গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তিতে ভারতকে স্বস্তি দিতে পারেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শনিবার ‘ব্লুমবার্গ’ প্রকাশিত একটি রিপোর্টে জানানো হয়েছে, আলোচনার ভিত্তিতে ভারতীয় পণ্যে শুল্কের হার ২০ শতাংশেরও কম করতে পারে আমেরিকা।
জুন মাসের শেষপর্বে চিনের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি সেরে ফেলার পরে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, তাঁর পরবর্তী লক্ষ্য ভারত। বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য গত সপ্তাহে ভারতীয় প্রতিনিধিদল আমেরিকায় গিয়েছিল। তবে কূটনৈতিক এবং বণিকমহলের একাংশের মতে চিনের মতো দ্রুত আমেরিকার সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতায় পৌঁছোনো ভারতের পক্ষে কঠিন। কারণ, বিরল খনিজ থেকে বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের কাঁচামাল পর্যন্ত বহু ক্ষেত্রের চিনের উপর নির্ভরতা রয়েছে আমেরিকার। কিন্তু, নয়াদিল্লির সে সুবিধা নেই। এই পরিস্থিতিতে শুল্কের হার ২০ শতাংশের নীচে নামলে তা নয়াদিল্লির ‘বড় সাফল্য’ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, কিছু ক্ষেত্রে মতানৈক্য থাকলেও অন্তর্বর্তী বাণিজ্যচুক্তির খসড়া নিয়ে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এখন অন্তিম পর্যায়ে। অধিকাংশ ভারতীয় পণ্যেই শুল্কের হার ২০ শতাংশের কম করার প্রস্তাব রয়েছে ওই খসড়ায়। প্রসঙ্গত, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের সময়ে দ্রুত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তির বার্তা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে তার পর পরিস্থিতি কিছুটা বদলে যায়। এপ্রিলের গোড়ায় নতুন শুল্কনীতি ঘোষণা করেন ট্রাম্প। বিভিন্ন দেশ থেকে পণ্য আমদানির উপর পারস্পরিক শুল্ক ধার্য করেন। সেই তালিকায় ছিল ভারতও। ভারতীয় পণ্যের উপর বাড়তি ২৬ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করা হয়।
পরে তা ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রাখা হলেও ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্যে ২৫ শতাংশ বাড়তি শুল্ক বহাল রাখা হয়। তবে ৯ জুলাই সময়সীমা শেষ হলেও ১ অগস্ট পর্যন্ত নয়া শুল্কহার কার্যকর হবে না বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছেন মার্কিন বাণিজ্যসচিব হাওয়ার্ড লুটনিক। যদিও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি দেশকে নয়া হারে শুল্ক আরোপের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন ট্রাম্প। নয়াদিল্লি-ওয়াশিংটন দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের অঙ্ক প্রায় ১৯ হাজার ১০০ কোটি ডলার। চুক্তি হলে তা বাড়িয়ে বাণিজ্য ৫০ হাজার কোটি ডলারে নিয়ে যাওয়া ট্রাম্প সরকারের লক্ষ্য বলে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভান্স। পরিসংখ্যান বলছে, ভারতের মোট রফতানির প্রায় ১৮ শতাংশ যায় আমেরিকার বাজারে। আমদানির ক্ষেত্রে দেশীয় বাজারে ৬.২২ শতাংশ মার্কিন পণ্য বলে জানা গিয়েছে।