দেদার ট্রেন বাড়ানোয় দেরির জটে ভুগছে রেল

শাকের আঁটি নয়। বোঝার উপরে আস্ত পাহাড়! সাধ্য নেই। কিন্তু সাধ ষোলো আনা! আর তাতেই বিপত্তি।

Advertisement

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৭ ০৩:৫৬
Share:

শাকের আঁটি নয়। বোঝার উপরে আস্ত পাহাড়! সাধ্য নেই। কিন্তু সাধ ষোলো আনা! আর তাতেই বিপত্তি।

Advertisement

উত্তর-মধ্য রেলের মোগলসরাই থেকে ইলাহাবাদ পর্যন্ত রেললাইন যদি ১০০টি ট্রেন চালানোর ক্ষমতা ধরে, তার ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে দেড়শো ট্রেন! ফল যা হওয়ার, তা-ই হচ্ছে। নিত্যদিন ট্রেনের জট পাকিয়ে যাচ্ছে। রেল বোর্ড, উত্তর-মধ্য রেল জোনের কর্তারা হাত গুটিয়ে বসে থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ বাড়ছে।

তিন-চার বছর ধরে এই অবস্থা চলছে উত্তর-মধ্য রেল জোনে। রবিবারেও দিল্লি থেকে চলাচলকারী বেশির ভাগ ট্রেনই চলেছে তিন-চার ঘণ্টা দেরিতে। শীতের মরসুমে দেরির জন্য কুয়াশাকে খলনায়ক বানিয়ে দায় এড়ানো এবং প্রচার চালানো হচ্ছিল পুরোদমে। কিন্তু এখন ট্রেনের দেরি কেন, তা নিয়ে রেলকর্তারা টুঁ শব্দটিও করছেন না। বোর্ড থেকে জোন, সকলেই বলছেন, ‘‘জেনে বলব।’’

Advertisement

রেল সূত্রের খবর, মোগলসরাই থেকে ইলাহাবাদ পর্যন্ত ১৫২ কিলোমিটার দূরত্ব। পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত, পূর্ব উপকূল, উত্তর-মধ্য— রেলের এই পাঁচটি জোনের বিশেষত দিল্লিমুখী ট্রেনগুলি এই লাইন দিয়েই যাতায়াত করে। তা ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন জোনের কয়েকশো মালগাড়ি। সব মিলিয়েই রোজ রোজ ট্রেন-জট। নিত্যদিনই ট্রেনগুলি চলছে চার-পাঁচ ঘণ্টা দেরিতে। কোনও কোনও দিন আবার ছ’সাত ঘণ্টাও পেরিয়ে যাচ্ছে।

যাত্রীদের এই যন্ত্রণা থেকে পরিত্রাণ দিতে মোগলসরাই থেকে ইলাহাবাদ পর্যন্ত ওই শাখায় আরও একটি লাইন পাতার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। বছর তিনেকে আগে ৫৪ কোটি টাকার সেই প্রকল্প পাশ হয়। কাজও শুরু হয়েছে। কিন্তু রেলকর্তাদের গা-ছাড়া মনোভাবে কাজ এগোচ্ছে শম্বুক গতিতে। রেল বোর্ড ইতিমধ্যে ওই শাখা দিয়েই মালগাড়ির জন্য ‘ডেডিকেটেড ফ্রেট করিডর’ যাওয়ার কথা ঘোষণা করায় প্রস্তাবিত লাইনের কাজ আরও গতি হারিয়েছে। রেলকর্তাদের কেউ কেউ বলছেন, ‘‘মালগাড়ির লাইন আলাদা তৈরি হলে চাপ এমনিতেই কমে যাবে। সেই জন্য বোধ হয় আর খরচ বাড়াতে চাইছে না রেল বোর্ড।’’

কিন্তু চারটি রাজধানী এবং অন্য প্রায় ২৫০টি মেল ও এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীদের নিত্যদুর্দশার কী হবে?

রেলকর্তারা নিরুত্তর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন