National News

অসামরিক ব্যক্তিদের ৩ বছরের জন্য বাহিনীতে যোগদানের প্রস্তাব ভারতীয় সেনার

এই প্রস্তাবটি গৃহীত হলে ভারতীয় সেনা তথা দেশের ইতিহাসে তা এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৪ মে ২০২০ ১৩:০৭
Share:

—ফাইল চিত্র।

দেশের নাগরিকেরা যাতে তিন বছরের জন্য সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে পারেন, তা নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে ভারতীয় সেনা। সেনাবাহিনীর আধিকারিক হিসাবে তিন বছরের জন্য ময়দানে নেমে কাজ করা ছাড়াও লজিস্টিক-সহ অন্যান্য বিভাগেও কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন তাঁরা। গোটা বিষয়টিই পরিকল্পনার স্তরে থাকলেও এই প্রস্তাবটি গৃহীত হলে ভারতীয় সেনা তথা দেশের ইতিহাসে তা এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

Advertisement

ভারতীয় সেনা সূত্রের খবর, গোটা প্রস্তাবটিই সেনার এক শীর্ষ বৈঠকে আলোচনা করা হবে। ওই বৈঠকে সেনার শীর্ষ আধিকারিকেরা এই বিষয়টির সব দিক খতিয়ে দেখবেন বলে জানা গিয়েছে। দেশের যুব সম্প্রদায়ের সদস্যরা ছাড়াও আধাসামরিক বাহিনী এবং কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী (সেন্ট্রাল আর্মড পুলিশ ফোর্সেস বা সিএপিএফ)-এর সদস্যদের কাছেও সেনাবাহিনীতে যোগদানের দরজা খুলে দেওয়া হবে। সর্বোচ্চ সাত বছর পর্যন্ত সেনাবাহিনীতে কাজের সুযোগ থাকবে তাঁদের কাছে। সাত বছরের মেয়াদ শেষে তাঁরা নিজেদের পুরনো কর্মক্ষেত্রে ফিরে যেতে পারবেন।

কেন এই পদক্ষেপ? মূলত দেশের যুব সম্প্রদায় যাতে প্রত্যক্ষ ভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে কাজের অভিজ্ঞতা লাভ করতে পারেন, সে জন্য এই পদক্ষেপ করার কথা ভাবনা-চিন্তা শুরু হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পাশাপাশি, এর ফলে দেশের একটি বিশাল অংশের কাছে সরাসরি সামরিক জীবনের অঙ্গ হওয়ার সুযোগও খুলে যাবে। অন্য দিকে, একটি সেনা সূত্রের মতে, দেশের যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে জাতীয়তাবাদ এবং দেশভক্তির পুণঃজাগরণ ঘটেছে। সেই আবেগকে কাজে লাগাতেও এই পদক্ষেপ বলে দাবি ওই সূত্রের। পুরোপুরি ভাবে যোগদান না করতে চাইলেও দেশের বহু তরুণ পেশাদারই সেনাবাহিনীতে কাজের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান। ফলে ভারতীয় সেনার সংস্কারের অঙ্গ হিসাবেই এই পদক্ষেপ করার কথা ভাবা হচ্ছে।

Advertisement

আরও পড়ুন: ৩০ জুন পর্যন্ত সমস্ত ট্রেনের টিকিট বাতিল, চলবে স্পেশাল ট্রেন

সেনা সূত্রের খবর, ট্যুর অব ডিউটি (টিওডি) বা ‘থ্রি ইয়ার্স শর্ট সার্ভিস’ নামের এই প্রকল্পের নানা খুঁটিনাটি শেষ মুহূর্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অন্য দিকে, আধাসামরিক এবং সিএপিএফ-দের নিয়োগের ভাবনাটিকে ‘ইনভার্স ইনডাকশন মডেলে’-এর আওতায় ফেলা হয়েছে। তবে দেশের তরুণ পেশাদার বা অসামরিক ব্যক্তিদের নিয়োগ করা হলেও বয়স, বা ফিটনেসের মতো শারীরিক দক্ষতা নিয়ে কোনও রকম আপস করা হবে না বলে জানানো হয়েছে।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল আমন আনন্দ বলেন, ‘‘এই প্রস্তাবটি গৃহীত হলে তা হবে একটি স্বেচ্ছাসেবী ব্যবস্থাপনা। তবে এতে নিয়োগের মাপকাঠি নিয়ে কোনও রকম শিথিলতা আনা হবে না। এই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে প্রাথমিক ভাবে, আধিকারিক পদে ১০০ জন এবং সেনার অন্যান্য বিভাগে ১ হাজার জনকে নিয়োগ করা হবে।’’

আরও পড়ুন: এক বাজারেই সংক্রমণ ২৬০০ জনের! ভয়াবহ আতঙ্কের ছবি তামিলনাড়ুতে

ওয়াকিবহাল মহলের মতে, এই প্রস্তাব গৃহীত হলে আর্থিক দিক দিয়েও লাভবান হবে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এই মুহূর্তে ‘শর্ট সার্ভিস কমিশনে’র আওতায় তরুণদের ১০ বছরের জন্য নিয়োগ করে সেনা। পরে তা ১৪ বছর পর্যন্ত বাড়ানো যায়। একটি সূত্রের মতে, প্রি-কমিশন ট্রেনিং, বেতন ও অন্যান্য সব কিছু মিলিয়ে ১০ বছর বা ১৪ বছরের জন্য এক জনের জন্য যথাক্রমে ৫ কোটি ১২ লক্ষ এবং ৬ কোটি ৮৩ লক্ষ খরচ হয় সেনার। তবে, ওই একই খরচ তিন বছরের জন্য করলে তা আর্থিক মূল্যে নেমে দাঁড়াবে জন প্রতি ৮৫ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া, সেনায় কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে তাতে লাভবান হবেন দেশের তরুণ পেশাদারেরা। কারণ, একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সমস্ত কর্পোরেট সংস্থাই ২২-২৩ বছরের আনকোরা স্নাতকদের তুলনায় সেনায় কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ২৬-২৭ বছরের কোনও পেশাদারদের অগ্রাধিকার দেয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন