মা আমায় পাগল সাজাতে চেয়েছিল: মিখাইল

আদালতে দাঁড়িয়েও মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের প্রতি একই রকম বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন মিখাইল বরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৮ ০৩:৫২
Share:

মিখাইল এখন। —নিজস্ব চিত্র।

ছ’মাসের মধ্যে পঞ্চাশ কেজিরও বেশি ওজন কমিয়ে আসা ছেলেকে দেখে প্রথমে চিনতেই পারেননি মা! কিন্তু আবেগের কোনও স্থান নেই দু’জনের সম্পর্কে। এর আগে পুলিশের কাছে এবং সংবাদমাধ্যমে যা বলেছিলেন, আদালতে দাঁড়িয়েও মা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়ের প্রতি একই রকম বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন মিখাইল বরা।

Advertisement

গুয়াহাটিতে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জমা দিয়ে মিখাইল জানিয়েছিলেন, পৈতৃক সম্পত্তি দখল করতে মিখাইলকে প্রাণে মারার চক্রান্ত চালাচ্ছেন ইন্দ্রাণী। কাল থেকে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালতে ফের শুরু হয়েছে শিনা বরা মামলার শুনানি। সেখানেও মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগের পসরা উপুড় করেছেন মিখাইল। বিচারক জে সি জাগদালের সামনে তিনি দাবি করেন, ইন্দ্রাণী ও তাঁর প্রাক্তন স্বামী সঞ্জীব খন্না মিলে মুম্বাইয়ের এক মানসিক হাসপাতালে কার্যত বন্দি করে রেখেছিলেন তাঁকে। উদ্দেশ্য ছিল, মানসিক নির্যাতন চালিয়ে তাকে পাগল ও মাদকাসক্ত বলে প্রতিপন্ন করা। কিন্তু মিখাইলের দাবি, তিনি কখনও মাদক নেননি।

আদালতে মিখাইল জানান ২০০৬ সালে একাদশ শ্রেণিতে পড়ার সময় ওই ঘটনা ঘটেছিল। টাকা চাওয়ার জন্য মুম্বইয়ে মায়ের কাছে গেলে সঞ্জীব খন্নার সঙ্গে তাঁর আলাপ করান ইন্দ্রাণী। সঞ্জীব জোর করে তাঁকে মদ খাওয়ান। তার পরেই সংজ্ঞা হারান মিখাইল। জ্ঞান হলে দেখেন বাইকুল্লার মাসিনা হাসপাতালে তাঁকে বেঁধে রাখা আছে। মিখাইলের দাবি, চিকিৎসক ইউসুফ মাচিসওয়ালার নেতৃত্বে এক মাস ধরে ওই হাসপাতালে তাঁকে চেয়ারে বেঁধে, ইঞ্জেকশন দিয়ে, মাথা নেড়া করে, বিদ্যুতের শক দিয়ে অত্যাচার চালানো হয়। সবই মায়ের নির্দেশে। অবশ্য মা বলে ডাকলেই রেগে যেতেন ইন্দ্রাণী, এ কথাও বলেছেন মিখাইল।

Advertisement

মিখাইলের বয়ান অনুযায়ী, তাঁর তিন মাস বয়সেই তাঁর বাবা সিদ্ধার্থ দাস ও মা ইন্দ্রাণী পৃথক হয়ে যান। পরে মিখাইল দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় ইন্দ্রাণী তাঁকে, বোন শিনাকে আর নিজের বাবা-মাকে বলেছিলেন, ছেলে-মেয়েকে আর্থিক সাহায্য করতে তিনি রাজি। কিন্তু মেয়ে যেন মাকে দিদি বলে পরিচয় দেয়। মায়ের টাকাতেই বেঙ্গালুরুতে স্কুলে ভর্তি হন মিখাইল। তাঁর ও শিনার উপরে মায়ের বিভিন্ন অত্যাচার ও শিনা হত্যার দিনের ঘটনাও তুলে ধরেন মিখাইল।

আদালতে ঢোকার পরে ইন্দ্রাণী প্রথমে মিখাইলকে চিনতে পারেননি। মিখাইল আদালতের বাইরে জানান, নিয়মিত শরীরচর্চা ও কড়া ডায়েটের ফলেই তাঁর এই নব কলেবর। জীবনে প্রেম এসেছে। অভিশপ্ত সময়গুলো যতটা সম্ভব ভুলে থাকতে চান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন