হাইওয়েতে যুদ্ধবিমান নামানোর তোড়জোড় শুরু ভারতের, কীসের ইঙ্গিত?

ভারত কি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে? বায়ুসেনার সাম্প্রতিক একটি পদক্ষেপ সে রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যুদ্ধের সময় যে ধরনের পরিকাঠামো ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের বিমানবাহিনী, ভারত হঠাৎই সেই হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপ তৈরির উপর জোর দিয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৬ ১১:৩৬
Share:

ভারত কি যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে? বায়ুসেনার সাম্প্রতিক একটি পদক্ষেপ সে রকমই ইঙ্গিত দিচ্ছে। যুদ্ধের সময় যে ধরনের পরিকাঠামো ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের বিমানবাহিনী, ভারত হঠাৎই সেই হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপ তৈরির উপর জোর দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে জাতীয় সড়কগুলিতে যুদ্ধবিমান নামানোর পাকাপোক্ত ব্যবস্থা তৈরি রাখছে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।

Advertisement

পরীক্ষামূলক ভাবে জাতীয় সড়ক বা হাইওয়েতে যুদ্ধবিমান নামানো হয়েছে ইতিমধ্যেই। উত্তরপ্রদেশের মথুরার কাছে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে থাকা অন্যতম সেরা যুদ্ধবিমান মিরাজ-২০০০ নামানো হয়েছে এক বছর আগেই। উড়ানের সময়ও যমুনা এক্সপ্রেসওয়েকে পুরোদস্তুর রানওয়ের মতো ব্যবহার করতে কোনও সমস্যা হয়নি মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের। তার পর থেকে দেশের বিভিন্ন অংশে সম্ভাব্য হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপের স্থান চিহ্নিত করার কাজ দ্রুত শুরু করেছে বায়ুসেনা।

ভারতীয় বায়ুসেনার পাঁচটি অপারেশনাল কম্যান্ড রয়েছে। প্রতিটি কম্যান্ডই তাদের এলাকায় হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপের জন্য জায়গা চিহ্নিত করে ফেলেছে। বায়ুসেনার এক শীর্ষ কর্তাকে উদ্ধৃত করে প্রতিরক্ষা বিষয়ক সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি জানিয়েছে এ কথা। ঠিক কোন কোন হাইওয়েতে যুদ্ধবিমান অবতরণের জন্য রানওয়ে তৈরির কথা ভাবা হয়েছে, তা জানানো হয়নি। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, রাজস্থান, পঞ্জাব, জম্মু-কাশ্মীর, উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, অসম, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপের জন্য জায়গা চিহ্নিত হয়েছে।

Advertisement

আরও পড়ুন:

অধিকৃত কাশ্মীর থেকে অবিলম্বে বেরিয়ে যাক চিন, কড়া বার্তা ভারতের

বায়ুসেনার পাঁচটি অপারেশনাল কম্যান্ডের এলাকাতেই একাধিক হাইওয়েতে এয়ারস্ট্রিপ বা রানওয়ে তৈরি করার সিদ্ধান্ত খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা। সাধারণত যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবেই এই ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে থাকে সশস্ত্র বাহিনী। বায়ুসেনার হাতে পর্যাপ্ত সংখ্যায় বিমানঘাঁটি থাকা সত্ত্বেও দ্রুত হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপ তৈরির উপর জোর দেওয়া নিঃসন্দেহে ইঙ্গিতবহ। মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। ভারত কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতির কথা আঁচ করেই যে এই ব্যবস্থা তৈরি করছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই কোনও মহলেরই।

হাইওয়ের যে অংশকে এয়ারস্ট্রিপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেই অংশকে একটু বিশেষ ভাবে তৈরি করতে হয়। সেই অংশে অ্যাসফল্টের আস্তরণ অন্যান্য অংশের চেয়ে পুরু হয়। তলায় কংক্রিটের ভিত থাকে। যে কোনও সময় যাতে ওই সব রানওয়েতে যুদ্ধবিমান অবতরণ করানো যায়, তার জন্য সিগন্যালিং এবং এয়ার ট্র্যাফিত কন্ট্রোলের পরিকাঠামোও তৈরি রাখা হয়। দেশের যে অংশে বিমানঘাঁটি নেই, যুদ্ধের সময় সেই সব এলাকা থেকেও যাতে বায়ুসেনা কাজ চালাতে পারে, তার জন্যই এই ব্যবস্থা। এ বছর বায়ুসেনার জন্য রানওয়ে তৈরি ও মেরামতির খাতে সরকার ১৩৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। তার বিরাট অংশ হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপ তৈরির কাজে খরচ হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

পাকিস্তান তো বটেই, জার্মানি, পোল্যান্ড, সুইৎজারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, সুইডেন, উত্তর কোরিয়া, তাইওয়ান-সহ বিভিন্ন দেশ এই হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপ ব্যবহার করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন