—প্রতীকী চিত্র।
শহরতলি এবং গ্রামগঞ্জে ক্রমেই বেড়ে চলেছে যানজটের সমস্যা। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত রাস্তায় গাড়ির চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। কলকাতা সংলগ্ন জেলাগুলির পাশাপাশি দূরবর্তী জেলা শহরগুলিতেও একই ছবি ধরা পড়ায় উদ্বিগ্ন রাজ্য সরকার। পরিস্থিতির প্রকৃত কারণ চিহ্নিত করে স্থায়ী সমাধানের রাস্তা খুঁজতেই বেসরকারি সমীক্ষা সংস্থাকে দায়িত্ব দিয়েছে নবান্ন।
নবান্ন সূত্রে খবর, গত কয়েক মাস ধরেই পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের আধিকারিকদের নজরে এসেছে যে, কলকাতা লাগোয়া হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন শহরে সকাল ৮টা থেকেই যানজট শুরু হয়ে যাচ্ছে। ওই সময় স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের যাতায়াত শুরু হয়, তার পরেই অফিস টাইম। ফলে সকাল থেকেই রাস্তায় গাড়ির চাপ বাড়ছে। এই যানজট কাটতে কাটতেই বেলা প্রায় গড়িয়ে যায়। আবার বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ফের যান চলাচল অত্যন্ত ধীর গতিতে চলে। অতিরিক্ত ট্রাফিক পুলিশ নামিয়েও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আধিকারিকেরা।
এই সমস্যা নবান্নে জানানো হলে, বিস্তারিত সমীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া শহরের পাশাপাশি কলকাতার কাছের শহর সোনারপুর ও বারুইপুরে যানজটের সমস্যা সবচেয়ে বেশি বেড়েছে। একই সঙ্গে বারাসত, ব্যারাকপুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতেও প্রতি দিন যানজট বাড়ছে বলে মত প্রশাসনের। শহরতলি এলাকায় যানজট বৃদ্ধির পিছনে একাধিক কারণ চিহ্নিত করেছেন প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ। দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির শহরাঞ্চলে জনবসতির ঘনত্ব উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। ছোট বাজারের জায়গায় গড়ে উঠেছে বড় শপিং মল। পাশাপাশি, পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বেসরকারি স্কুলের সংখ্যা। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অ্যাপ বাইক, অ্যাপভিত্তিক খাবার ডেলিভারি পরিষেবা এবং অটো ও টোটোর মতো বিকল্প পরিবহণ। বাস, ট্যাক্সি ও লরির সঙ্গে এই সমস্ত যান যুক্ত হওয়ায় মোট যানবাহনের সংখ্যা আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়েছে। ফলে স্কুল ও অফিস টাইমে জেলা শহরের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, সমীক্ষার মাধ্যমে কোন কোন রাস্তায় সবচেয়ে বেশি যানজট হচ্ছে, কোন সময়ে এবং কত ক্ষণ এই সমস্যা থাকছে, তার বিস্তারিত ডেটাবেস তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে রোড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কোনও ত্রুটি রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবে সমীক্ষক সংস্থা। কোথায় রাস্তা চওড়া করা যায় বা বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব, সে বিষয়ে সুপারিশ করবে তারা। রিপোর্ট জমা পড়ার পর তার ভিত্তিতেই রাজ্য সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ করবে বলে নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে।