Galwan Valley

আটক সেনাদের মুক্তির পরেই ফের শুরু হতে চলেছে আলোচনা

সেনাস্তরের আলোচনার পরে বৃহস্পতিবার বিকেলে ১০ ভারতীয় সেনাকে মুক্তি দেয় চিন। এর পরে শুক্রবার ফের শুরু হচ্ছে দু’পক্ষের বৈঠক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি ও লন্ডন শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২০ ১৬:২৯
Share:

লাদাখে ভারতীয় সেনার টহলদারি। —ফাইল চিত্র।

চিনা হেফাজতে থাকা ১০ ভারতীয় সেনার মুক্তির পরে ফের শুরু হতে চলেছে ভারত-চিন সেনাস্তরের বৈঠক। সংবাদসংস্থা পিটিআই এবং কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের খবর, ১৫ জুন রাতে গলওয়ান উপত্যকার সংঘর্ষের সময়ই চার অফিসার-সহ ১০ সেনাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল চিনা ফৌজ। গত তিন দিন ধরে মেজর জেনারেল স্তরের ধারাবাহিক আলোচনার পরে বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার ফের দু’পক্ষের মেজর জেনারেল স্তরের বৈঠক হতে চলেছে।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একটি সূত্র জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবারের সেনাস্তরের বৈঠকে লেহতে মোতায়েন ৪ নম্বর কোরের অন্তর্গত ৩ নম্বর ইনফ্র্যান্ট্রি ডিভিশনের কম্যান্ডিং অফিসার মেজর জেনারেল অভিজিৎ বাপত অংশ নিয়েছিলেন। অন্যদিকে, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির তরফে হাজির ছিলেন, সাউথ জিনজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের এক সম পর্যায়ের অফিসার। ওই বৈঠকেই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় শান্তি ফেরানোর পদক্ষেপ হিসেবে আটক ভারতীয় সেনাদের মুক্তি দিতে সম্মত হয় চিন।

Advertisement

আরও পড়ুন: ব্রেকিং: পাঠানো হল যুদ্ধবিমান, চূড়ান্ত সতর্কবার্তা বায়ুসেনাকে

মঙ্গলবার কয়েকটি বিদেশি সংবাদমাধ্যমে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল, গলওয়ানের পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-তে সোমবার রাতের সংঘর্ষের সময়ই কয়েকজন ভারতীয় সেনাকে বন্দি করেছে হামলাকারী চিনা বাহিনী। কিন্তু বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বৃহস্পতিবার বিকেলে সাংবাদিক বৈঠকে বলেছিলেন, ‘‘কোনও ভারতীয় সেনা নিখোঁজ নেই।’’ রাতে সেনার একটি বিবৃতিতেও একই দাবি করা হয়।

সোমবার রাতে চিনা বাহিনীর হামলায় জখম ৭৬ জন ভারতীয় সেনার মধ্যে ১৮ জনের আঘাত গুরুতর বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। যদিও সেনার তরফে জানানো হয়েছে, কারও অবস্থা আশঙ্কাজনক নয়, ১৫ দিনের মধ্যেই সকলে কাজে যোগ দিতে পারবেন।

Advertisement

আরও পড়ুন: সীমান্তে শুরু ‘এয়ার ডমিন্যান্স’? সকাল থেকে লাদাখে উড়ছে অ্যাপাশে-চিনুক

লেহ্ থেকে দারবুক হয়ে দৌলত বেগ ওল্ডি বায়ুসেনা ঘাঁটি পর্যন্ত বিস্তৃত রাস্তা বেজিংয়ের মাথাব্যথার কারণ। এর মধ্যে পেট্রোলিং পয়েন্ট-১৪-র দু’কিলোমিটার পূর্বে গলওয়ান নদীর উপরের ৬০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি নিয়ে সেনা স্তরের বৈঠকেও চিন আপত্তি তুলেছে বলে খবর। সামরিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই ধারণা, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) অদূরের ওই সেতু নির্মাণে ক্রুদ্ধ হয়েই পিপলস লিবারেশন আর্মির ‘ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড’ গলওয়ান উপত্যকা-সহ পূর্ব লাদাখের বিভিন্ন এলাকায় অনুপ্রবেশের ছক কষেছিল। যদিও ভারতীয় সেনার এক আধিকারিক এদিন জানিয়েছেন, ‘আর্মি ইঞ্জিনিয়ার কোর’ ইতিমধ্যেই সেখানে একটি ‘বেইলি ব্রিজ’ নির্মাণ করে ফেলেছে।

গলওয়ানের পাশাপাশি, প্যাংগং লেকের উত্তরাংশে ফিঙ্গার এরিয়া-৮ থেকে ফিঙ্গার এরিয়া-৪ পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ভারতীয় ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশকারী চিনা ফৌজের সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে বলে এদিন প্রকাশিত একটি সংবাদে দাবি। এই পরিস্থিতিতে শান্তি ফেরাতে কূটনৈতিক ও সেনা পর্যায়ের আলোচনার পাশাপাশি কেন্দ্র ‘বিকল্প’ রাস্তাও খোলা রাখতে চাইছে বলে রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সবর্দল বৈঠকের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐকমত্যের চেষ্টা কিংবা দৌলত বেগ ওল্ডি ঘাঁটি ঘিরে ভারতীয় বায়ুসেনার এদিনের তৎপরতা তারই ইঙ্গিতবাহী বলে মনে করা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন