শুক্রবার উত্তরাখণ্ডের মানায় তুষারধস নামে। রবিবার সকালেও সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে সেনা। ছবি: পিটিআই।
কোথায় আটকে আছেন ‘নিখোঁজ’ চার শ্রমিক? তাঁদের খোঁজ পেতেই এ বার উন্নত প্রযুক্তির সাহায্য নিতে চলেছে উদ্ধারকারী দল। উত্তরাখণ্ডের মানা গ্রামে তুষারধসের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টা কেটে গিয়েছে। ৫০ জন শ্রমিককে এখনও পর্যন্ত উদ্ধার করা সম্ভব হলেও বাকি চার জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। উদ্ধারকারী দল সূত্রে খবর, আবহাওয়া অনুকূল থাকলে ঘটনাস্থলে উন্নতমানের ড্রোন উড়িয়ে শ্রমিকদের খোঁজ চালানো হবে। এ ছাড়াও ‘কোয়াডকপ্টার’ এবং মনুষ্যবিহীন আকাশযানও (ইউএভি) ব্যবহার করা হতে পারে।
শুক্রবার উত্তরাখণ্ডের চামোলী জেলায় বদরীনাথের অদূরে মানা গ্রামে তুষারধস নামে। ওই গ্রামেরই বর্ডার রোড অর্গানাইজ়েশন বা বিআরও-র অন্তত ৫৫ জন শ্রমিক আটকে পড়েন। ঘটনার পর পরই উদ্ধারকাজ শুরু হয়। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী তো বটেই, ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশও (আইটিবিপি)। ভারতীয় সেনাও হাত লাগায় উদ্ধারকাজে। তবে শুক্রবার আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় পদে পদে উদ্ধারকাজ থমকে যায়। দৃশ্যমানতা কম থাকায় নামানো যায়নি সেনা হেলিকপ্টারও। তবে শনিবার সকাল থেকে আবহাওয়ার সামান্য উন্নতি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হেলিকপ্টার নামিয়ে আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধার করার কাজ চলছে। শুধু হেলিকপ্টার নয়, উদ্ধারকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে ‘ভিকটিম লোকেটিং ক্যামেরা’ (ভিএলসি), থার্মাল ইমেজিং ক্যামেরা, উদ্ধারকারী কুকুরের দলকে। মোট ছ’টি হেলিকপ্টারকে উদ্ধারকাজে লাগানো হয়েছে।
শনিবার দিনভর উদ্ধারকাজ চলে। ভারতীয় সেনা সূত্রে জানানো হয়, এখনও পর্যন্ত ৫০ জনকে তুষারধসের কবল থেকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। তবে তাঁদের মধ্যে চার জনের মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থলেই তিন জন প্রাণ হারান। এক জনের মৃত্যু হয় জোশীমঠে সেনা হাসপাতালে। প্রাথমিক ভাবে শনিবার জানানো হয়েছিল, তুষারধসের কারণে এখনও পাঁচ জন শ্রমিককে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে পরে জানা যায় সুশীল কুমার নামে হিমাচলপ্রদেশের এক বাসিন্দা নিজেই প্রাণ বাঁচিয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। রবিবার সকাল থেকে নিখোঁজ পাঁচ জন শ্রমিকের খোঁজ চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল।
তুষারধসের ফলে বদরীনাথ-জোশীমঠ হাইওয়ের অন্তত ২০টি জায়গায় অবরুদ্ধ হয়ে রয়েছে। ফলে সড়কপথে উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারছেন না। তাই আকাশপথেই উদ্ধারের সব রকম চেষ্টা চলছে।