Advertisement
১৯ মার্চ ২০২৪
Galwan Valley

সীমান্তে শুরু ‘এয়ার ডমিন্যান্স’? সকাল থেকে লাদাখে উড়ছে অ্যাপাশে-চিনুক

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উড়তে দেখা গিয়েছে চিনুক কার্গো হেলিকপ্টার, অ্যাপাশে অ্যাটাক হেলিকপ্টার, পি-৮ সার্ভেইলেন্স এয়ারক্র্যাফ্ট, এবং আইএল-৭৬ স্ট্র্যাটেজিক এয়ারলিফ্টার-ও (কার্গো বিমান)।

শুক্রবার সকাল থেকে লাদাখের আকাশে এমনই একাধিক হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গিয়েছে। ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি

শুক্রবার সকাল থেকে লাদাখের আকাশে এমনই একাধিক হেলিকপ্টার উড়তে দেখা গিয়েছে। ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুন ২০২০ ১৫:৪৫
Share: Save:

সীমান্তে শুরু হল ‘এয়ার ডমিন্যান্স’ প্রক্রিয়া। লাদাখে লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল (এলএসি বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা) বরাবর উড়তে শুরু করল ভারতীয় বাহিনীর অ্যাটাক হেলিকপ্টার এবং নজরদার বিমান। আর সেই কৌশলগত আড়াল ব্যবহার করে লেহ্‌ বিমানবন্দর থেকে দৌলত বেগ ওল্ডির বিমানঘাঁটির দিকে রওনা দিল অন্যান্য কার্গো হেলিকপ্টার ও সামরিক বিমান। তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয়ের ভিত্তিতে সীমান্তে তৎপরতা বাড়ানোর নির্দেশ কয়েক দিন আগেই দিয়েছিলেন চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ (সিডিএস) জেনারেল বিপিন রাওয়ত। সেই নির্দেশের প্রেক্ষিতেই শুক্রবার সকাল থেকে সীমান্তের আকাশে এই ছবি দেখা যেতে শুরু করেছে বলে বাহিনী সূত্রে জানা যাচ্ছে।

পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন সেনা সংঘর্ষের পর থেকেই ওই এলাকায় আরও বেশি বাহিনী, সরঞ্জাম ও রসদ পাঠাতে শুরু করেছিল ভারতীয় সেনা। সেই প্রক্রিয়া এখনও জারি রয়েছে। তার সঙ্গে শুক্রবার সকাল থেকে আকাশপথেও বাড়ল তৎপরতা। ভারতীয় সেনা সূত্রে খবর, এ দিন সকালে ওই এলাকায় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর উড়তে দেখা গিয়েছে চিনুক কার্গো হেলিকপ্টার। তার সঙ্গে ছিল অ্যাপাশে অ্যাটাক হেলিকপ্টার। এ ছাড়া পি-৮ সার্ভেইলেন্স এয়ারক্র্যাফ্ট (নজরদার বিমান) এবং আইএল-৭৬ স্ট্র্যাটেজিক এয়ারলিফ্টার-ও (কার্গো বিমান) উড়তে দেখা গিয়েছে লাদাখের আকাশে।

বড়সড় বাহিনী এবং অনেকটা রসদ একসঙ্গে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে মার্কিন হেলিকপ্টার চিনুক ব্যবহৃত হয়। রুশ সামরিক বিমান আইএল-৭৬-ও সেই একই কাজে ব্যবহৃত হয়। স্ট্র্যাটেজিক এয়ারলিফ্টার হওয়ার সুবাদে চিনুকের চেয়েও অনেক বেশি বাহিনী ও সরঞ্জাম এই সামরিক বিমান বহন করতে পারে। লেহ্‌ থেকে দৌলত বেগ ওল্ডির দিকে এই সব সামরিক কপ্টার ও বিমানের পর পর উড়ে যাওয়া বুঝিয়ে দিয়েছে, সীমান্তে খুব দ্রুত প্রস্তুতি বাড়াতে চাইছে দিল্লি।

আরও পড়ুন: পাঠানো হল যুদ্ধবিমান, চূড়ান্ত সতর্কবার্তা বায়ুসেনাকে

সোমবার রাতে গলওয়ান উপত্যকায় যে ঘটনা ঘটেছে, তার পর থেকে সড়কপথে বাহিনী ও রসদ বাড়ানোর প্রক্রিয়া গত কয়েক দিন ধরেই চলছিল। কিন্তু তাতে সময় কিছুটা বেশি লাগে। সামরিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সেই কারণেই এ বার ওই কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে আকাশপথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞ তথা ভারতীয় সেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্তা কর্নেল সৌমিত্র রায়ের ব্যাখ্যা, ‘‘পি-৮ নজরদার বিমান এবং অ্যাপাশে অ্যাটাক হেলিকপ্টার সীমান্ত বরাবর ওড়ানোর উদ্দেশ্য দুটো। প্রথমত, সীমান্তে এয়ার ডমিন্যান্স শুরু করল ভারত। অর্থাৎ প্রতিপক্ষের দিক থেকে কোনও আগ্রাসনের চেষ্টা হলেই আকাশ থেকে তার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে। দ্বিতীয়ত, রসদ ও বাহিনী নিয়ে যে সব কপ্টার ও বিমান সীমান্তবর্তী বিমানঘাঁটির দিকে যাচ্ছে, সেগুলোকে কভার বা সুরক্ষা দেওয়া হবে।’’

আরও পড়ুন: ৪ অফিসার-সহ আটক ১০ ভারতীয় সেনাকে মুক্তি দিল চিন

স্থানীয় সূত্রের খবর, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ট্যাকটিকাল এয়ারলিফ্টার বিমান সি-১৩০জে সুপার হারকিউলিসকেও শুক্রবার সকালে দেখা গিয়েছে লাদাখের আকাশে। দৌলত বেগ ওল্ডির বিমানঘাঁটিতে নেমেই আবার তা উড়ে চলে গিয়েছে। তবে বাহিনী সূত্রে সে বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সুপার হারকিউলিসের এই উড়ানের অর্থ হল এক ধরনের এক্সারসাইজ বা যুদ্ধাভ্যাস। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে আরও দ্রুত বাহিনী ও রসদ বাড়ানোর কাজ করতে হবে। সেই প্রক্রিয়াই ঝালিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Galwan Valley Indian Air Force Helicopter
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE