India in UN Assembly

কেবল শাহবাজ় নন, ট্রাম্পের দাবিও ফুৎকারে উড়িয়ে দিলেন রাষ্ট্রপুঞ্জের বৈঠকে! কে এই ‘সাহসিনী’ ভারতীয় কূটনীতিক

এর আগে বহু বার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলা সামরিক সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন ট্রাম্প। অতীতে ‘কাশ্মীর সমস্যা’ মেটাতে ভারত এব‌ং পাকিস্তানকে নিয়ে আলোচনায় বসারও আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:৫৪
Share:

(বাঁ দিক থেকে) শাহবাজ় শরিফ, পেটাল গহলৌত এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার ৮০তম সম্মেলনে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফই শুধু নয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবিও ফুৎকারে উড়িয়ে দিল ভারত। এর আগে বহু বার ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলা সামরিক সংঘাত থামানোর কৃতিত্ব দাবি করেছেন ট্রাম্প। অতীতে ‘কাশ্মীর সমস্যা’ মেটাতে ভারত এব‌ং পাকিস্তানকে নিয়ে আলোচনায় বসারও আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। এই আবহে শনিবার ভারতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয় যে, পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে কোনও তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ চায় না নয়াদিল্লি।

Advertisement

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় ভারতের প্রতিনিধি হিসাবে বক্তৃতা করেন কূটনীতিক পেটাল গহলৌত। ট্রাম্পের নাম-না করেই তিনি বলেন, “ভারত এবং পাকিস্তান অনেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, দু’পক্ষের অমীমাংসিত বিষয়ের সমাধান তারা নিজেরাই করবে। এ ক্ষেত্রে তৃতীয় পক্ষের প্রবেশাধিকারের কোনও সুযোগই নেই। এটা আমাদের বহু দিনের অবস্থান।”

রাষ্ট্রপুঞ্জে পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফকে মুখের উপর জবাব দিয়ে রাতারাতি সংবাদ শিরোনামে চলে এসেছেন পেটাল। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে নিয়ে জনমানসে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জে ভাষণের সময় শাহবাজ় দাবি করেছিলেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর সময় ভারতের সঙ্গে চার দিনের সংঘাতে সাফল্য অর্জন করেছে পাকিস্তান। তাঁর সেই মন্তব্যকে বিদ্রুপ করে পেটাল বলেন, “ওই সময় পাকিস্তানের বহু বিমানঘাঁটিকে ধ্বংস করে দেয় ভারতের বাহিনী। ক্ষয়ক্ষতির ছবি জনসমক্ষেই রয়েছে। যদি রানওয়ে ধ্বংস হয়ে যাওয়া পাক প্রধানমন্ত্রীর দাবি মোতাবেক সাফল্য বা বিজয় হয়, তবে পাকিস্তান তা নিয়ে আনন্দ করতে থাকুক।”

Advertisement

শাহবাজ় বলেছিলেন, ‘‘কাশ্মীরের জনগণকে আমি এই বলে আশ্বস্ত করতে চাই যে, আমরা তাঁদের পাশে আছি। পাকিস্তান তাঁদের পাশে আছে। কাশ্মীরে ভারতের অত্যাচার এক দিন বন্ধ হবেই।’’ এখানেই শেষ নয়। এর পর সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তি নিয়েও ভারতকে কাঠগড়ায় তোলার চেষ্টা করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। দাবি করেন, ওই চুক্তি স্থগিত করে ভারত আন্তর্জাতিক আইন ভেঙেছে। পাকিস্তানের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শনিবার ‘জবাব দেওয়ার অধিকার’ প্রয়োগ করে ভারত। রাষ্ট্রপুঞ্জের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ভারতের প্রতিনিধি পেটাল বলেন, ‘‘সকালে এই সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী কিছু অদ্ভুত নাটক করেছেন। আরও এক বার তিনি সন্ত্রাসবাদকে মহান করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন, যা দেশটির বিদেশনীতির অন্যতম অঙ্গ। তবে কোনও নাটক বা কোনও মিথ্যাভাষণ সত্যকে ঢেকে রাখতে পারবে না।’’

কে এই পেটাল গহলৌত

পেটাল রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতের অন্যতম পরামর্শদাতা। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে তিনি ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধিদলের ফার্স্ট সেক্রেটারি হিসাবে নিযুক্ত হন। এর আগে ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিদেশ মন্ত্রকের অন্যতম সচিব (আন্ডার সেক্রেটারি) হিসাবে কর্মরত ছিলেন তিনি। ওই তিন বছর ফ্রান্সের প্যারিস এবং আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোর ভারতীয় দূতাবাসেও কূটনীতিক হিসাবে দায়িত্বভার সামলেছেন তিনি।

স্নাতক স্তরে রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজবিদ্যা এবং ফরাসি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেছেন পেটাল। দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ন্ত্রণাধীন লেডি শ্রীরাম কলেজ থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়াশোনা করেন। বিষয় ছিল রাষ্ট্রবিজ্ঞান। পরে আমেরিকার মিডলব্যরো ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ়-এ ভাষার ব্যবহার এবং প্রয়োগ নিয়ে নিয়ে পড়াশোনা করেন পেটাল। গানে এবং গিটারেও আগ্রহ রয়েছে এই ভারতীয় কূটনীতিকের। প্রায়ই গিটারে বিভিন্ন গানের সুর তোলেন পেটাল। সমাজমাধ্যমে সেগুলি পোস্টও করেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement