BRICS Meeting in US

ট্রাম্প প্রশাসনের চোখরাঙানির মাঝেই আমেরিকায় বসে বৈঠক সারল ‘ব্রিক্‌স’! শুল্ক-ঘা সামাল দিতে ‘বন্ধুদের’ বার্তা দিল ভারত

‘ব্রিক্‌স’-এর অন্যতম সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, রাশিয়া এবং ব্রাজ়িলও। এখনও পর্যন্ত ভারত ছাড়া ব্রাজ়িলই একমাত্র দেশ, যাদের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৭:২৬
Share:

(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ‘ব্রিক্‌স’-কে সাম্প্রতিক সময়ে বার বার নিশানা করেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। ট্রাম্প নিজেও ‘ব্রিক্‌স’ প্রসঙ্গে তাঁর অসন্তোষ গোপন রাখেননি। এ বার সেই আমেরিকাতে বসেই বৈঠক সেরে নিল ‘ব্রিক্‌স’-এর সদস্য রাষ্ট্রগুলি। নিউ ইয়র্কে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার ৮০তম সম্মেলন চলছে। তার মাঝেই ‘ব্রিক্‌স’ গোষ্ঠীর বিদেশমন্ত্রীরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক সারলেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করও।

Advertisement

‘ব্রিক্‌স’ সদস্য দেশগুলির বৈঠকে শুল্ক-সংঘাতের পরিস্থিতির কথা তুলে ধরেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। বৈঠকে নয়াদিল্লির বার্তার নির্যাস সমাজমাধ্যমে তুলে ধরেছেন বিদেশমন্ত্রী। সেখানে জয়শঙ্করের বক্তব্য, “শুল্ক নিয়ে অস্থিরতা এবং শুল্কের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়, এমন বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতা বাণিজ্যে প্রভাব ফেলছে। এ অবস্থায় বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে হবে ‘ব্রিক্‌স’ গোষ্ঠীকে।” তিনি আরও লিখেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার উপর চাপ তৈরি হচ্ছে, তখন একটি যৌক্তিক এবং গঠনমূলক পরিবর্তনের পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠস্বর হিসাবে উঠে দাঁড়িয়েছে ‘ব্রিক্‌স’। বিশ্বব্যাপী অস্থিরতার মাঝে শান্তি প্রতিষ্ঠা, আলোচনা এবং আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার জন্য ‘ব্রিক্‌স’-এর তরফে আরও জোরালো বার্তা প্রতিধ্বনিত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর।

বস্তুত, ‘ব্রিক্‌স’-এর অন্যতম সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, রাশিয়া এবং ব্রাজ়িলও। এখনও পর্যন্ত ভারত ছাড়া ব্রাজ়িলই একমাত্র দেশ, যাদের উপর ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন ট্রাম্প। শুল্ক ঘিরে বিশ্বব্যাপী চাপানউতরের মাঝে বিভিন্ন সময়ে ‘ব্রিক্‌স’ গোষ্ঠীকে নিশানা করেছে আমেরিকা। কখনও ট্রাম্প নিজে, কখনও তাঁর প্রশাসনের আধিকারিকেরা ‘ব্রিক্‌স’-এর বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান বুঝিয়ে দিয়েছেন। ব্রাজ়িলে আয়োজিত ‘ব্রিক্‌স’ সম্মেলনের সময়ে এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীকে নিশানা করেছিলেন ট্রাম্প। শুল্কসংঘাতের আবহে ওই সময়ে ‘ব্রিক্‌স’কে ‘আমেরিকাবিরোধী’ বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ‘ব্রিক্‌স’ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোরও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন তিনি।

Advertisement

পরবর্তী সময়ে ‘ব্রিক্‌স’ গোষ্ঠীকে ‘ভ্যাম্পায়ার’ (কল্পিত রক্তচোষা প্রাণী)-এর সঙ্গে তুলনা করতে দেখা গিয়েছে আমেরিকার প্রশাসনকে। ‘ব্রিক্‌স’-এর সদস্যদের ‘ভ্যাম্পায়ার’-এর সঙ্গে তুলনা করে মার্কিন বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটান নাভারো সম্প্রতি বলেছেন, “যখন তারা (ব্রিক্‌স সদস্যেরা) নিজেদের পণ্য আমেরিকার কাছে বিক্রি করে, তারা অন্যায্য ভাবে ব্যবসা করে আমাদের রক্ত শুষে নেয়।” আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ‘ব্রিক্‌স’-এর প্রতি নিজেদের অসন্তুোষ বার বার বুঝিয়ে দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে এ বার আমেরিকায় বসেই নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠক সেরে নিল ‘ব্রিক্‌স’-এর সদস্য দেশগুলি। সেখানে সরাসরি আমেরিকার প্রসঙ্গ উল্লেখ না-করলেও শুল্ক-কোপ মোকাবিলার বার্তা দিলেন জয়শঙ্কর। জোর দিলেন বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থার উপরেও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement