মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। —ফাইল চিত্র।
এক ইঞ্চি জমি ছাড়লে, এক মাইল নিয়ে নেবে! ভারত, ব্রাজিলের মতো ব্রিক্সের সদস্য দেশগুলির উপর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘটনা নিয়ে এমনই মন্তব্য করলেন চিনা রাষ্ট্রদূত জু ফেইহং। সরাসরি নাম না করলেও চিনা রাষ্ট্রদূতের নিশানায় রয়েছেন ট্রাম্প, তা নিয়ে সংশয় নেই অনেকেরই। শুধু তা-ই নয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নাম না করে ‘গুন্ডা’ বলে আক্রমণ করেছেন তিনি।
ভারতের উপরে আমেরিকা প্রথমে শুল্ক চাপিয়েছিল ২৫ শতাংশ। রাশিয়া থেকে তেল আমদানির জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জরিমানাস্বরূপ আরও ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। ব্রাজিলের উপরেও আমেরিকা শুল্ক চাপিয়েছে ৫০ শতাংশ। তার পরেই চিনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইয়ি সমালোচনা করেন মার্কিন নীতির! তাঁর মতে, শুল্ককে হাতিয়ার করে আমেরিকা অন্য দেশগুলিকে দমন করতে চাইছে। ট্রাম্পের এই শুল্কনীতি বিশ্ব বাণিজ্যনীতির জন্য সরাসরি হুমকি।
চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা হয় ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্ট লুইজ় ইনাসিও লুলা দ্য সিলভার উপদেষ্টা সেলসো আমোরিমের সঙ্গে। তার পরেই ট্রাম্পের শুল্ক চাপানো নিয়ে নিন্দা করেছেন ওয়াং। তিনি এ-ও জানান, ট্রাম্পের ‘স্বেচ্ছাচারী শুল্ক-হুমকি’র মোকাবিলায় ব্রাজ়িলকে ‘দৃঢ় ভাবে সমর্থন’ করবে চিন।
৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের পরই ব্রাজ়িল প্রেসিডেন্ট স্পষ্ট জানান, ট্রাম্পের সঙ্গে তিনি কোনও রকম আলোচনা করবেন না। বরং ভারত, চিনের মতো ‘বন্ধু’ দেশগুলির সঙ্গে কথা বলবেন। বৃহস্পতিবার রাতেই (ভারতীয় সময়) ব্রাজ়িলের প্রেসিডেন্টের থেকে ফোন পান ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আলোচনা হয় পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে। উল্লেখ্য, এই আবহে চলতি মাসের শেষে আন্তর্জাতিক জোট ‘সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজ়েশন’-এর (এসসিও) রাষ্ট্রনেতাদের বৈঠকে যোগ দিতে চিন যাচ্ছেন মোদী। ২০১৯ সালের পর চিন সফর করবেন তিনি। ট্রাম্পের শুল্কযুদ্ধের মধ্যে মোদীর এই সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মত অনেকের। কী ভাবে মার্কিন নীতির বিরুদ্ধে মোকাবিলা করা সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলেও মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
সাম্প্রতিক সময়ে ট্রাম্পের শুল্ক-হুমকির আবহে ভারতের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও নিবিড় করার চেষ্টা করছে বেজিং। ভারত এবং চিনের শক্তির কথা বলতে গিয়ে ‘হাতি’ এবং ‘ড্রাগন’-এর উপমা ব্যবহার করেছে তারা। চিনের বক্তব্য, ‘‘ড্রাগন এবং হাতির মধ্যে সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক দুই দেশের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। ড্রাগন আর হাতিকে একসঙ্গে নাচিয়ে দিতে হবে। একে অপরের বিরুদ্ধে কথা না-বলে পরস্পরকে সাহায্য করতে হবে। তাতেই দুই দেশের ফয়দা। যদি এশিয়ার বৃহত্তম দুই অর্থনীতি একজোট হয়, সমগ্র বিশ্বের পক্ষেই তা লাভজনক।’’