বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে যে দলকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেই দলের কার্যালয় খুলেছে ভারতের দুই শহর দিল্লি এবং কলকাতায়। এ নিয়ে বুধবার একটি বিবৃতি জারি করেছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। অভিযোগ, ভারতের ভূখণ্ড থেকে শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। এতে দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কও প্রভাবিত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকার বিবৃতিতে। পাল্টা একটি বিবৃতি জারি করে এর জবাব দিয়েছে নয়াদিল্লি। জানানো হয়েছে, ঢাকার বিবৃতি ‘ভুল জায়গায় পাঠানো হয়েছে’ (মিস্প্লেস্ড)।
কেন্দ্রীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল নয়াদিল্লির বিবৃতিটি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। তাতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারতে আওয়ামী লীগের সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত কোনও বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপ সম্পর্কে ভারত সরকার অবহিত নয়। ভারতের আইনের সঙ্গে সঙ্গতিবিহীন কিছুও করা হচ্ছে না। ভারতের মাটি থেকে অন্য কোনও রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক কার্যকলাপ ভারত সরকার অনুমোদন করে না। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে বিবৃতি দিয়েছে, তা ভুল জায়গায় পাঠানো হয়েছে।’’ বাংলাদেশে স্বচ্ছ নির্বাচনের আশা ব্যক্ত করে বিবৃতিতে এর পর বলা হয়েছে, ‘‘বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব স্বাধীন, স্বচ্ছ নির্বাচন আয়োজনের আশা পুনর্ব্যক্ত করছে ভারত সরকার। আশা করছি, দেশটিতে জনগণের রায় প্রতিষ্ঠিত হবে।’’
উল্লেখ্য, গত বছর ৫ অগস্ট গণ-আন্দোলনের চাপে পড়ে পদত্যাগ করেছিলেন বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার পর তিনি ভারতে চলে আসেন। সেই থেকে ভারতেই আছেন। ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার হাসিনার প্রত্যর্পণ চেয়ে নয়াদিল্লিকে চিঠি দিয়েছে। কিন্তু তার উত্তর যায়নি। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, ওই দলের অনেক নেতা ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং এখান থেকে কাজ করছেন। হাসিনা চলে আসার পর থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে একাধিক বার ভারত বিবৃতি দিয়েছে। আবার তার প্রতিবাদ জানিয়ে পাল্টা বিবৃতি এসেছে ঢাকা থেকেও। এই পরিস্থিতিতে ভারতে আওয়ামী লীগের কার্যকলাপ নিয়ে আবার বাংলাদেশ আপত্তি তুলল।
কী বলেছিল ঢাকা?
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রকের বিবৃতি অনুযায়ী, ভারতের রাজধানী দিল্লি ও কলকাতায় নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের কার্যালয় স্থাপনের বিষয়টি বাংলাদেশ সরকারের নজরে এসেছে। ভারতের ভূখণ্ড থেকে আওয়ামী লীগের নেতাদের বাংলাদেশবিরোধী কার্যকলাপ যখন ক্রমবর্ধমান, তার প্রেক্ষিতে এই ঘটনা। 'মানবতার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত' এই দলের অনেক সিনিয়র নেতা এখন ভারতে। গত ২১ জুলাই দিল্লি প্রেসক্লাবে তাঁরা একটি সভার পরিকল্পনা করেছিলেন। পুস্তক বিতরণও করেছিলেন। এটা বাংলাদেশের জনগণের অবমাননা। এতে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে প্রভাব পড়তে পারে বলে দাবি করা হয়েছে ঢাকার বিবৃতিতে। তার জবাব দিয়েছে দিল্লি।