বারাক ওবামার সাকিন, তাই হোয়াইট হাউস হয়ে যায় নিগার হাউস। গোধরা কাণ্ডে অভিযুক্ত হওয়ায়, দেশের কুখ্যাত দশ অপরাধীর তালিকায় নাম উঠে আসে খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। সৌজন্যে বিশ্বের এক নম্বর সার্চ ইঞ্জিন গুগ্ল। এ বার সেই তালিকায় নাম তুলল জেএনইউ। দেশদ্রোহী, দেশবিরোধী শব্দগুলি গুগ্ল সার্চ ইঞ্জিনে লিখলে ফুটে উঠেছে জেএনইউয়ের নাম। গুগ্ল ম্যাপে ফুটে উঠছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা। বিষয়টি সামনে আসতেই জেএনইউ কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় গুগ্লের সঙ্গে। সূত্রের খবর, ওই তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার পক্ষ থেকে দ্রুত ওই সমস্যা সমাধান করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
গত ৯ ফেব্রুয়ারি সংসদে হামলাকারী আফজল গুরুর সমর্থনে অনুষ্ঠান করার পর থেকেই বির্তকে জড়িয়ে পড়ে জেএনইউ। ওই ঘটনায় যুক্ত থাকার অপরাধে দেশদ্রোহী অভিযোগে গ্রেফতার হন ছাত্রনেতা কানহাইয়া কুমার, তাঁর সতীর্থ উমর খালিদ ও অনির্বাণ ভট্টাচার্য। বর্তমানে যাঁরা জামিনে মুক্ত। তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে দেশদ্রোহী বিতর্কের সঙ্গে জেএনইউ কথাটি ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে। গুগ্লের কোনও কিছুকে খোঁজার জন্য একটি নিজস্ব অ্যালগোরিদম রয়েছে। সেই অ্যালগোরিদম অনুযায়ী এই মুহূর্তে ভারতে দেশদ্রোহী ও জেএনইউ শব্দ দু’টি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। আর তাই সম্ভবত অ্যান্টিন্যাশনাল বা সিডিশন শব্দটি গুগ্লে লেখা হলেই সার্চ ইঞ্জিনটি জেএনইউ সম্পর্কিত খবর বা গুগ্ল ম্যাপে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা দিচ্ছে।
আরও পড়ুন- ভারতের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনল পাকিস্তান!
বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এ ভাবে দেশদ্রোহী তকমা জুড়ে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ জেএনইউয়ের ছাত্র সংগঠন। আফজল গুরু পর্বের পর থেকেই বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবার জেএনইউকে দেশবিরোধীদের আখড়া হিসাবে প্রমাণ করতে সক্রিয় রয়েছে। তারই মধ্যে গুগ্লের এ হেন পদক্ষেপে বিড়ম্বনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ থেকে ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ছাত্র সংগঠনের সহ-সভাপতি শীলা রশিদ ভোরার কথায়, ‘‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে এ বিষয়ে গুগ্লকে একটি চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একে কিছু রাজনৈতিক দল আমাদের দেশবিরোধী প্রমাণে তৎপর রয়েছে, তারই মধ্যে গুগ্লের এই কাণ্ড যেন তাদের দাবিকে শংসাপত্র দিল। অবিলম্বে এই ভুল শোধরানো হোক এটাই আমাদের দাবি।’’ ছাত্র সংগঠনের মতে, এতে কেবল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তির ক্ষতি হচ্ছে তা-ই নয়, এর ফলে দেশের যে কোনও প্রতিষ্ঠানকে (এমনকী, সরকারি) ভবিষ্যতে দেশবিরোধী হিসাবে চিহ্নিত করতে পারে ওই সার্চ ইঞ্জিন। ভবিষ্যতে তাই গুগ্লের কাছে আরও সতর্কতা আশা করছেন সব পক্ষই।