ভারতের সঙ্গে সংঘাতের আর এক ফ্রন্ট খুলে দিল পাকিস্তান!
ইসলামাবাদে কমনওয়লেথ দেশগুলির স্পিকারদের সম্মেলন হওয়ার কথা আগামী সেপ্টেম্বরে। আয়োজক দেশ হিসেবে ভারতের অন্যান্য রাজ্যের স্পিকারদের আমন্ত্রণ জানালেও জম্মু-কাশ্মীরের স্পিকারকে বাদ দিয়েছে পাকিস্তান। এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে ভারত ওই বৈঠক বয়কট করার কথা ঘোষণা করেছে আজ। শুধু তা-ই নয়, পাকিস্তানের হাত থেকে ওই সম্মেলন আয়োজনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার দাবিতেও এ দিন সরব হয়েছে নয়াদিল্লি।
পাকিস্তানের উদ্দেশ্যটি ভারতের কাছে খুবই স্পষ্ট। প্রতিটি আন্তর্জাতিক মঞ্চে কাশ্মীর প্রসঙ্গ খুঁচিয়ে তোলাটা পাকিস্তানের বরাবরের নীতি। নিরাপত্তা পরিষদের আসন্ন বৈঠকেও তা করার আগে কাশ্মীর প্রসঙ্গে হাওয়া গরম করে রাখতে চাইছে তারা। সে কারণেই, ‘কাশ্মীর ভারতের অবচ্ছেদ্য অঙ্গ’— দিল্লির এই ঘোযিত অবস্থানকে ফের চালেঞ্জ জানিয়েছে ওই সম্মেলন আয়োজনের সুযোগ নিয়ে। পাকিস্তানের যুক্তি, কাশ্মীর যে-হেতু একটি ‘বিতর্কিত অঞ্চল’ তাই সেখানকার স্পিকারকে ডাকা হয়নি।
এমনিতেই সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে ভারত উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। গুরুদাসপুর ও উধমপুরের রক্ত এখনও শুকোয়নি। আজমল কসাবের পরে আর এক লস্কর জঙ্গি জীবিত ধরা পড়েছে সদ্য। ভারত-পাক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক যত এগিয়ে আসছে, সীমান্ত রণনীতি ও ঠান্ডা ঘরের কূটনীতি— পারদ চড়ছে দুইয়েরই। প্রতিবেশী দুই রাষ্ট্রের নতুন সংঘাতবিন্দু হয়ে উঠল স্পিকারদের কমনওয়েলথ বৈঠকও। যা নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে রাজধানীতে।
কমনওয়েলথের ৫৩টি দেশের স্পিকাররা বছরে এক বার এক-এক দেশে মিলিত হন। ইসনামাবাদে এ বারের সম্মেলন শুরু হওয়ার কথা ৩০ সেপ্টেম্বর। জম্মু-কাশ্মীরের স্পিকার কবীন্দ্র গুপ্ত সেখানে আমন্ত্রণ পাচ্ছে না, এটা নিশ্চিত হওয়ার পরই লোকসভার স্পিকার সুমিত্রা মহাজন ও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের স্পিকাররা আজ জরুরি বৈঠকে বসেন। সর্বসম্মত ভাবে সিদ্ধান্ত হয়, মুখের মতো জবাব দেওয়া হবে এর। সুমিত্রা মহাজন পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের স্পিকারকে আমন্ত্রণ না জানানো হলে আমরা কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিশনের বৈঠকে যোগ দেব না।’’ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র বিকাশ স্বরূপ এর পরে একটি বিবৃতিতে পাকিস্তানের এই আচরণের কঠোর সমালোচনা করেন। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘পাকিস্তানের কাছ থেকে এই সম্মেলন আয়োজন করার অধিকার কেড়ে নেওয়া হোক। অন্য কোনও দেশে এর আয়োজন করা হোক।’’
কী বলছেন জম্মু-কাশ্মীরের স্পিকার কবীন্দ্র গুপ্ত? তাঁর মন্তব্য, ‘‘পাকিস্তান একটি সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র। এটা স্পষ্ট যে, ইচ্ছা করেই ভারতকে অপমান করতে চেয়েছে পাকিস্তান। জম্মু-কাশ্মীর ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ।’’