India-China Clash

সেনা পিছোতে ফের বৈঠকে দিল্লি ও বেজিং

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৫:৩৫
Share:

লাদাখে ভারতীয় সেনাবাহিনীক রসদ নিয়ে যাচ্ছ হেলিকপ্টার চিনুক। ছবি: পিটিআই।

পূর্ব লাদাখে অসহনীয় ঠান্ডার মধ্যেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) সংলগ্ন ভূখণ্ডে আজ মাসের পর মাস দাঁড়িয়ে ভারতীয় এবং চিনা সেনা। কিন্তু কোন সূত্র মেনে সেনা পিছোলে, দু’পক্ষই ‘আগের স্বাভাবিক অবস্থানে’ ফিরে যেতে পারবে, তা এখনও অধরা। সেই জট খুলতে প্রায় আড়াই মাস পরে ভারত এবং চিনের সামরিক কমান্ডার স্তরের নবম বৈঠক বসল চুশুল সেক্টরের মলডোতে। গভীর রাতের খবর, আজ আলোচনা চলেছে ১১ ঘণ্টা। কিন্তু তার পরেও নির্দিষ্ট কোনও সমাধান সূত্র বেরোনোর কথা দাবি করেনি দু’পক্ষই।

Advertisement

প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, রবিবারের এই বৈঠকে বেজিংয়ের দাবি, প্যাংগং লেকের দক্ষিণ প্রান্তের গিরিশৃঙ্গগুলি থেকে আগে পিছু হটতে হবে ভারতীয় সেনাকে। এপ্রিলের আগের ‘স্থিতাবস্থায়’ ফিরতে এই বিষয়টিকে পূর্ব শর্ত হিসেবে সামনে রাখছে বেজিং। অন্য দিকে, দিল্লি চিনা সেনার (পিএলএ) উপরে চাপ দিচ্ছে ওই একই লেকের উত্তর দিক থেকে দু’তরফের জওয়ানদের একই সঙ্গে পিছু হটানোর জন্য।

ঘরোয়া ভাবে আলোচনার সময়ে দিল্লির অভিযোগ, ওই এলাকায় এলএসি পরবর্তী ‘বাফার জ়োন’ অতিক্রম করে ভারতীয় ভূখণ্ডে গেড়ে বসেছে চিনা সেনা। এ-ও মানছে যে, ওই আগ্রাসী পদক্ষেপের পাল্টা হিসেবে প্যাংগংয়ের দক্ষিণে ৭টি গিরিশৃঙ্গের দখল নিয়েছে ভারতও। যেখানে আগে দুই দেশের কারও দখলদারি ছিল না। সূত্রের খবর, বৈঠকে অরুণাচলপ্রদেশে চিনা সেনার আগ্রাসী আচরণের প্রসঙ্গও তুলেছে ভারত। উত্তর সুবনসিরি জেলায় সীমান্ত লঙ্ঘন করে ভারতীয় এলাকায় ঢুকে সেখানে চিনা ফৌজের আস্ত একটি গ্রাম তৈরি করে ফেলার সংবাদে সম্প্রতি চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে সাউথ ব্লকে। এ বিষয়ে উদ্বেগের কথা তাই জানানো হয়েছে চিনা সেনাকে।

Advertisement

৬ নভেম্বর অষ্টম দফার আলোচনাতেও সেনা সরানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। ফিঙ্গার-৮ এলাকায় সেনা সরানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বেজিং। সেনা প্রত্যাহারে সহমত পোষণ করেছিল দিল্লিও। এই বিষয়ে ১৮ ডিসেম্বর কূটনৈতিক আলোচনাও হয়েছিল। জট কাটেনি। নবম দফার আলোচনায় রফার খোঁজ মেলে কি না, এখন নজর সে দিকে।

সেই মে থেকে তেতে দু’দেশের সীমান্ত। কিন্তু, সমাধান অধরা। কূটনৈতিক স্তরে আলাপ-আলোচনার মধ্যেই ১৫ জুন গালওয়ানে সংঘর্ষে প্রাণ হারান ২০ জন ভারতীয় জওয়ান। তাতে চিনেরও ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছিল কেন্দ্র। কিন্তু সে ব্যাপারে তথ্য দেয়নি শি চিনফিং সরকার।

বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব সম্প্রতি বলেছেন, ‘‘সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে চিনের সঙ্গে আলোচনা চলবে। কোনও তৃতীয় ব্যক্তি হস্তক্ষেপ করবেন না।’’ তবে এরই মধ্যে কাল চিনকে কড়া বার্তা দিয়েছেন বায়ুসেনা প্রধান আর কে এস বাদোরিয়া। বলেছেন, ‘‘যদি সীমান্তে চিন আগ্রাসী মনোভাব দেখায়, তবে ভারতও তার যোগ্য জবাব দিতে জানে।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘ভারত-চিন সীমান্তে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি, যেখানে বিমানহানার প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু বায়ুসেনা তৈরি।’’ দখলদারির স্বভাব থাকলেও, ভারতীয় সেনা ও বায়ুসেনার কড়া নজরদারিতেই তারা এগোতে সাহস পায়নি বলে বাদোরিয়ার দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন