National news

বাবার মোবাইল থেকে যুদ্ধের গেম নিজেই মুছে দিল ছোট্ট মেয়ে

দু’দেশের মধ্যে এই অবিরাম সংঘর্ষ আঘাত হেনেছে ওদের শৈশবে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শ্রীনগর শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৯ ১৭:১৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

বাইরে তীব্র বিস্ফোরণের আওয়াজে কিছুতেই ক্লাসে মন দিতে পারছিল না আফসানা। দু’হাতের মাঝে মাথাটা গুঁজে বসেছিল সে। তার মতো আরও অনেকে। ওরা যুদ্ধ বোঝে না। ওরা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের টানাপড়েন নিয়েও মাথা ঘামায় না। কিন্তু দু’দেশের মধ্যে এই অবিরাম সংঘর্ষ আঘাত হেনেছে ওদের শৈশবে।

Advertisement

আফসানা কৌশরের বাড়ি সালোত্রীতে। নিয়ন্ত্রণরেখা কাছে। নিয়ন্ত্রণরেখার কাছেই একটি সরকারি স্কুলে পড়ে সে। পুলওয়ামা হামলার জবাবে ভারতের প্রত্যাঘাতের পর থেকেই আরও উত্তপ্ত ভারত-পাক সীমান্ত। দু’দেশের সেনাই অবিরাম বোমা বর্ষণ করে চলেছে একে অপরের উপরে। সেই বোমাতেই বিপর্যস্ত আফসানাদের শৈশব।

আফসানার উপরে সবচেয়ে বড় মানসিক আঘাতটা এসেছিল ওই রাতে। যখন পাক সেনার ছোড়া একটি মর্টার সেল আফসানার পাশের বাড়িতে এসে পড়ে। তখন রাতের খাওয়া শেষ করে সবে বাবা-মার সঙ্গে শোওয়ার তোড়জোড় করছিল আফসানা। বাড়ির খুব কাছেই বিস্ফোরণটা ঘটেছিল। ওদের বাড়িটাও কেঁপে উঠেছিল তখন। ছাদের অনেকটা অংশও হুড়মুড়িয়ে খসে পড়ে। পরে আফসানা জেনেছিল, তার তিন প্রতিবেশী মারা গিয়েছে। তার মধ্যে দু’জন শিশু।

Advertisement

আরও পড়ুন: ফের প্রকাশ্যে পাকিস্তানের দ্বিচারিতা, জঙ্গি শীর্ষনেতাই এ বার ইমরানের দলে

আরও পড়ুন: ভারতে সন্ত্রাসবাদ হামলা কবে, কোথায়

তখন থেকেই ঘরছাড়া সে। সন্তানকে প্রাণে বাঁচাতে ঘর ছেড়ে নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে কিছু দূরে সালোত্রীতে একটা স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন আফসানার বাবা-মা। সেখানে তার মতো আরও অনেক আফসানাও রয়েছে। ছেলেরা এবং মেয়েরা দুটো আলাদা ঘরে থাকেন সেখানে।

আরও পড়ুন: মৃত্যুর সব জল্পনা উড়িয়ে হুমকি অডিয়ো প্রকাশ মাসুদ আজহারের

দু’দেশের মধ্যে এই টানাপড়েন চরম আঘাত হেনেছে ওই এলাকার শিশুদের মানসিকতায়। সব সময়ই ভয়ে-আতঙ্কে থাকে তারা, জানান এক স্থানীয় স্কুল শিক্ষক ইরশাদ আহমেদ। ইরশাদের ছোট্ট মেয়ের মনের অবস্থাও আফসানার মতোই। যেমন ইরশাদের মোবাইল ফোনে একটা গেম ছিল। জেট বিমান নিয়ে গোলাগুলির খেলা সেটা। এতদিন বাবার ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা গেমটা খেলত তাঁর ৮ বছরের মেয়ে। কিন্তু এখন আর খেলার ছলেও যুদ্ধ ভাল লাগে না তার। সম্প্রতি বাবাকে ফোন থেকে পছন্দের সেই গেমটা মুছে দিতে বলেছে নিজেই। আতঙ্ক এতটাই যে ছোটখাটো শব্দেও ছিটকে উঠছে সে, জানান ইরশাদ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন