট।” সাংসদ থেকে বিভিন্ন রাজ্যের বিধায়কদেরও কোবিন্দকে ভোটদানের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ এই জয়কে ‘ঐতিহাসিক’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। কোবিন্দকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন পরাজিত প্রার্থী মীরা কুমারও। তবে সেই সঙ্গে তিনি বলেন, “এই কঠিন পরিস্থিতিতে সংবিধানের যথাযথ মর্যাদা রক্ষা করাটা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের।” পাশাপাশি তিনি জানান, নিজের আদর্শের জন্য তাঁর লড়াই চলতেই থাকবে।