ধৃত জঙ্গি বাহাদুর আলি। ছবিটি প্রকাশ করেছে এনআইএ।
জম্মু-কাশ্মীরে ধৃত লস্কর জঙ্গির স্বীকারোক্তির ভিডিও প্রকাশ করল জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। বাহাদুর আলি নামে ওই জঙ্গি স্বীকার করেছে, পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর লস্কর-ই-তৈবা তাকে ভারতে ঢোকার নির্দেশ দেয়। বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর থেকে উপত্যকায় পরিস্থিতি যে রকম উত্তপ্ত, তার সুযোগ নিয়ে কাশ্মীরে নাশকতা চালানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল ওই জঙ্গিকে।
গত ২৫ জুন বাহাদুর আলিকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে একে-৪৭, গুলি, গ্রেনেড এবং গ্রেনেড লঞ্চার উদ্ধার হয়। জেরায় এনএইএ-কে বাহাদুর আলি জানিয়েছে, পাকিস্তানে প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর লস্কর-ই-তৈবার তরফ থেকে তাকে জম্মু-কাশ্মীরে ঢোকার নির্দেশ দেওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে মেলামেশা করার এবং উপত্যকায় সমস্যা তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এনআইএ সূত্রে জানানো হয়েছে, বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর পর কাশ্মীর উপত্যকায় যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে লস্কর-ই-তৈবার ভূমিকা কতটা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাহাদুর আলির স্বীকারোক্তিতে আরও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে, উপত্যকায় অশান্তির আগুন বাড়িয়ে তোলার জন্য লস্কর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে।
গ্রেফতার হওয়ার আগে পর্যন্ত লস্করের অপারেশন রুমের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলছিল বাহাদুর আলি। ভারতে বড়সড় নাশকতা চালানোর জন্য তার কাছে চূড়ান্ত নির্দেশও চলে এসেছিল। কিন্তু নাশকতা চালানোর আগেই বাহাদুর আলি ধরা পড়ে যায়। এনআইএ প্রধান সঞ্জীব কুমার বুধবার জানিয়েছেন, বাহাদুর আলিকে যে ধরনের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, তা থেকে স্পষ্ট, পাকিস্তানের সেনা এবং সমর বিশেষজ্ঞরা এই প্রশিক্ষণে জড়িত ছিলেন। সঞ্জীব কুমারের কথায়, ‘‘বাহাদুর আলিকে বলা হয়েছিল কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে হামলা চালাতে।’’
আরও পড়ুন: দক্ষিণ চিন সাগর নিয়ে ভারতকে নাক গলাতে বারণ করল বেজিং
বাহাদুর আলির স্বীকারোক্তির ভিডিও এনআইএ বুধবার প্রকাশ্যে এনেছে। কিন্তু তার আগে থেকেই সরকারি স্তরে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছিল। মঙ্গলবার পাক হাইকমিশনার আবদুল বাসিতকে তলব করে বিদেশ মন্ত্রক। পাকিস্তানের ভূখণ্ডকে যে এখনও ভারত বিরোধী সন্ত্রাসের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে এবং সে দেশ থেকে ভারতে জঙ্গি অনুপ্রবেশও যে অব্যহত, বাহাদুর আলির স্বীকারোক্তির ভিডিও তুলে ধরে তা আরও এক বার দেখিয়ে দেওয়া হয় পাক রাষ্ট্রদূতকে। সন্ত্রাসে মদত এবং অনুপ্রবেশের তীব্র প্রতিবাদও জানানো হয়েছে ভারতের তরফে।