COVID-19 Death

করোনার এক বছরে মৃত্যু বেশি চল্লিশোর্ধ্বদের

করোনা আক্রান্তদের অনেকেই প্রথমে সুস্থ হয়ে গেলেও, পরে মারা যাচ্ছেন—এই তথ্য সামনে আসার পরে আইসিএমআর-কে গবেষণার নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৩ ০৭:৪৯
Share:

—প্রতীকী ছবি।

কোভিড থেকে সেরে উঠলেও তার এক বছরের মধ্যে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁরা বেশির ভাগ ৪০-৬০ বছর বয়সি এবং ষাটোর্ধ্ব বলে জানাল স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সম্প্রতি ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর) তাদের গবেষণায় জানিয়েছে, করোনা আক্রান্ত হওয়ার এক বছরের মধ্যে যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের অধিকাংশই ‘ক্রনিক কোমর্বিডিটি’ বা আনুষঙ্গিক রোগে দীর্ঘদিন ভুগছিলেন। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মৃতদের বড় অংশই করোনার সময়ে গুরুতর অসুস্থ হয়েছিলেন।

Advertisement

করোনা আক্রান্তদের অনেকেই প্রথমে সুস্থ হয়ে গেলেও, পরে মারা যাচ্ছেন—এই তথ্য সামনে আসার পরে আইসিএমআর-কে গবেষণার নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। দেশের ৩১টি হাসপাতালে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্তসংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে করা গবেষণা-রিপোর্টটি প্রকাশিত হয় ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিক্যাল সায়েন্স’-এ। করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ও পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে আসেন এমন ১৪,৪১৯ জন রোগীর সঙ্গে কথা বলেন গবেষকেরা। দেখা গিয়েছে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার চার সপ্তাহ থেকে এক বছরের মধ্যে ৯৪২ জন (গবেষণায় শামিলদের মধ্যে ৬.৫%) মারা গিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৪০-৫৯ বছর বয়সি ৩৩১ জন, আর ষাটোর্ধ্ব ৪৭৩ জন। এঁদের ৭৩ শতাংশের মধ্যে অন্তত একটি আনুষঙ্গিক রোগ ছিল।

গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মহিলাদের থেকে পুরুষদের মৃত্যুহার প্রায় দ্বিগুণ। যাঁরা মারা গিয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ৬১৬ জন পুরুষ। বাকিরা মহিলা। তবে যাঁরা করোনা সংক্রমিত হওয়ার আগে টিকার অন্তত একটি ডোজ় নিয়েছিলেন, তাঁদের মৃত্যুর আশঙ্কা ৬০ শতাংশ কমে গিয়েছে।

Advertisement

গবেষকদের মতে, যাঁরা ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, ব্লাড সুগারের রোগী বা দীর্ঘ কাল কিডনি বা লিভারজনিত সমস্যায় ভুগছেন, এমন কোভিড আক্রান্তদের মৃত্যুহার অনেকটাই বেশি। সুস্থ হয়ে উঠলেও, করোনাভাইরাস তাঁদের শরীরে যে পরিমাণে ক্ষতি করে, তাতে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা মুশকিল হয়ে পড়ে। কোভিড কালেও এঁদের উপর ওই রোগের প্রকোপ অনেকটাই বেশি ছিল। যা ওই ব্যক্তিদের দেহে প্রদাহ ঘটায় এবং এক বা একাধিক অঙ্গ খারাপ করে দেয়। যা পরবর্তীকালে মৃত্যু ডেকে আনে।

তবে সমীক্ষায় কিছু খামতি স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে রিপোর্টে। জানানো হয়েছে, যাঁদের নিয়ে সমীক্ষা হয়েছে, তাঁদের সঙ্গে মূলত ফোনে কথা হয়েছে এবং উপসর্গ বোঝার ক্ষেত্রে আক্রান্তদের বয়ানের উপর ভরসা করতে হয়েছে। এতে প্রকৃত তথ্য পেতে অনেক সময়েই সমস্যা হয়েছে গবেষকদের। যাঁরা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, শুধু তাঁদের সঙ্গেই কথা বলে রিপোর্টটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। কিন্তু যে গুরুতর আক্রান্তেরা বাড়িতেই সুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ হয়নি গবেষকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন