India China Border Trade

বেজিংয়ের সঙ্গে ফের সীমান্ত বাণিজ্য শুরু করতে উদ্যোগী নয়াদিল্লি! আলোচনাও চলছে মোদী এবং জিনপিং সরকারের

আগামী ১৮ অগস্ট ভারত সফরে আসার কথা রয়েছে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র। নয়াদিল্লিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। সেখানে দু’দেশের সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ অগস্ট ২০২৫ ১৯:২৯
Share:

(বাঁ দিকে) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

চিনের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্য পুনরায় শুরু করতে উদ্যোগী হয়েছে ভারত। বেজিংয়ের সঙ্গে এই বিষয়ে কথাবার্তাও চলছে নয়াদিল্লির। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল। করোনা অতিমারীর আবহে ২০২০ সালে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল সীমান্ত বাণিজ্য। তার পর পরই লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার কাছে ভারত-চিন সংঘর্ষ হয়। সেই থেকে দু’দেশের সীমান্ত বাণিজ্য বন্ধই রয়েছে। এ বার তা পুনরায় চালু করতে উদ্যোগী হল ভারত। ঘটনাচক্রে, আমেরিকার সঙ্গে কূটনৈতিক টানাপড়েনের আবহেই এই সিদ্ধান্তের কথা জানাল নয়াদিল্লি।

Advertisement

বৃহস্পতিবার জয়সওয়াল জানান, উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ পাস, হিমাচল প্রদেশের শিপকি লা এবং সিকিমের নাথু লা— এই তিনটি জায়গা দিয়ে পুনরায় সীমান্ত বাণিজ্য শুরু করার জন্য চিনের সঙ্গে যোগযোগ রাখছে ভারত। এ বিষয়ে কোনও অগ্রগতি হলে তা পরবর্তী সময়ে জানিয়ে দেওয়া হবে। সম্প্রতি, সংবাদমাধ্যম ‘ব্লুমবার্গ’-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, চিন এবং ভারত আবার সীমান্ত বাণিজ্য চালু করতে উদ্যোগী হয়েছে। এ বার ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকও জানিয়ে দিল, এ বিষয়ে কথাবার্তা চলছে বেজিংয়ের সঙ্গে। সীমান্ত বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা নিয়ে ইতিবাচক চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রশাসনও। বৃহস্পতিবার চিনা বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত বাণিজ্য উভয় দেশেরই সীমান্তবর্তী এলাকায় বসবাসকারী মানুষদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়ে ভারতের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যেতে তারা আগ্রহী।

ভারত-চিন সীমান্তের এই নির্দিষ্ট তিনটি এলাকা দিয়েই দেশীয় পণ্যের বাণিজ্য হয়ে থাকে। মশলা, কার্পেট, কাঠের জিনিসপত্র, গবাদি পশু, খাবার, মৃৎশিল্প, ভেষজ গাছ, বৈদ্যুতিক সামগ্রী, পশম-সহ বিভিন্ন পণ্যের বাণিজ্য হত এই পথে। প্রায় তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে দু’দেশের মধ্যে এই সীমান্ত বাণিজ্য চলে আসছে। তবে ২০২০ সাল থেকে তা বন্ধ হয়ে রয়েছে। সরকারি হিসাবে, ২০১৭-১৮ সালে প্রায় ৩১ লক্ষ ডলারের ব্যবসা হয়েছিল এই পথে।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, আগামী ১৮ অগস্ট ভারত সফরে আসার কথা রয়েছে চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-র। নয়াদিল্লিতে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তাঁর। সেখানে দু’দেশের সীমান্ত সংক্রান্ত বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চিনা বিদেশমন্ত্রীর ভারত সফরের ঠিক আগেই নয়াদিল্লি থেকে সীমান্ত বাণিজ্য নিয়ে আলোচনার কথা ঘোষণা করা হল।

বস্তুত, রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্কের কারণে নয়াদিল্লির উপর শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ঘটনাচক্রে, রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা দেশগুলির মধ্যে চিনও রয়েছে। এ অবস্থায় চিনের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্ক মসৃণ করার উদ্যোগ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের আবহে ভারত এবং চিনের শক্তির কথা বোঝাতে গিয়ে সাম্প্রতিক অতীতে বিভিন্ন সময়ে ‘হাতি’ এবং ‘ড্রাগন’-এর উপমা ব্যবহার করেছে তাঁর কথায়, ‘‘ড্রাগন এবং হাতির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাগন আর হাতিকে একসঙ্গে নাচিয়ে দিতে হবে। একে অপরের বিরুদ্ধে কথা না-বলে পরস্পরকে সাহায্য করতে হবে। তাতেই দুই দেশের ফয়দা। যদি এশিয়ার বৃহত্তম দুই অর্থনীতি একজোট হয়, সমগ্র বিশ্বের পক্ষেই তা লাভজনক।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement