US Tariff on India

ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতে পিছু হটলে বিপদ ভারতের! রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করলে কত বাড়বে জ্বালানি খরচ?

অপরিশোধিত তেলের বিশ্বব্যাপী চাহিদার ১০ শতাংশ যায় রাশিয়া থেকে। সব দেশ যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে, তবে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়তে পারে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৫ ১৬:০১
Share:

(বাঁ দিক থেকে) ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভ্লাদিমির এবং নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

রাশিয়ার থেকে খনিজ তেল কেনায় ভারতের উপর ক্ষুব্ধ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জানান, রাশিয়ার সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে তেলের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে ভারত। তাই ভারতকে ২৫ শতাংশ শুল্ক ‘জরিমানা’ করেছেন ট্রাম্প। তার আগে ভারতীয় পণ্যের উপর আরও ২৫ শতাংশ রফতানি শুল্ক আরোপ করেছিলেন তিনি। ফলে ভারতকে এখন আমেরিকার বাজারে গুনতে হবে ৫০ শতাংশ শুল্ক। ভবিষ্যতে সেই পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন অনেকে। তবে ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতে পিছু হটে ভারত যদি রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত খনিজ তেল কেনা বন্ধ করে দেয়, তবে আদতে ক্ষতিই হবে নয়াদিল্লিরই। গুনতে হবে অতিরিক্ত অর্থ!

Advertisement

সম্প্রতি ‘স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া’ (এসবিআই) একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। তাতে উল্লেখ করা হয়েছে, ভারতের জ্বালানি খরচের বিষয়টি। সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করে দেয়, তবে চলতি অর্থবছর অর্থাৎ ২০২৫-২৬ সালেই ভারতে তেল আমদানি করার খরচ ৯০০ কোটি মার্কিন ডলার বেড়ে যাবে। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৭৯ হাজার কোটি টাকা। পরের অর্থবর্ষে এই খরচের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, ২০২৬-২৭ সালে ভারতে তেল আমদানি করার খরচ ১,২০০ কোটি মার্কিন ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় এক লক্ষ কোটি টাকার বেশি) বাড়বে।

রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করলে বিকল্প কোন পথ খোলা থাকবে ভারতের? এসবিআইয়ের রিপোর্টে বলা হয়েছে, ইরাক থেকে তেল কেনার কথা ভাবনাচিন্তা করতে পারে ভারত। এ ছাড়াও, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির থেকেও তেল কেনার বিষয়ে বিবেচনা করতে পারে নয়াদিল্লি। অপরিশোধিত তেলের বিশ্বব্যাপী চাহিদার ১০ শতাংশ যায় রাশিয়া থেকে। সব দেশ যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি বন্ধ করে, তবে বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বাড়তে পারে। যদি অন্য দেশগুলি সেই চাহিদা মেটায়, তবেই মিলবে সুরাহা।

Advertisement

২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়া ইস্তক ভারতকে অত্যন্ত সস্তা দরে খনিজ তেল বিক্রি করছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ৩০ জুন থেকে ১ অগস্টের মধ্যে ওই ‘তরল সোনা’র দাম ব্যারেলপ্রতি ৬৫.৬৬ ডলারে কিনেছে ভারত। ফলে জ্বালানি বাবদ খরচের ক্ষেত্রে অনেকটাই অর্থ সঞ্চয় করতে পেরেছে নয়াদিল্লি। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, মোদী সরকারের এই সিদ্ধান্তের জেরে ঘরোয়া বাজারে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে মুদ্রাস্ফীতির হার। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম সে ভাবে বাড়েনি। কিন্তু রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করলে মুদ্রাস্ফীতির হার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।

উল্লেখ্য, ট্রাম্পের শুল্কবাণ নিয়ে ভারতের তরফে নমনীয়তার কোনও ইঙ্গিত এখনও আসেনি। বরং এ বিষয়ে নয়াদিল্লির অবস্থান স্পষ্ট। জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক বাজারের কথা মাথায় রেখে ভারত বাণিজ্যনীতি স্থির করে। রাশিয়া সস্তায় তেল বিক্রি করছে, তাই ভারত তাদের থেকে তেল কিনছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement