বিরোধী দলগুলি পাকিস্তানের সুরে কথা বলছে: মোদী

পটনার গাঁধী ময়দানে এনডিএ-র সভায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানকে পাশে নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করেন মোদী।

Advertisement

দিবাকর রায়

পটনা শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৯ ০৩:২৬
Share:

পটনার গাঁধী ময়দানে এনডিএ-র সভায় বিরোধীদের আক্রমণ করেন মোদী।

বিহারে ভোটের প্রচারে এসে নরেন্দ্র মোদী আজ ফের অভিযোগ তুললেন, বিরোধী দলগুলি পাকিস্তানের সুরে কথা বলছে। পটনার গাঁধী ময়দানে এনডিএ-র সভায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ও কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ানকে পাশে নিয়ে বিরোধীদের আক্রমণ করেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘পাকিস্তানের সুরে কথা বলছেন বিরোধীরা। তাতে সেনাবাহিনীর মনোবল ভাঙছে।’’ পুলওয়ামা হামলা, ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযান থেকে শুরু করে অভিনন্দন বর্তমানকে ভারতে ফিরিয়ে আনা নিয়ে কথা বলেন মোদী। বিজেপি আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই বিষয়টিকে ভোট প্রচারে হাতিয়ার করবে তা বোঝাই যাচ্ছিল। পটনায় ‘সঙ্কল্প যাত্রা’ র‌্যালিতে সেই সুর আরও চড়ালেন প্রধানমন্ত্রী মোদী।

Advertisement

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের মাটিতে ঢুকে অভিযান চালিয়েছিল বায়ুসেনা। বিভিন্ন সূত্রে দাবি করা হয়, ওই অভিযানে বহু জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। অন্তত ৩০০ জন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু তার প্রমাণ কই? ওই অভিযান নিয়ে এমনই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল, আম আদমি পার্টি ও কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। তাদের অভিযোগ, বিজেপি সরকার এই বিষয়টি তুলে প্রবল জাতীয়তাবাদের হাওয়ায় ভোটে জিততে চাইছে। মোদী এ দিন জাতীয়তাবাদের অস্ত্রেই জবাব দিলেন বিরোধীদের।

‘সঙ্কল্প যাত্রায়’ কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির নেতাদের উদ্দেশে মোদী বলেন, ‘‘ওঁরা সার্জিকাল স্ট্রাইকের প্রমাণ চেয়েছিলেন। আর এখন বায়ুসেনার অভিযানেরও প্রমাণ চাইছেন। কংগ্রেস ও তার সহযোগী দলগুলির নেতাদের কাছে আমি জানতে চাই, কেন তাঁরা সেনার মনোবলে ফাটল ধরাচ্ছেন। কেন কংগ্রেস এমন বিবৃতি দিচ্ছে, যাতে ভারত বিরোধী শক্তির হাতই আরও শক্ত হচ্ছে। পাকিস্তানের মাটিতে ঘাঁটি গেড়ে থাকা সন্ত্রাস দূর করতে যখন আমাদের সকলের একজোট হওয়া দরকার। তখনই ২১টি দল আমাদের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলতে এক জোট হয়েছে।’’ বিরোধীদের বক্তব্য ‘পাকিস্তানে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা পাচ্ছে’ বলেও বিঁধেছেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘ওঁরা চাইছেন মোদীকে শেষ করতে। আর আমি চাইছি সন্ত্রাসবাদ ধ্বংস করতে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: অভিনন্দনের শরীরে যন্ত্র ঢোকায়নি পাকিস্তান, মেরুদণ্ড-পাঁজরে চোট, জানালেন চিকিৎসকরা

আগামী লোকসভা ভোটে বিহারে এ বার দ্বিমুখী লড়াই হচ্ছে। এনডিএ জোটে বিজেপির সঙ্গে রয়েছে নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং রামবিলাস পাসোয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি। অন্য দিকে, ইউপিএ জোটে রয়েছে লালুপ্রসাদের আরজেডি, কংগ্রেস, উপেন্দ্র কুশওয়াহার রাষ্ট্রীয় লোক সমতা পার্টি, জিতনরাম মাঁঝির হম, মুকেশ সহানির ভিআইপি পার্টি।

এ দিনের ‘সঙ্কল্প যাত্রা’ র‌্যালিতে বিহারে এনডিএ-র তিন দলের নেতারাই ছিলেন। প্রায় ১২ লক্ষ লোক হয়েছে বলে দাবি করেছেন এনডিএ নেতারা। কিন্তু বিরোধীদের দাবি, মোদী-নীতীশের জনসভায় তেমন লোক হয়নি। গাঁধী ময়দানের সভায় রেকর্ড ভিড় করার পরিকল্পনা করলেও রাজনৈতিক মহলের মতে লালুপ্রসাদের ৯০ দশকের ‘লাঠি র‌্যালিকে’ ছাড়াতে পারেনি এ দিনের এনডিএ-র ‘সঙ্কল্প যাত্রা’। তার প্রেক্ষিতে সঙ্কল্প যাত্রার ভিড় নিয়ে পাল্টা লালুপ্রসাদের টুইটার হ্যান্ডেলের খোঁচা, ‘‘পান খাওয়ার জন্য আমি গাড়ি থামালেও তো এই রকম ভিড় জমে যেত।’’ ভিড়ের দিক দিয়ে রাহুল গাঁধীর গত ৩ ফেব্রুয়ারির সভাকে অবশ্য ছাপিয়ে গিয়েছে প্রধানমন্ত্রী-মুখ্যমন্ত্রীর এই সভা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন