India-Russia Relationship

আমেরিকা আমাদের কাছ থেকে জ্বালানি কিনতে পারলে ভারত কেন তা পারবে না? ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে প্রশ্ন পুতিনের

রাশিয়া থেকে তেল কেনার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখার জন্য অধিকাংশ ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) শুল্কও আরোপ করেছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৩
Share:

(বাঁ দিক থেকে) নরেন্দ্র মোদী, ভ্লাদিমির পুতিন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দু’দিনের সফরে বৃহস্পতিবার ভারতে এসেছেন তিনি। তার আগে মস্কোয় ‘ইন্ডিয়া টুডে’-কে একটি সাক্ষাৎকার দেন পুতিন। সেখানেই তিনি বলেছেন, “যদি আমেরিকা আমাদের কাছ থেকে জ্বালানি কিনতে পারে, তা হলে ভারত এই অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে কেন?”

Advertisement

প্রসঙ্গত, রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে পুতিনের দেশ থেকে তেল কেনার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রাশিয়া থেকে তেল কেনা অব্যাহত রাখার জন্য অধিকাংশ ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ (মোট ৫০ শতাংশ) শুল্কও আরোপ করেছেন তিনি। তার পরেও অবশ্য রাশিয়া থেকে ইউরেনিয়াম আমদানি অব্যাহত রেখেছে আমেরিকা। এই ইউরেনিয়াম আমেরিকার পরমাণুকেন্দ্রগুলিতে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহৃত হয়। রাশিয়া যত পরিমাণ ইউরেনিয়াম রফতানি করে, তার ২৫ শতাংশই যায় আমেরিকায়।

বিষয়টি উল্লেখ করে পুতিন বলেন, “আমেরিকা তাদের পরমাণুকেন্দ্রগুলির জন্য আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনা অব্যাহত রেখেছে। সেটা হল ইউরেনিয়াম, যেটা আমেরিকার পরমাণুকেন্দ্রগুলিকে সচল রাখতে ব্যবহৃত হয়।” রাশিয়া থেকে আমেরিকার জ্বালানি কেনার অধিকার থাকলে, ভারতের কেন থাকবে না, সেই প্রশ্ন তোলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত বলেও জানান তিনি। পুতিনের কথায়, “বিষয়টি নিবিড় ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। আমরা বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা এবং বিতর্কের জন্য প্রস্তুত রয়েছি।”

Advertisement

তবে সরাসরি ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরোধিতা করেননি পুতিন। রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, “উনি (ট্রাম্প) নিজের সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করেছেন। ওঁর বিভিন্ন পরামর্শদাতা রয়েছেন। সেই পরামর্শদাতারা বিশ্বাস করেন, বাণিজ্যিক সঙ্গীদের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করলে আমেরিকার অর্থনীতি লাভবান হবে। সেই বিশ্বাস থেকেই ট্রাম্প এই নীতি প্রয়োগ করেছেন বলে আমার ধারণা।” একই সঙ্গে পুতিন জানান, রাশিয়া ভবিষ্যতেও কখনও এই পথ (দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য রয়েছে, এমন দেশের উপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ) অবলম্বন করবে না। তাঁর কথায়, “আমাদের বিশেষজ্ঞেরা মনে করেন, এতে ঝুঁকি রয়েছে। তবে কোন দেশ কোন অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণ করবে, সেটা সেই দেশ এবং তাদের নেতৃত্বের ব্যাপার। আমরা এই ধরনের কিছু করব না। ভবিষ্যতেও এমনটা করার অভিপ্রায় নেই।”

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দিল্লির পালমে ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে পুতিনের বিমান। তার পর একই গাড়িতে সওয়ার হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং পুতিন। ৩০ ঘণ্টার ভারত সফরে এসে রাতে প্রধানমন্ত্রীর ৭ লোককল্যাণ মার্গের বাসভবনে পুতিন তাঁর সম্মানে আয়োজিত নৈশভোজে যোগ দেন। শুক্রবার সকালে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সৌজন্যসাক্ষাৎ এবং রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর দিনভর নানা কর্মসূচি রয়েছে পুতিনের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement