RCEP

আরসিইপি-তে যোগ দিচ্ছে না ভারত, ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর, প্রশ্নের মুখে চুক্তি ভবিষ্যৎ

কারণ হিসেবে ক্ষুদ্র চাষি, ব্যবসায়ী, পেশাদারদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন বলেন, সব দেশবাসীর স্বার্থের কথা ভেবে যখন আরসিইপি চুক্তির বিচার করি, আমি সদর্থক কোনও উত্তর পাইনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৯ ২২:০২
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।—ছবি এএফপি।

ভারত যোগ দিচ্ছে না রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকনমিক পার্টনারশিপ বা আরসিইপি-তে। এশিয়ার ১৬টি দেশের মধ্যে প্রস্তাবিত এই চুক্তিতে ভারত থাকবে না বলে সোমবার জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর দাবি, চুক্তিতে ‘মূল আদর্শ ও নীতি প্রতিফলিত হচ্ছে না’। সেই কারণেই ভারত চুক্তিতে সই করবে না। যদিও আন্তর্জাতিক মহল সূত্রে খবর, আগামী বছর নির্ধারিত সময়ে ভারতকে ছাড়াই ১৫টি দেশের মধ্যে এই চুক্তি ঘোষণা হতে পারে।

Advertisement

আঞ্চলিক বাণিজ্য শক্তিশালী করতে দক্ষিণ এশিয়ার আসিয়ান-ভুক্ত দশটি দেশ এবং তাদের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিতে আবদ্ধ ছ’টি দেশের (চিন, ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড) মধ্যে আগামী বছরই এই আরসিইপি চুক্তি সই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ভারত তাতে সামিল হচ্ছে না। কারণ হিসেবে ক্ষুদ্র চাষি, ব্যবসায়ী, পেশাদারদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী এ দিন বলেন, সব দেশবাসীর স্বার্থের কথা ভেবে যখন আরসিইপি চুক্তির বিচার করি, আমি সদর্থক কোনও উত্তর পাইনি। সূতরাং না গাঁধীজির আদর্শ, না আমার বিবেক— কোনওটাই আরসিইপি-তে যোগ দেওয়ার অনুমতি দেয়নি।’’

বিরোধী কংগ্রেস তো বটেই, বিজেপির মার্গদর্শক আরএসএস গোড়া থেকেই এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে আসছে। আরএসএস উদ্বেগ প্রকাশ করে এসেছে, এই চুক্তি হলে সস্তা চিনা পণ্যে ভরে যাবে ভারতীয় বাজার। প্রায় একই সুরে এ দিন দুপুরেও মোদীর ঘোষণার আগে এই চুক্তির বিরোধিতা করে টুইট করেন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী। তিনি লেখেন, ‘ভারত প্রতি বছর নাগরিক পিছু ৬০০০ টাকার চিনা পণ্য আমদানি করে। ২০১৪ সালের চেয়ে যা ১০০ শতাংশ বেশি। আরসিইপি হলে ভারতে সস্তা জিনিসের বন্যা বয়ে যাবে। যার ফলে আরও বহু মানুষ কাজ হারাবেন এবং আরও সঙ্কটে পড়বে ভারতীয় অর্থনীতি।’

Advertisement

আরও পড়ুন: ‘মানুষের গোপনতা বলে কিছুই রইল না’ ফোনে আড়িপাতা নিয়ে বিরক্ত সুপ্রিম কোর্ট

অন্য দিকে, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরেই তাঁর পক্ষে ব্যাট ধরেছেন অমিত শাহ। ইউপিএ সরকারকে বিঁধে তাঁর টুইট, আরসিইপি-তে ভারতের যোগ না দেওয়ার ঘোষণা মোদী সরকারের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের প্রমাণ। দেশের স্বার্থরক্ষায় এবং দেশের কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ডেয়ারি এবং উৎপাদন, ওষুধ, স্টিল ও রাসায়নিক ক্ষেত্রের পক্ষে সহায়ক হবে।’’

আরও পড়ুন: জোড়-বিজোড় ফর্মুলায় কী লাভ হয়েছে, প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

ভারতীয় কূটনৈতিক মহল সূত্রে খবর, আরসিইপি চুক্তির সিদ্ধান্তের পর গোড়া থেকেই বিরোধিতা করে আসছিল ভারত। চিনা পণ্যের রমরমা নিয়ে আপত্তি তুলে আসছিল। তা ছাড়া ভারতের অভ্যন্তরীণ উৎপাদক ও ব্যবসায়ীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেও প্রথম থেকেই এই চুক্তির পক্ষে সায় দেয়নি নয়াদিল্লি। সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে সেই ঘোষণাই করলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে এর পরে এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠে যেতে পারে বলে বণিক মহলের একটি অংশের মত। যদিও সংশ্লিষ্ট মহলের অন্য অংশ মনে করছে, ভারতকে বাদ দিয়ে বাকি ১৫টি দেশের মধ্যেও এই চুক্তি হতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন