Indian Air Strike

প্রত্যাঘাতের আগে ১১ দিন: কোন পথে চলেছিল পরিকল্পনা?

রাতারাতি এই অভিযান চালানো হয়নি। বরং প্রস্তুতি চলেছে গত ১১ দিন ধরে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৩:৪৯
Share:

এই মিরাজ ২০০০ যুদ্ধবিমান থেকেই বোমাবর্ষণ করা হয়। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

উরি হামলার পর সময় লেগেছিল ১০ দিন। পুলওয়ামার পর ১১ দিন সময় লাগল।

Advertisement

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় আত্মঘাতী জঙ্গি হামলার জবাবে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে ফের প্রত্যাঘাত করল ভারত। সোমবার ভোরে নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীর এবং বালাকোটে বোমাবর্ষণ করে ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান। তাতে জইশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তৈবা এবং হিজবুল মুজাহিদিনের একাধিক ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বায়ুসেনার এই অভিযানে অন্তত ৩০০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক।

রাতারাতি এই অভিযান চালানো হয়নি। বরং প্রস্তুতি চলেছে গত ১১ দিন ধরে।বিদেশ মন্ত্রক সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামায় সিআরপি কনভয়ে আত্মঘাতী হামলা চালায় পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদ। তাতে মৃত্যু হয় ৪৪ জওয়ানের। প্রাথমিকভাবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পরই পাকিস্তানকে ‘সমুচিত জবাব’ দেওয়ার কাজ শুরু হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: সবচেয়ে বড় জইশ জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছে বায়ুসেনা, জানাল বিদেশমন্ত্রক​

আরও পড়ুন: অধিকৃত কাশ্মীরে ঢুকে প্রত্যাঘাত ভারতীয় বায়ুসেনার, বোমাবর্ষণে ধ্বংস একাধিক জঙ্গিঘাঁটি

ধাপে ধাপে কী ভাবে গোটা পরিকল্পনা এগোয়—

১৫ ফেব্রুয়ারি

এর আগে ২০১৬-য় নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংস করে ভারতীয় সেনা। তবে এ বার পরিকল্পনা ছিল আকাশপথে বোমাবর্ষণের। সেই মতো প্রেজেন্টেশন দেন বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া। ওই দিনই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার তরফে তাতে অনুমোদন মেলে।

১৬-২০ ফেব্রুয়ারি

নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর নজরদারি চালাতে নামানো হয় হেরন ড্রোন। তার মাধ্যমে টানা পাঁচদিন ধরে নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন এলাকায় জঙ্গিদের গতিবিধি এবং কার্যকলাপের উপর নজর রাখা হয়।

২০-২২ ফেব্রুয়ারি

ড্রোনের মাধ্যমে নজরদারির পর কোন কোন জায়গাগুলিকে নিশানা করা যায়, যৌথভাবে সেগুলিকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে বায়ুসেনা এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।

২১ ফেব্রুয়ারি

জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে বৈঠক করেন বায়ুসেনা আধিকারিক ও গোয়েন্দারা। কোন পথে কোথায় অভিযান চালানো হবে, ডোভালের সামনে সবিস্তার তথ্য তুলে ধরা হয়।

২২ ফেব্রুয়ারি

জরুরি পরিস্থিতিতে যুদ্ধবিমান থেকে বোমাবর্ষণ এবং স্ট্রাইক চালাতে বায়ুসেনার ১ নম্বর স্কোয়াড্রন ‘টাইগারস’ এবং ৭ নম্বর স্কোয়াড্রন ‘ব্যাটল অ্যাক্সেস’-এর সাহায্য নেওয়া হয়। মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়রে বায়ুসেনার ওইঘাঁটিতে খবর দেওয়া হয়। নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে অভিযান চালাতে প্রস্তুত রাখতে বলা হয় ১২টি ‘মিরাজ ২০০০’ যুদ্ধবিমান।

২৪ ফেব্রুয়ারি

সবকিছু ঠিক আছে কিনা দেখতে ভারতের আকাশেই মহড়া দেওয়া হয়। মাঝআকাশে যদি বিপত্তি দেখা দেয়, সে জন্য আগরা থেকে বিশেষ জ্বালানি সরবরাহকারী বিমান উড়িয়ে আনা হয়।

২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি

ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ অভিযান শুরু হয়। গ্বালিয়র থেকে নিয়ন্ত্রণরেখা অভিমুখে রওনা দেয় লেজার নিয়ন্ত্রিত বোমা বোঝাই ১২টি ‘মিরাজ ২০০০’ যুদ্ধবিমান। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ভাটিন্ডা থেকে একটি বিমান রওনা দেয়। আগরা থেকে রওনা দেয় মাঝআকাশে জ্বালানি সরবরাহকারী বিশেষ বিমান। গোপন জায়গা থেকে নজরদারি চালাতে পাঠানো হয় হেরন ড্রোন।

নিশানায় আঘাত হানতে কোনও বাধা নেই, কম্যান্ড সেন্টার থেকে এই বার্তা পেয়ে বোমা বর্ষণ করতে শুরু করেন মিরাজ যুদ্ধবিমানের পাইলটরা।

অভিযান সম্পন্ন হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খবর দেন অজিত ডোভাল। তার পর সরকারের তরফে বিবৃতি দেওয়া হয়।

(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন