অজিত ডোভাল।— ফাইল চিত্র।
অবশেষে মুখোমুখি ভারত ও চিন।
ডোকা লা-য় একখণ্ড জমি নিয়ে যুযুধান দুই পক্ষ আলোচনায় বসতে চলেছে আগামিকাল। উপলক্ষ, ব্রিকসের দেশগুলির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের বৈঠক। ভারতের অজিত ডোভাল আজ গেলেন বেজিং। সম্পর্কের বরফ গলানোই তাঁর লক্ষ্য। চিনা সংবাদমাধ্যম ভারতকে নিয়ে যে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিয়েছে, তাতে দিল্লির রণকৌশল হল, মুখে কুলুপ এঁটে থাকা। বিদেশ মন্ত্রক আক্রমণের প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে সরকারি স্তরে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা হচ্ছে।
ভারতের রণকৌশল কী?
নরেন্দ্র মোদী শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে দেখেছেন, সম্ভাব্য তিনটি কৌশল রয়েছে। যার একটি, দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের পক্ষে করা সম্ভব নয়। সেটি হল যুদ্ধ। ডোভাল আলোচনা করবেন অন্য দু’টি প্রস্তাব নিয়ে। প্রথম প্রস্তাব, চিন যদি ডোকা লা থেকে সেনা তুলতে রাজি না হয়, তা হলে ভারতও সেনা প্রত্যাহার করবে না। দু’পক্ষের সেনাই মোতায়েন থাকবে। ভুটান সরকারকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হবে। কিন্তু কোনও পক্ষই আক্রমণাত্মক ভূমিকা নেবে না। এর ফলে নতুন দু’টি পোস্ট গঠিত হবে। কিন্তু কোনও ‘অ্যাকশন’ থাকবে না। সিয়াচেনে যে রকম দু’দেশের মধ্যে বিরোধ রয়েছে, পোস্ট রয়েছে, কিন্তু যুদ্ধ পরিস্থিতি নেই। সেই রকমই এটি একটি নতুন বিতর্কিত স্থল হিসেবে চিহ্নিত হবে। দ্বিতীয় সম্ভাব্য পরিস্থিতি হল, দু’পক্ষই সেনা তুলে নেবে। কে আগে পদক্ষেপ করবে, সেটা আলোচনা করে স্থির হবে। ভুটানও দু’পক্ষকে সেনা তোলার বার্তা দিতে পারে। ভারতের কাছে সেই পরিস্থিতিটাই সবচেয়ে কাম্য।
আরও পড়ুন: এখনও দুঃস্বপ্নে ঘুম ভেঙে যায়, অকপট ডায়ানার ভাই
কেন্দ্র বুঝছে, আরএসএস-এর সাবেকি চিনা বিরোধী লাইন অনুসরণ করে আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে কূটনৈতিক ফাঁদে পড়ে গিয়েছে ভারত। চিন বহুবার ভারতের এলাকায় অনুপ্রবেশ করেছে। কিন্তু এ বার চিন যে ভাবে দোষ দিয়ে চলেছে, সেটা দিল্লির জন্য অস্বস্তির। আপাতত বিদেশসচিব জয়শঙ্কর চিনে যাচ্ছেন না। ডোভালের সঙ্গে আগামিকাল চিনের স্টেট কাউন্সিলার ইয়াং জিইচি-র বৈঠকে বরফ গলে যাবে, এমনটা আশা করছে না ভারত। কিন্তু আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হবে। সেপ্টেম্বরে ব্রিকস সম্মেলনে মোদীর চিন সফরের সম্ভাবনা থেকে যাবে।
নয়াদিল্লি এখনও মনে করছে, বেজিং যুদ্ধ চাইছে না। বরং মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে ভারতকে হারানোটাই চিনের লক্ষ্য। আমেরিকাও দু’পক্ষকেই সংযত হতে পরামর্শ দিচ্ছে। ভারতীয় এক কূটনীতিকের মন্তব্য, ‘‘আগামিকালের বৈঠকে হয়ত কিছুই হবে না। চিনের সংবাদমাধ্যম সে কথা আগাম জানিয়েও দিয়েছে। কিন্তু বরফ গলার প্রক্রিয়া তো শুরু হবে। যা পরিস্থিতি, তাতে শূন্যের চেয়ে এক অনেক বড় সংখ্যা।’’