ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভূমিকা কী হবে, ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি (এনপিপিএ)-র ডানা ছাঁটা হবে কি না, এ সব নিয়ে জল্পনা চলছে বেশ কয়েক মাস। এরই মধ্যে কেন্দ্রীয় বাজেটে সংশোধনী আনার কথা ঘোষণা হওয়ায় অনেকেই কিছুটা আশার আলো দেখছেন।
সেটা কেমন? সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বুধবার জানিয়েছেন, জীবনদায়ী ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামের দামকে নাগালের মধ্যে আনতে ওই আইনের সংশোধন হবে। সংশোধনীতে এমন কিছু শর্ত থাকবে, যার জেরে ওষুধ সংস্থাগুলো ন্যায্য দামে ওষুধের সরবরাহ বজায় রাখবে। পাশাপাশি, চিকিৎসা সরঞ্জামে বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও তৈরি হবে কিছু নতুন নিয়ম। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা মনে করছেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্র প্রশস্ত হলে বহু সংস্থার আগ্রহ বাড়বে। তাতে প্রতিযোগিতার বাজার খুলে যেতে পারে। প্রতিযোগিতা বাড়লে তার প্রভাব প়ড়বে দামেও। যার সুফলটা আখেরে ভোগ করবেন সাধারণ মানুষ।
যদিও ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রণের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত কেউ কেউ আবার মনে করছেন, এখনই এ নিয়ে বেশি আশান্বিত হওয়ার কারণ নেই। তাঁদের মতে, সংশোধনী ঠিক কোন কোন দিকে আসতে চলেছে, ওষুধ সংস্থাগুলোর ব্যাপারে সরকারের নীতি ঠিক কী, তা স্পষ্ট হওয়া জরুরি। প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই সার ও রসায়ন মন্ত্রী অনন্ত কুমার জানিয়েছিলেন, ওষুধের দাম বেশি কমালে সংস্থাগুলো বিনিয়োগে আগ্রহ হারাবে। সেটা সরকারের কাম্য নয়। সেই মতের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর এ দিনের ঘোষণার কিছুটা বিরোধ রয়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে।
রাজ্য ড্রাগ কন্ট্রোলের অধিকর্তা চিন্তামণি ঘোষ বলেন, ‘‘ড্রাগ ও কসমেটিকস রুলস-এর সংশোধনী আনার কথা চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। এ ব্যপারে একটা কমিটিও তৈরি হয়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে দাম কমার কোনও যোগ থাকার কথা নয়।’’ এ বারের বাজেটে পৃথক ভাবে স্বাস্থ্য খাতে ঢালাও বরাদ্দ হয়নি। তবে বিশেষ যে কয়েকটি ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ওষুধের দামের পাশাপাশি রয়েছে মাতৃমৃত্যু হার কমানো। ২০১১-১৩ সালে যেখানে ওই মৃত্যুহার ছিল এক লাখে ১৬৭। ২০১৮-২০তে সেটা ১০০-তে নামিয়ে আনাই সরকারের লক্ষ্য বলে দাবি করা হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক সূত্রে খবর, এ জন্য ইতিমধ্যেই দেশ জুড়ে একটি নয়া প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যে প্রকল্পের অধীনে প্রাতিষ্ঠানিক প্রসব এবং শিশুর টিকাকরণ করানো মহিলারদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাবে ছ’হাজার টাকা।
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকারের লক্ষ্য চলতি বছরের মধ্যেই ভারতকে কালাজ্বর ও ফাইলেরিয়া-মুক্ত করা এবং ২০১৮-র মধ্যে কুষ্ঠ ও ২০২০-র মধ্যে যক্ষ্মামুক্ত করা। তার ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ও ঘোষণা হয় এ দিন।