পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ। —ফাইল চিত্র।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফ রাষ্ট্রপুঞ্জের ভাষণে কাশ্মীর নিয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন, তার কড়া জবাব দিল ভারত। শনিবার কূটনীতিবিদ তথা রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের প্রতিনিধি পেটাল গহলৌত শরিফের কাশ্মীর-মন্তব্যকে ‘অদ্ভুত নাটক’ বলে উল্লেখ করেছেন। সেই সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ এবং পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর পাকিস্তানের অবস্থান নিয়েও খোঁচা দিয়েছেন। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি। এমনকি, মনে করিয়ে দিয়েছেন ওসামা বিন লাদেনের কথাও।
রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় এর আগে ভাষণ দিয়েছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। সেখানে কাশ্মীর প্রসঙ্গে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন তিনি। দাবি করেছিলেন, কাশ্মীরের মানুষের উপর ভারত অত্যাচার চালায়। পাকিস্তানের এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার ‘জবাব দেওয়ার অধিকার’ প্রয়োগ করে ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভারতের প্রতিনিধি বলেন, ‘‘সকালে এই সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কিছু অদ্ভুত নাটক করেছেন। আরও এক বার তিনি সন্ত্রাসবাদকে মহান করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন, যা দেশটির বিদেশনীতির অন্যতম অঙ্গ। তবে কোনও নাটক বা কোনও মিথ্যাভাষণ সত্যকে ঢেকে রাখতে পারবে না।’’ পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ টেনে সে সময়ে পাকিস্তানের অবস্থান মনে করিয়ে দিয়েছেন নয়াদিল্লির প্রতিনিধি। বলেছেন, ‘‘এটাই সেই পাকিস্তান, যারা পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর গত ২৫ এপ্রিল রাষ্ট্রপুঞ্জে ‘রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামের পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীকে আড়াল করতে চেয়েছিল। এই দেশের সন্ত্রাসবাদকে মদত দেওয়ার ইতিহাস অনেক পুরনো। ওদের কোনও লজ্জা নেই। বছরের পর বছর ধরে এই দেশেই আশ্রয় দেওয়া হয়েছিল ওসামা বিন লাদেনকে, সে কথা ভুলে গেলে চলবে না।’’
কী বলেছিলেন পাক প্রধানমন্ত্রী?
এর আগে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভাষণের সময় শাহবাজ় কাশ্মীরের প্রসঙ্গ টেনে বলেছিলেন, ‘‘কাশ্মীরের জনগণকে আমি এই বলে আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমরা তাঁদের পাশে আছি। পাকিস্তান তাঁদের পাশে আছে। কাশ্মীরে ভারতের অত্যাচার এক দিন বন্ধ হবেই।’’ এখানেই শেষ নয়। এর পর সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি নিয়েও ভারতকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করেন পাক প্রধানমন্ত্রী। দাবি করেন, ওই চুক্তি স্থগিত করে ভারত আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে। শনিবার তাঁর সেই সমস্ত মন্তব্যেরই জবাব দিয়েছে ভারত।
রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার ৮০তম সম্মেলন চলছে আমেরিকার নিউ ইয়র্ক শহরে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের রাষ্ট্রনেতারা সেখানে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছেন। একই সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক স্তরে বিভিন্ন দেশের মধ্যে আলোচনাও চলছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের এই সভায় ভারতের ভাষণের সময় শনিবার সকালে। এ বার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যেতে পারেননি। পরিবর্তে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর নিউ ইয়র্কে গিয়েছেন। তিনিই ভাষণ দেবেন নয়াদিল্লির তরফে।