রাফাল যুদ্ধবিমানের একমাত্র মহিলা পাইলট ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শিবাঙ্গী সিংহ। — ফাইল চিত্র।
দু’দশক আগে প্রবল উৎসাহে প্রথম বার বিমানের গায়ে হাত ছুঁইয়েছিল বারাণসীর ছোট্ট মেয়ে শিবাঙ্গী। সেই মেয়েই এখন ভারতের রাফাল যুদ্ধবিমানের একমাত্র মহিলা পাইলট। ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট শিবাঙ্গী সিংহ! বছর ঊনত্রিশের শিবাঙ্গী ছুঁতে চান মহাকাশও। স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে প্রস্তুতিও শুরু করে দিয়েছেন তিনি।
বারাণসীর শিবাঙ্গী ২০১৭ সালে ভারতীয় বায়ুসেনায় যোগ দেন। দেশের প্রথম মহিলা পাইলট হিসাবে রাফাল যুদ্ধবিমান ওড়াবেন তিনি। এর আগে তিনি মিগ-২১ যুদ্ধবিমানও উড়িয়েছেন। তার পর দীর্ঘ দিন রাফাল ও়ড়ানোর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। এত দিনে অত্যাধুনিক সেই যুদ্ধবিমান পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চলেছেন তিনি।
নয়াদিল্লিতে বায়ুসেনার জাদুঘরে শিবাঙ্গী সংবাদসংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘‘ছোটবেলায় প্রথম যখন বিমান দেখি, তখনই ঠিক করে ফেলি বড় হয়ে আমি পাইলট হতে চাই। সেখান থেকেই আমার পথ চলা শুরু হয়েছিল।’’ উত্তরপ্রদেশের বারাণসীতে জন্ম, সেখানেই বেড়ে ওঠা। স্কুলের পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ভর্তি হন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএইচইউ)। তার পর ২০১৬ সালে বায়ুসেনার অ্যাকাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেওয়া শুরু করেন। ২০১৭ সালে বায়ুসেনার মহিলা ফাইটার পাইলট হিসাবে কাজে যোগ দেন শিবাঙ্গী, বায়ুসেনাতে মহিলারা যোগদানের অনুমতি পাওয়ার দীর্ঘ দুই দশক পর! তবে শিবাঙ্গীই প্রথম নন, তাঁর পথিকৃৎ ছিলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট অবনী চতুর্বেদী, ভাবনা কান্ত, মোহনা সিংহেরা, ২০১৬-র জুনে প্রথম ব্যাচের মহিলা ফাইটার পাইলট হিসাবে যাঁরা ভারতীয় বায়ুসেনাতে যোগ দেন।
২০২০ সালে নির্বাচনপ্রক্রিয়ার নানা ধাপ পেরিয়ে রাফাল ওড়ানোর যোগ্যতা অর্জন করেন শিবাঙ্গী। ককপিটে বসার আগে ফরাসি প্রশিক্ষকদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়েছেন তাঁরা। শিখেছেন রাফালের খুঁটিনাটি। তবে এখানেই শেষ নয়। আরও বড় স্বপ্ন দেখেন বারাণসীর এই কন্যা। এ বার মহাকাশ ছুঁতে চান তিনি। আগামী দিনে মহাকাশে মানুষকে পাঠানোর পরিকল্পনা করছে ভারত। সেই অভিযানেরই সওয়ারি হতে চান তিনি।
প্রসঙ্গত, গত মাসের শেষেই ২৬টি ‘রাফাল মেরিন’ (রাফাল-এম) যুদ্ধবিমান কেনার ব্যাপারে ফ্রান্সের সঙ্গে চুক্তি সই করেছে ভারত। ৬৩ হাজার কোটি টাকায় ফ্রান্সের কাছ থেকে ২২টি এক আসনবিশিষ্ট নৌ-সংস্করণ এবং চারটি দুই আসনবিশিষ্ট প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান কেনা হচ্ছে, যা ২০৩১ সালের মধ্যে ভারতে সরবরাহ করা হবে। শুধু তা-ই নয়, যুদ্ধবিমানের রক্ষণাবেক্ষণ, লজিস্টিক সহায়তা, কর্মীদের প্রশিক্ষণও রয়েছে চুক্তির আওতায়। রাফাল-এম বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত নৌ-যুদ্ধবিমান, যা এখনও পর্যন্ত শুধু ফ্রান্সের কাছেই রয়েছে। এ বার তা পেতে চলেছে ভারতও।