ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রে প্রতিনিধিদল পাঠাচ্ছেন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে রেখেছে আমেরিকা। ফলে সে দেশে বিভিন্ন পণ্যের রফতানি ধাক্কা খেয়েছে। আমেরিকার বাজার প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দেশের ব্যবসায়ীরা সঙ্কটে। এর মাঝেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় এক দ্বীপরাষ্ট্রে চাল বিক্রি বৃদ্ধি করতে চাইছে নয়াদিল্লি। আগামী মাসেই ভারতের প্রতিনিধি দল যাচ্ছে ফিলিপিন্সে। চাল এবং কৃষিজাত অন্যান্য পণ্যের রফতানির বিষয়ে সে দেশের নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করবেন ভারতের প্রতিনিধিরা। রফতানি সংক্রান্ত চুক্তি পাকা করে ফেরার চেষ্টা করবেন।
ফিলিপিন্সে চালের চাহিদা প্রচুর। এই মুহূর্তে বিশ্বের বৃহত্তম চাল আমদানিকারক দেশ তারা। ভারত থেকে এর আগেও ফিলিপিন্সে চাল গিয়েছে। তবে এই রফতানিকে অন্য মাত্রায় নিয়ে যেতে চাইছে নয়াদিল্লি। সরকারি সূত্র উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই। সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকেই ভারত থেকে একটা বড় প্রতিনিধিদল ফিলিপিন্সে যেতে পারে।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৪ সালে ফিলিপিন্স দু’হাজার কোটি ডলার মূল্যের কৃষিজাত পণ্য আমদানি করেছে। তার মধ্যে অন্যতম প্রধান ছিল চাল, গম, পাম তেল এবং বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী। কিন্তু ওই বছর ভারত থেকে মাত্র ৪১.৩ কোটি ডলার মূল্যের কৃষিজাত পণ্য ফিলিপিন্সে গিয়েছে। যা তাদের মোট আমদানির দুই শতাংশ মাত্র। এই ঘাটতিই মেটাতে আগ্রহী নয়াদিল্লি। ভারত থেকে এমনিতে চাল ছাড়াও ফিলিপিন্সে রফতানি করা হয় গোমাংস, বাদাম এবং তামাকজাত দ্রব্য।
এক কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকের কথায়, ‘‘ফিলিপিন্স বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল আমদানিকারক দেশ। ভারত থেকে সেখানে চাল রফতানি বৃদ্ধি করার সুযোগ রয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রফতানিকার দেশ কিন্তু ভারতই। ২০২৪-২৫ সালে আমরা মোট ১.১ হাজার কোটি ডলারের চাল বিদেশে রফতানি করেছি। কিন্তু ফিলিপিন্সে বেশি চাল পাঠানো হয়নি।’’
উল্লেখ্য, ভারতের পণ্যে প্রথমে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপালেও পরে রাশিয়ার কাছ থেকে খনিজ তেল কেনার কারণে আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আমেরিকার সর্বোচ্চ শুল্কের তালিকায় এখন শুধু ব্রাজ়িল এবং ভারতের নাম। এই পরিস্থিতিতে আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য যথেষ্ট ধাক্কা খেয়েছে। ফলে বিকল্প বাজারের সন্ধান করছে নয়াদিল্লি। সে ক্ষেত্রে চালের বাজার হিসাবে ফিলিপিন্স অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে, মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ।